ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্ল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরেছেন কিছুদিন আগেই। তাঁর সেই অভিযানের রেশ এখনও কাটেনি। এর কিছুদিনের মধ্যেই ভারত ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে কৃত্রিম উপগ্রহ ‘নিসার’ (Nisar)। বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ভারত ও আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই উপগ্রহটি। উপগ্রহটির নাম ঠিক করা হয়েছে ‘নাসা-ইসরো সিনথেটিক অ্যাপারচার রেডার’ (নিসার)। ‘নিসার’ কে জিএসএলভি-এমকে২ রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে ছোঁড়া হবে। প্রায় ২,৮০০ কেজি ওজনের এই উপগ্রহকে ৭৪৭ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। পৃথিবী থেকে ৭৪৩ কিমি দূরে সান-সিনক্রোনাস অরবিটে (এসএসও) ৯৮.৪০ ডিগ্রি কোণে ‘নিসার’কে প্রতিস্থাপন করবে GSLV-F16 রকেট ৷ এই কক্ষপথকে হেলিওসিনক্রোনাস অরবিটও বলা হয় ৷ নিসার সেখানে পৌঁছে পৃথিবীর ছবি তুলে পাঠাবে। জানা যায়, ১.৫ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) খরচে তৈরি হয়েছে ‘নিসার’।
আরও পড়ুন-প্রধান শিক্ষকের লালসার শিকার নাবালিকা! ৩ মাসের গর্ভবতী নবম শ্রেণির ছাত্রী
‘নিসার’ বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যা দ্বৈত ফ্রিকোয়েন্সির রেডার (এল-ব্যান্ড এবং এস-ব্যান্ড) ব্যবহার করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র, হিমবাহ, বনজঙ্গল, ভূকম্পন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ করতে চলেছে। ভূপৃষ্ঠে কয়েক মিলিমিটারের মধ্যে পরিবর্তনও ধরা পড়বে এই কৃত্রিম উপগ্রহে। বছরের যে কোনও মরসুমে দিন-রাত নির্বিশেষে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর ছবি তুলতে পারবে নিসার। এর ফলে বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ তো আছেই এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নিসার’ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন-আসল ফুটেজ সামনে আনছে না দিল্লি পুলিশ: নৃশংসতা, মিথ্যাচারের মুখোশ খুলল পরিযায়ী পরিবার
‘নিসার’ ভারত এবং আমেরিকার পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৪ সালে ‘নিসার’ মিশন নিয়ে ভারত-আমেরিকার মধ্যে চুক্তি হয়েছিল ৷ এক দশক ধরে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে সফ্টওয়্যার ও হার্ডওয়্যার আদানপ্রদান করেছে। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো এই মর্মে জানিয়েছে, এর আগে ইসরো মিশন রিসোর্সস্যাট বা আরআইএসএটি করেছে ৷ কিন্তু সেই উপগ্রহের কাজ ভারতেই সীমাবদ্ধ ছিল ৷ কিন্তু নিসার সারা পৃথিবীতে পর্যবেক্ষণ চালাবে ৷ সিন্থেটিক অ্যাপারেচার রেডার (এসএআর) তৈরিতে এল ব্য়ান্ড রেডার দিয়েছে নাসা এবং এস-ব্যান্ড দিয়েছে ইসরো ৷ দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থার দৌলতে নিসার-এ দু’ধরনের তরঙ্গের রেডার (ডুয়াল ফ্রিকোয়েন্সি) রাখা সম্ভব হয়েছে ৷ অতএব নিসার বিপুল পরিমাণে ডেটা সংগ্রহ করতে পারবে৷ তবে উৎক্ষেপণের পরেই কাজ শুরু করতে পারবে না নিসার। উৎক্ষেপণের পর সেটআপ করতে ৯০ দিন সময় লাগবে। তারপরই কাজ শুরু করবে।