ছোট অসুস্থতা তাঁর সঙ্গী। প্রায়ই পড়ে থাকেন বিছানায়। কিন্তু শয্যাশায়ী হয়েও ডাক্তারদের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বুঁদ হয়ে থাকেন সাহিত্যচর্চায়। পড়ে ফেলেন ইংরেজি সাহিত্য। টেনিসন, শেলি, ব্রাউনিংয়ের কবিতা তাঁর মুখে মুখে। ১১ বছর বয়সেই আত্মস্থ করেন বাংলা, উর্দু, ইংলিশ, তেলুগু, পার্শি। ১২ বছর বয়সে মাধ্যমিকে প্রথম শ্রেণিতে অভাবনীয় সাফল্যে চমকে দেন সকলকে— তিনি বিস্ময় বালিকা সরোজিনী চট্টোপাধ্যায় পরবর্তীতে সরোজিনী নাইডু। তবে নাইডু রূপে পরিচিত হতে তখনও বেশ বাকি। কেননা অব্রাহ্মণ ডাঃ গোবিন্দ্রাজালুর সঙ্গে এই বাঙালি বিদুষী মহিলা পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন আরও সাত বছর পর।
সরোজিনী নাইডু বলতে ভারতীয়দের চোখে ভেসে ওঠে স্বাধীনতা আন্দোলনের জাতীয়তাবাদী নেত্রীর মুখ, যিনি ছিলেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম ভারতীয় মহিলা সভাপতি। স্বাধীনোত্তর ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল, সংযুক্ত প্রদেশ তথা অধুনা উত্তরপ্রদেশের তিনিই ছিলেন রাজ্যপাল। গোখলের অন্যতম শিষ্যা এবং গান্ধীজির স্নেহধন্যা সরোজিনী নাইডুর রাজনৈতিক পরিচয় জনসমক্ষে এভাবেই উদ্ভাসিত। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছটায় চাপা পড়ে গেছে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সরোজনীর স্বকীয়তার নানান রূপ।
আরও পড়ুন-তৃণমূলের আন্দোলনে চা-সুন্দরীর এনওসি দিল চা-বাগান কর্তৃপক্ষ
শৈশবে
সরোজিনী জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৭৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদ শহরে। তাঁদের আদি বাড়ি ছিল অবিভক্ত বাংলার ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে। তাঁর পিতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন দার্শনিক বিজ্ঞানী ও সমাজ সচেতন মানুষ। পিতা সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে সরোজিনী বলেছেন— আমার পিতা ছিলেন স্বপ্নদর্শী, মহান পণ্ডিত ও তপস্বী। আমার মনে হয় সমগ্র ভারতে তাঁর অধিক জ্ঞানী ব্যক্তির সংখ্যা খুব বেশি ছিলেন না। ওঁর দাড়ি লম্বা সাদা এবং চেহারা হোমারের মতো, তিনি যখন হাসতেন তখন মনে হত ছাদ ভেঙে পড়বে। তিনি অন্যদের সাহায্যদান এবং অপরসায়ন এই দুটি কাজে সমস্ত সম্পত্তি নষ্ট করেছিলেন। পিতার প্রতি সরোজিনীর এই অভিব্যক্তি থেকেই স্পষ্ট তাঁর জীবনের অন্যতম প্রেরণা বা সহায়ক শক্তি হিসেবে ছিলেন তাঁর পিতা। মাতা বরদাসুন্দরী ছিলেন পরিবারের প্রতি সমর্পিতা এক নিষ্ঠাপরায়ণা বাঙালি নারী। আট সন্তান-সন্ততির এই জননী যিনি কবিতা লেখেন, আবার বাড়ির বৈঠকখানায় দেশ-কাল সমাজ-ভাবনায় তাড়িত সুধীজনদের আপ্যায়ন করার গুরুদায়িত্বও সুচারু রূপে সম্পন্ন করেন। এরকম এক অভিজাত ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের মধ্যে সরোজিনীর বেড়ে ওঠা।
আরও পড়ুন-১০০ দিনের কাজ বকেয়া নিয়ে নিদের্শিকা পঞ্চায়েত দফতরের, স্বচ্ছতা বজায় রাখতে জারি সতর্কতা
কাব্য কবিতায়
