প্রতিবেদন : আন্তঃমহাদেশীয় কাপে চ্যাম্পিয়ন ভারত (India vs Lebanon)। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়ে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯৯ নম্বরে থাকা লেবাননকে হারিয়ে খেতাব জিতল ইগর স্টিমাচের দল। টুর্নামেন্টে কোনও গোল হজম না করে চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। সুনীল ছেত্রীকে দিয়ে গোল করিয়ে এবং নিজে গোল করে ফাইনালে ভারতের জয়ের নায়ক লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। সুনীল ও ছাংতের গোলে ২-০ গোলে জয় ব্লু টাইগারদের। কেরিয়ারে সুনীলের ৮৭ নম্বর আন্তর্জাতিক গোল। তবে ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ তারকা মিজোরামের উইঙ্গার ছাংতেকে নিয়েই উচ্ছ্বাস ভারতীয় শিবিরে। চার বছর আগে প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় কাপে একটি গোল করেছিলেন। এবার আরও দু’টি গোল ছাংতের। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ভারতীয় ফুটবলের গোল্ডেন বয়। এই জয়ের ফলে র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম একশোয় ঢুকে পড়া নিশ্চিত ভারতের।
প্রথম মিনিট থেকে হাই প্রেসিং ফুটবল খেলে ভারত (India vs Lebanon)। প্রতিআক্রমণে লেবানন বাঁ-প্রান্ত ধরে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করলেও সজাগ থাকে ভারতীয় রক্ষণ। টুর্নামেন্টে ক্লিন শিট রাখার আত্মবিশ্বাস নিয়েই ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন সন্দেশ ঝিঙ্গান, আনোয়ার আলিরা। তাঁদের খেলায় সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে। লেবানন শারীরিকভাবে এগিয়ে থাকার সুবিধা নিতে চাইলেও আগ্রাসী ফুটবলে তার জবাব দিয়েছে ভারতীয়রা। অনিরুদ্ধ থাপা, ছাংতে, আশিক কুরুনিয়নরা পাসিং ফুটবলে গোলমুখ খোলার চেষ্টা করলেও ফাইনাল থার্ডে গিয়ে লেবানন রক্ষণে আটকে যাচ্ছিলেন সুনীল, ছাংতেরা।
তার মধ্যেই কয়েকবার ফাঁকা জায়গা তৈরি করে ভারতীয় রক্ষণে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে লেবানন। অধিনায়ক হাসান মাটুক দলটির হৃৎপিণ্ড। ফরোয়ার্ড হলেও নিচ থেকে আক্রমণে ওঠেন। তাঁর নেতৃত্বে বার দুয়েক ভারতীয় গোলমুখে পৌঁছে যায় লেবানন। কিন্তু জিন ফারান, করিম ডারউইচদের আক্রমণ প্রতিহত করেন সন্দেশরা। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল।
আরও পড়ুন-ভিসা-জটে পাকিস্তান
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফিরে প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল তুলে নেয় ভারত। ৪৬ মিনিটে ছাংতে-সুনীলের যুগলবন্দিতে এগিয়ে যায় ভারত। গোলের মুভ ছিল দুর্দান্ত। ডান দিক থেকে নিখিল পূজারির সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে লেবানন বক্সে ঢুকে পড়েন ছাংতে। মিজো উইঙ্গারের উদ্দেশে নিখিলের শেষ টাচ ছিল দুর্দান্ত ব্যাক হিলে। বক্সের মধ্যে সেই বল ধরে সুনীলকে স্কোয়ার পাস দেন ছাংতে। বল জালে জড়াতে ভুল করেননি ভারত অধিনায়ক। শেষ দিকে রহিম আলি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ব্যবধান আরও বাড়ত।
পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করলেও লেবাননকে কোনও সুযোগ দেয়নি স্টিমাচের ছেলেরা। আক্রমণে আরও তীব্রতা বাড়াতে আশিক ও জিকশন সিংকে তুলে নাওরেম মহেশ ও রোহিতকে নামান স্টিমাচ। সাহালের পরিবর্ত হিসেবে আসেন রহিম আলি। আক্রমণের ঝড় তুলেই ৬৬ মিনিটে গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করে ভারত। প্রথম গোলে সহায়তা করার পর দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি নিজেই করেন ছাংতে। বক্সের উপর সুনীল বল বাড়ান পরিবর্ত হিসেবে নামা মহেশকে। তাঁর বাঁ-পায়ের জোরালো শট লেবানন গোলকিপার প্রতিহত করলে ফিরতি বল থেকে গোল করেন ছাংতে। শেষদিকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন রহিম আলিরা।