জোহানেসবার্গ, ২৫ নভেম্বর : শেষপর্যন্ত ৩-১। কিন্তু এত সহজে ব্যাপারটা হল যে সেটাই আশ্চর্যের। ওয়ান্ডারার্সে ভারত জিতল ১৩৫ রানে। শুক্রবারই ছিল শেষ ম্যাচ। পরিস্থিতি বলছে আরও ম্যাচ থাকলে ব্যবধান বাড়ত। এক ম্যাচ বাদে আফ্রিকানদের আসলে খুঁজেই পাওয়া যায়নি!
আরও পড়ুন-অলিম্পিকে পদক আনবে জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েরা
২৮৪ টার্গেট ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। ম্যাচটা তখনই তারা হেরে গিয়েছিল। শুধু দেখার ছিল ক্লাসেন আর মিলার কী করেন। বছরভর টি-২০ লিগ খেলে বেড়ানো স্পেশালিস্ট। অর্শদীপ শুরুতে তিন উইকেট নিয়ে যে ধাক্কা দিলেন, ক্লাসেন (০) তার মধ্যে ছিলেন। পরে মিলার গেলেন (৩৬) বরুণের হাতে। তিনি আউট হওয়ার পর ম্যাচের আর কিছু ছিল না। তবে কয়েকটা জরুরি তথ্য। বরুণ চক্রবর্তী ২ উইকেট নিলেও তাঁকে ম্যাচ জেতাতে হয়নি। ওটা অর্শদীপ করলেন ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে। তার আগে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন সঞ্জু আর তিলক। জোড়া সেঞ্চুরিতে ওরাই নায়ক এই ম্যাচে।
ওয়ান্ডারার্সে সুখ-দুঃখের অনেক স্মৃতি ভারতের। তাতে নতুন এক অধ্যায় যোগ করলেন সঞ্জু স্যামসন ও তিলক ভার্মা। দু’জনে রেকর্ডের নতুন একটা খাতাই খুলে ফেললেন শুক্রবার। এই প্রথম টি-২০ ম্যাচে এক ইনিংসে দুটো সেঞ্চুরি হল। সঞ্জু ৫৬ বলে ১০৯ নট আউট থেকে গেলেন। আরও আক্রমণাত্মক তিলক। তাঁর ১২০ নট আউটে খরচ হল ৪৭ বল। এই বছর এই ফরম্যাটে ২৬টি ম্যাচ খেলে ভারত জিতেছে ২৪টি ম্যাচে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
টি-২০ বিশ্বকাপ জেতার পর ছোট ফরম্যাট থেকে সরে গিয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও রবীন্দ্র জাদেজা। যাদের রেখে গেলেন, তাঁরা সবাই তারকাদের জুতোয় ফিট হয়ে যাচ্ছেন। সঞ্জু তাও যাতায়াতের মধ্যে ছিলেন। এই দলে, তো এই বাইরে। কিন্তু নতুন এসে তিলক এইবেলায় তিন নম্বরে সিমেন্ট হয়ে গেলেন। আরও একটা সেঞ্চুরি মুম্বই ব্যাটারের। পরপর দুটো। রোহিত ভক্ত তিলক সূর্যর কাছে তিন নম্বর জায়গাটা চেয়ে নিয়েছিলেন। সূর্য আর নিজের জায়গা ফেরত পাবেন বলে মনে হয় না!
সূর্য আগে ব্যাট নিলেন একটাই অঙ্ক মাথায় রেখে। বোর্ডে বড় রান তোল। বিপক্ষের উপর বিশ মনি বোঝা চাপিয়ে দাও। এতে তিনি পুরোপুরি সফল। এতটাই যে, চারে আসবেন বলে প্যাড পরে বসেছিলেন। কিন্তু সঞ্জু আর তিলক তাঁকে সেই সুযোগ দেননি। ৯৩ বলে ২১০ রানের পার্টনারশিপ এই দু’জনের। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি যে, সঞ্জু আর তিলক মিলে ১৯টি ছক্কা মেরেছেন। ভারতের ইনিংসে মোট ছক্কা দাঁড়াল ২৩। এটাও নতুন রেকর্ড।
আরও পড়ুন-মধ্যরাতে বিধ্বংসী আগুন নিমতলা ঘাট সংলগ্ন এক কাঠগোলায়
সিরিজে এগিয়ে থেকে এই ম্যাচে নেমেছিল ভারত। ফলে জেতার দায় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু বিনা উইকেটে ৭৩ রান রান তুলে ফেলার পর এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, লম্বা স্কোর হচ্ছে। সেটাই হল। ২৮৩/১ তুলে ফেলে ভারত। পরিস্থিতি এমন হল যে, মার্করামকে সাত বোলার ব্যবহার করতে হল। কেউ সুবিধা করতে পারেননি। নতুন মুখ লুথো সিপামলা অভিষেককে (৩৬) ফেরানোর পর থেকে আর কোনও সাফল্য নেই। বাকিটা তাঁদের জন্য হরর ফিল্ম। শেষ কবে এমন গণ পিটুনি খেয়েছেন মার্কো জেনসেন, কেশব মহারাজরা, সেটা শুধু খুঁজে দেখতে হবে।