প্রতিবেদন : সংশোধনাগার দফতরের কাজকর্মকে আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করে তুলতে রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে কর্মরত প্রায় ৪ হাজার কর্মীর সার্ভিস রেকর্ড এবার ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষণ করা হবে। বহু বছর ধরে পুরনো কাগুজে নথির উপর নির্ভরশীল এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে রাজ্যের কারা দফতর নিরাপদ ও আধুনিক ডিজিটাল নথি সংরক্ষণের এই উদ্যোগ শুরু করেছে। রাজ্যের কেন্দ্রীয়, জেলা, বিশেষ ও সাবসিডিয়ারি সংশোধনাগার-সহ দফতরের বিভিন্ন কার্যালয়ে মোট প্রায় ২০ জন চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিযুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা কর্মীদের ব্যক্তিগত ফাইল গুছিয়ে আনাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। নির্দেশ অনুযায়ী, সমস্ত ডিজিটালাইজেশনের কাজ সংশোধনাগারের দফতরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কোনও নথি বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন-বিজেপির প্ররোচনায় নাটক রাজ্যপালের, এবার থানায় অভিযোগ করবেন কল্যাণ
সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে, প্রয়োজনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কর্মী পাঠাতে হবে। এতদিন যেসব ম্যানুয়াল রেজিস্টারের উপর কাজ চলত, সেই ব্যবস্থা বদলে গেলে নিত্যদিনের কার্যক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনই কাজ আরও গুছিয়ে করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, ফাইলগুলো আপডেটেড, নির্ভরযোগ্য ও সঠিক থাকা জরুরি। পদোন্নতি, বদলি, বেতন সংশোধন— সব ক্ষেত্রেই নথির অসঙ্গতি সমস্যা তৈরি করে। এই পদক্ষেপ কর্মী-সম্পর্কিত নথি গুছিয়ে আনার পাশাপাশি সংশোধনাগারগুলির দৈনন্দিন কার্যক্রমেও সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। স্পষ্ট নথি থাকলে হঠাৎ করে নিরাপত্তাকর্মী, ওয়েলফেয়ার অফিসার বা এসকর্ট টিমের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমবে। এতে আদালতে হাজিরা, পুনর্বাসন শ্রেণি বা চিকিৎসা পরিষেবা— কোনও ক্ষেত্রেই সংকটের মুখে পড়তে হবে না। দফতরের মতে, প্রশাসনিক দেরি কমলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে এবং পরিষেবা আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। এক প্রবীণ আধিকারিকের কথায়, নথি হারিয়ে যাওয়া বা ফাইলে পরস্পরবিরোধী তথ্য মেলাতে সময় নষ্ট হওয়া— এগুলো খুবই সাধারণ সমস্যা। সব কিছু ডিজিটাল হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক দ্রুত ও নির্বিঘ্ন হবে।
সংশোধনাগার দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দফতরের তত্ত্বাবধানে নথির গোপনীয়তা রক্ষা করা সংস্থাগুলির দায়িত্ব। কোনও নথির প্রতিলিপি রাখা বা কপি করা যাবে না। এই নিয়ম ভাঙলে সংশ্লিষ্ট ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে সঙ্গে সঙ্গে বদল করতে হবে। ছয় মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিকভাবে শুরু হওয়া এই প্রকল্প প্রয়োজনে বাড়ানো হতে পারে। সংস্থাগুলিকে পিএফ, ইএসআই, ন্যূনতম মজুরি, বিমা-সহ সমস্ত বিধিবদ্ধ নিয়ম মানতেই হবে। মাসিক বিল মেটানো হবে কেবলমাত্র তখনই, যখন নিশ্চিত হবে নিযুক্ত কর্মীদের মজুরি এবং অন্যান্য বকেয়া পুরোপুরি পরিশোধ করা হয়েছে।