সরোজিনীর পিতা চেয়েছিলেন তাঁর প্রথম কন্যা হয়ে উঠুক গণিতবিদ, কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পিতা-মাতার যে কাব্যগুণ পেয়েছিলেন সেই নেশা পেয়ে বসে ছোটবেলা থেকেই। একবার পিতার দেওয়া একটি বীজগণিতের প্রশ্ন সমাধান না করতে পেরে বসে না থেকে লিখে ফেলেন এক বৃহৎ কবিতা। এভাবেই কাব্যনেশায় ক্রমশ ভরে উঠে তাঁর কবিতার খাতা। তাঁর প্রথম দিকের বেশ কিছু কবিতা কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত। যার মধ্যে আছে ‘ট্রাভেলার্স সং’। ১৩ বছর বয়সে লেখেন তেরশো পঙক্তির La lady of the Lake নামে দীর্ঘ কবিতা। কবিতা থেকে ক্রমশ নাটক, কাব্যনাট্য। এমনই এক নাটক ‘মেহের মুনির’ যা ফার্সি ভাষায় রচিত। নাটকের কিছু ইংরেজি প্রতিলিপি নাট্যপ্রেমী নিজামের কাছে চলে আসে। নিজামের সঙ্গে অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের যোগাযোগ থাকায় আগে থেকেই সরোজনীর প্রতিভা ও কাব্যপ্রেমের কথা জানতেন। তিনি এই নাটকে মুগ্ধ হয়ে ছাত্রী সরোজিনীকে উৎসাহ দিতে তাঁকে বিদেশে লেখাপড়া করার জন্য বার্ষিক ৩০০ পাউন্ডের বৃত্তি ও যাতায়াত খরচের ব্যবস্থা করেন।
১৬ বছরের সরোজনীর এই সময় সমুদ্রযাত্রায় সঙ্গী ছিলেন অ্যানি বেসান্ত। ইংল্যান্ডে প্রাথমিক সাহচর্য মিলেছিল কুমারী মেনিং-এর কাছে যিনি ছিলেন ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে স্নেহশীলা আশ্রয়দাত্রী। মেনিং-এর বাড়িতে বসত চাঁদের হাট। সাহিত্যিক এডমন্ড গস থেকে শুরু করে উইলিয়াম আর্চার-সহ বিভিন্ন বিদ্বজ্জন আসতেন। পরিচিত হন আর্থার সাইমনসের সঙ্গে। প্রথমে লন্ডনের কিংস কলেজ ও পরে কেমব্রিজ ও গর্টন কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯০৫ সালে প্রথম কবিতার বই The golden Threshold লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। বিক্রিও হয় প্রচুর।
বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন আর্থার সাইমন। সাইমন লিখেছেন— তাঁর শরীর কখনও রোগ এবং হৃদয় সংঘর্ষ মুক্ত থাকেনি কিন্তু শরীরের দুর্বলতা ও হৃদয়ের মধ্যকার সংঘর্ষ তাঁর চিন্তার একাগ্রতাকে ভঙ্গ করতে পারেনি। তবে এডমন্ড গস কঠোর সমালোচন করতে ছাড়েননি, পাশাপাশি এও তিনি বলেন— She is in all things and to the fullest extent autochthonous the springs from the very soul of India. তবে এই সমালোচনা ঋদ্ধ করেছিল সরোজিনীকে। সরোজিনী এক চিঠিতে লিখেছিলেন— আমার লেখার যত উন্নতি হতে থাকবে আপনিও আগের থেকে বেশি কঠোর ওর নির্মম হতে থাকবেন। এভাবেই নিজের লেখাকে আরও পরিশীলিত করার জন্য সমালোচনা মাথা পেতে নিতেন।
তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ The bird of Times আর তৃতীয় কবিতার বই— The Broken Wing. (১৯১৭)। The Broken Wing প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ লেখেন— ব্রোকেন উইং-এ আপনার কবিতা জুলাই মাসের সন্ধ্যার মেঘের ন্যায় সূর্যাস্তের আবছা লালিমায় ঝলকিয়ে ওঠা অশ্রু ও অগ্নি দ্বারা তৈরি বলে মনে হয়।
অবশ্য এখানেই থেমে যায় তাঁর কাব্যচর্চার গতি, কেননা পরাধীন ভারতবর্ষের শোষিত জনগণের মুক্তির জন্য তিনি যোগদান করলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে। যদিও বহু পরে The Sceptred Flute, The Feather of the Dawn কবিতা সংগ্রহ হিসেবে প্রকাশিত হয় কিন্তু এ-গুলি তাঁর কর্মময় জীবনে Dramatic Relief হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয়েছে বলা যায়।
সাহসী প্রেমের ডানায়
