সংসদে একের পর এক বাংলার মনীষীদের অপমানের মধ্যে দিয়ে বিজেপি নিজেদের বাংলাবিরোধী চরিত্রকে অত্যন্ত স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে। বৃহস্পতিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরের সভা থেকে বিজেপির সেই বাংলা বিরোধী স্বরূপকে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বারবার এভাবে বাংলার মনীষীদের অপমানে বিজেপিকে ‘দু কান কাটা’ বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন-হরিয়ানার ডাক্তারদের ধর্মঘটের চতুর্থ দিন, অচলাবস্থার অবসানের জন্য হাইকোর্টে আবেদন
সম্প্রতি বাংলায় ধর্মীয় জিগির তুলে ভেদাভেদের রাজনীতি শুরু করেছে বিজেপি। সেখানেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বাংলার মনীষীদের প্রসঙ্গে টেনে আনেন। তিনি তুলে ধরেন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কোনওদিন বলেনি হিন্দু-মুসলমানে ভাগাভাগি করো। স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি, মাতঙ্গিনী হাজরা বলেননি। তাহলে আপনারা কে এদেশের? যাদের না আছে মাথা, একেকজন একেক রকম বলে চলেছে।
আরও পড়ুন-তেলেঙ্গানার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে খুন প্রেমিকার পরিবারের
আদতে বাংলার এই মনীষীদের নিয়ে প্রকাশ্যে অনেক জানি – ভাব প্রকাশ করলেও বিজেপির নেতারা যে আদতে কিছুই জানেন না, তা প্রমাণিত হয়েছে তাঁদের বক্তব্যেই। মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক সেই উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি জানান, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়, যিনি বন্দেমাতরম লিখলেন, তাঁকে বলছে ‘বঙ্কিমদা’। যেন ওনা সঙ্গে বসে চা খাচ্ছেন। মাস্টারদা সূর্য সেন যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের গর্ব, তাঁকে বলছে মাস্টার। একজন মানুষ যিনি ইতিহাসে চির স্বীকৃত, তাঁকে যে সম্মান দিয়ে বলতে হয়, সব ভুলে গেছেন? রাজ্যসভায় বিজ্ঞপ্তি করে বলল, ‘জয়হিন্দ’, ‘বন্দেমাতরম’ বলা যাবে না। আমরা বললাম বলতে তুমি বাধ্য। আমাদের চাপের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য করল। বলছে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দেশের নেতা নয়। গান্ধীজিকে তাঁরা মানেন না। আজকে বিজেপির নেতারা বলছে ক্ষুদিরাম বোসকে সন্ত্রাসবাদী। রাজা রামমোহন রায়কে বলছে ব্রিটিশদের দালাল। বিদ্যাসাগর যিনি আমাদের বর্ণপরিচয় দিয়েছিলেন, বিধবা বিবাহ প্রবর্তন করেছিলেন তাঁর মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর মাতঙ্গিনী হাজরাকে কালকে একজন বললেন উনি তো মুসলিম মহিলা।
আরও পড়ুন-প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও যৌনতায় নাবালিকার সম্মতি গ্রাহ্য নয়
বিজেপি নেতাদের এহেন অজ্ঞতায় বিজেপিকে দু কান কাটা কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় দাবি করেন, আজকে আপনারা বাংলার মনীষীদের অপমান করছেন, অসম্মান করছেন। লজ্জা করে না? যদি কারো দুটো কান থাকে, তাহলে একটা কান কাটার ভয় থাকে। আর যার দুটো কানই নেই তার কী করে কান কাটার ভয় থাকবে? এদের তো দুটো কানই নেই। এরা কানে শোনা না, চোখেও দেখে না। আর মানুষ কী বলছে তাও শোনে না।

