প্রকৃতি সংরক্ষণে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার পিছনে ভারত, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের

সর্বশেষ অবস্থানে রয়েছে কিরিবাতি। প্রকৃতি রক্ষায় মোদি সরকারের উদাসীনতা ও প্রচারসর্বস্ব ফাঁকিবাজির পরিণতিতেই পিছিয়ে গিয়েছে ভারত।

Must read

প্রতিবেদন: প্রচারের ঢক্কানিনাদ বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি জঙ্গল সাফারি করছেন, অথচ বন্যপ্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষায় তাঁর সরকার যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ তা দেখিয়ে দিল আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উঠে আসা লজ্জার তথ্য। দেখা যাচ্ছে, প্রকৃতি সংরক্ষণে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার পেছনে ভারত। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৭৬। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে লুক্সেমবার্গ। এরপর যথাক্রমে এস্তোনিয়া ও ডেনমার্ক। সর্বশেষ অবস্থানে রয়েছে কিরিবাতি। প্রকৃতি রক্ষায় মোদি সরকারের উদাসীনতা ও প্রচারসর্বস্ব ফাঁকিবাজির পরিণতিতেই পিছিয়ে গিয়েছে ভারত।

আরও পড়ুন-দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে গুগলের হার, ২৪০ কোটি পাউন্ড জরিমানা

নিজের দেশে প্রকৃতি রক্ষায় রাষ্ট্রগুলি কতটুকু ভূমিকা রাখছে তার ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। এনভায়রনমেন্টাল পারফরমেন্স ইনডেক্স (ইপিআই) প্রাথমিকভাবে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা তৈরি। মূলত প্রকৃতি রক্ষায় গত এক যুগে দেশগুলির নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ মূল্যায়নের ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস টু দ্য কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি’ (সিবিডি কপ ১৬) উপলক্ষে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। কলম্বিয়ার ক্যালি শহরে ২১ অক্টোবর সম্মেলনটি শুরু হয়েছে, যা ১ নভেম্বর শেষ হবে। ২০২৪ সালের এই তালিকায় ভারতের চেয়ে তিন ধাপ উপরে রয়েছে বাংলাদেশ। তাদের অবস্থান ১৭৩ নম্বর স্থানে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে অন্য দেশগুলি। এগিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে নেপাল আছে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে (৬০তম)। এরপর শ্রীলঙ্কা আছে ৯০তম, মালদ্বীপ ১৫০, পাকিস্তান ১৫১ ও আফগানিস্তান ১৬০ তম অবস্থানে। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সূচকটি তৈরিতে পাঁচটি নির্দেশক ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলি হল প্রকৃতি সংরক্ষণে রাষ্ট্রের ভূমি ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব, সক্ষমতা, সুশাসন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সূচক নির্ধারণে ব্যবহার করা হয়েছে একেকটি রাষ্ট্রের সরকারি উৎসের তথ্য। ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি হল ভূমি ও সাগরের সংরক্ষিত এলাকার পরিমাণ, সংরক্ষিত এলাকাগুলির একটির সঙ্গে অন্যটি কতটা যুক্ত, শহর, শিল্প ও কৃষিজমির পরিমাণ কত দ্রুত বাড়ছে এবং কৃষিতে কী পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের ক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হল দেশের মোট বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যে কত অংশ লাল তালিকাভুক্ত বা নানাভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তার তথ্য। তালিকা তৈরিতে এগুলির সংখ্যা ও পরিমাণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আছে সংরক্ষিত এলাকায় কত প্রাণীর বসবাস ও আগ্রাসী প্রজাতির প্রাণীর উপস্থিতির বিষয়টি। সূচকের অন্য নির্দেশকগুলির মধ্যে আছে, একটি দেশে জিডিপির (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) কত শতাংশ প্রকৃতি সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয় তার তথ্য, প্রকৃতি সংরক্ষণে কটি সংস্থা ও আইন আছে, আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সনদের শর্তগুলি কতটা বাস্তবায়ন করা হয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, সরকারের কার্যক্ষমতা এবং গণতান্ত্রিক অবস্থার বিশ্লেষণ।

Latest article