লন্ডনে থাকাকালীনই তাঁর সঙ্গে পরিচিত হয় গোবিন্দাজালু নাইডুর। যিনি ডাক্তারি পড়তে এসেছিলেন ইংল্যান্ডে। ১৮৯৮ সালে দেশে ফেরেন আর সেই বছরেই গোবিন্দ্রাজালুর সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই বিবাহও ছিল অগ্রবর্তীতার নিদর্শন। কেশবচন্দ্র সেনের ব্রাহ্মবিবাহ বিল হেতু ভারতীয়দের মধ্যে জাতিগত বন্ধন ছিন্ন করে নাগরিক বিবাহের যাত্রাপথ, সেই পথের একেবারে গোড়ার পথিক সরোজনী- গোবিন্দ্রাজালু । এই বিবাহে বহু মুসলিম মহিলাদের অভ্যর্থনার আয়োজন হয়েছিল।
আরও পড়ুন-পুরসভার উদ্যোগে অত্যাধুনিক ব্লাড ব্যাঙ্ক হাওড়ায়, ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম
রাজনীতিতে
রাজনীতিতে আসার পিছনে অন্তরাত্মার টান তো ছিলই কিন্তু তাঁকে আনার সর্বাপেক্ষা কৃতিত্ব ছিল গোপাল কৃষ্ণ গোখলের। তাঁকে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতিতে আসার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছিলেন গোখলে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি আগ্রহী হয়ে পড়েন। গোখলের এই নিরন্তর প্রচেষ্টার অন্যতম কারণ সরোজনীর বাগ্মিতা। সমৃদ্ধ ভাষা, দ্রুত প্রবাহ বুদ্ধির চাতুর্য এবং হৃদয়ানুভূতির সহজ সরল প্রকাশে তাঁর বক্তৃতা হয়ে উঠত জনতার মনের কথা। তাঁর বক্তৃতার মধ্য দিয়েও শ্রোতাদের চেতনার মান বৃদ্ধি পেত। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারীমুখ হয়ে উঠলেন তিনি। এই সরোজিনীকে বুলবুল হিন্দ বা ‘ভারত কোকিলা’ বলে ডাকা হত। তাঁর ভাই হারিন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মনে করতেন তাঁর এই উপাধি কবিতার জন্য নয়, এটা তাঁর সুললিত ভাষণের জন্যই দেওয়া। কেননা, সেই ভাষণে থাকত সুললিত সংগীতের ধারা।
সাহিত্য থেকে চলে এলেন সরাসরি রাজনীতির অঙ্গনে। রাজনীতিতে তাঁর এই যোগদান ভারত একজন আর্ন্তজাতিক লেখক থেকে বঞ্চিত হল কিনা তা গবেষণার বিষয়। কিন্তু রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও তাঁর স্বকীয়তা লক্ষণীয়, যা আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক। রাজনীতিতে আসার আগে নারীশিক্ষা এবং নারী সচেতনতার পক্ষে তিনি ছিলেন সচেষ্ট। হিন্দু-মুসলিম একতা এবং নারীশক্তি তথা স্ত্রীশিক্ষার উন্মেষ ঘটানো ছিল তাঁর রাজনীতির আধার। সালটা ১৯০৬। ভারতীয় সামাজিক সম্মেলনে হিন্দুর জায়গায় ভারতীয় শব্দের প্রয়োগ করলেন। সম্মেলনে নাগরিক অস্তিত্ববোধের জন্য জাতি-ধর্ম বিশ্বাসের পরিপন্থী ছিলেন।
তবে ধর্ম বিশ্বাসের স্বতন্ত্রতা কিংবা অন্য ধর্মের অস্তিত্বকে উপেক্ষা করেননি।
বহিনের সমালোচনা মাথা পেতে নিতেন মুসলিম সমাজ। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি মানবিক চিন্তা ও সংবেদনার অভাব দেখেছিলেন তিনি ধর্মে। এরপর যতই দিন গেছে ততই তিনি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলমানের একতা স্থাপনের জন্য সচেষ্ট হয়েছেন। ১৯১২ সালের মুসলিম লিগ কর্তৃক এক সভায় সরোজিনীর বক্তব্য মৌলবাদী লোকেদেরও মন ছুঁয়ে গিয়েছিল। ১৯১৬ সালের লখনউ শহরে হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির সমন্বয়ের ভাষণে তাঁর বক্তব্য স্মরণ করা যাক— ‘আমি মাত্র একটি কারণে নিজেকে এখানে আপনাদের সামনে ভাষণ দেওয়ার অধিকারী মনে করি এবং সেই কারণ হল আমি বহু বছর ধরে নতুন মুসলিম প্রজন্মের কাছে এক বিশ্বাসী বন্ধু রয়েছি এবং মুসলিম মহিলাদের অধিকারের সমর্থন করে আসছি এবং আমি তাদের ওই অধিকারের জন্য তাদের পুরুষদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি যা ইসলাম তো অনেক আগেই প্রদান করেছেন। কিন্তু আপনারা ওই অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত রেখেছেন।’ ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন, শুধু একটাই কথা মুসলিম নেতারা সরোজিনী ছাড়া সম্ভবত অন্য কোনও হিন্দুর মুখ থেকে এই ধরনের ভাষা শোনার জন্য প্রস্তুত হতেন না, কারণ, সরোজনী তাঁদের কাছে ছিলেন প্রকৃতই ভগিনী। সেই অর্থে সরোজিনী প্রকৃত ভারতীয় ছিলেন, হিন্দু-মুসলিম একতার জন্য তাঁকে কাজ করা শিখতে হয়নি, তাঁর জীবনের মধ্যেই চালু ছিল সেই শিক্ষা। স্বয়ং গান্ধীর মুখ থেকে ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় তিনি লেখেন— ‘হিন্দু মুসলমান একতা বাড়াতে আমি চেষ্টা করতে পারি তবে নানা দিক দিয়ে বিচার করলে সরোজনী এ কাজ আমার থেকে বেশি ভালো করতে পারবে।’
নারীমুক্তি এবং নারীশিক্ষায় তাঁর অসাধারণ বাণী— ‘ভারতের আত্মা তখনই মুক্ত হতে পারবে যখন নারী মুক্ত হবে।
আরও পড়ুন-মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষার হলে, বাতিল তিন পরীক্ষার্থী
মহিলা মানে মানুষ
মানুষ শব্দের মধ্যে মহিলাদের অর্ন্তভুক্তি ছিল তাঁর নারীভাবনা। ১৯১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর মাদ্রাজে তাঁর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের এক মহিলা প্রতিনিধি দল চেমস মন্টেগুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিঙ্গভিত্তিক যোগ্যতা এবং ভোটাধিকারের আবেদন নিয়ে সোচ্চার হন। ইংরেজদের দেওয়া কাইজার এ হিন্দ ত্যাগ করেছিলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে।
নারীমুক্তির ব্যাপারে ১৯২৬ সালের মহিলাদের বহু সংগঠনকে নিখিল ভারত মহিলা সম্মেলনে যুক্ত করেন। এই সম্মেলন নিজেদের রাজনীতি থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। নারীমুক্তি শিশু কল্যাণ শিক্ষা জাতির অবিচ্ছেদ অঙ্গ— এই ভাবনার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে এই সম্মেলন। ১৯২৮ সালের হনলুলুতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির মহিলা সম্মেলনে নিখিল ভারত মহিলা সম্মেলনের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর আমেরিকা যাত্রা প্রাচ্যের নারীবাদী সরোজিনীর উজ্জ্বল বক্তৃতা নারী চেতনার মাইলফলক হিসেব চিহ্নিত। স্মরণীয়, সরোজিনীর নারীবাদিতা নিছক নারীবাদীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের দাবিকে তিনি হীনতার স্বীকার ভাবতেন। তাঁর কাছে নারী মানে এক পরিপূর্ণ মানুষ।
শ্বাসজনিত এবং হার্টের সমস্যা নিয়ে ভুগেছেন আজন্মকাল। সেই হৃদরোগেই মৃত্যু লখনউয়ের রাজভবনে। কাব্য কবিতার জগতে খ্যাতির চূড়ায় উঠেও ছেড়েছেন সৌভাগ্য জয়ের পথ। কেননা, মানুষের দুঃখ কষ্ট এবং পরাধীনতার গ্লানি তিনি এড়িয়ে যেতে পারেননি। ১৩ ফ্রেব্রুয়ারি তাঁর জন্মদিন ভারতীয় নারীদিবস হিসেবে পালিত। কিন্তু হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতি আজও অধরা। সরোজিনীচর্চা আজ তাই খুব জরুরি বিষয়।
তথ্যসূত্র : ১. সরোজিনী নাইডু— তারা আলী বেগ।
২. সরোজিনী নাইডু— পদ্মিণী সেনগুপ্ত।