প্রতিবেদন : বাংলার চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মিথ্যাচার আর বঞ্চনা— এই হল নরেন্দ্র মোদি সরকারের ইউএসপি (USP)। নির্বাচনে জেতার জন্য একের পর এক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। সময় প্রমাণ করে দিয়েছে, ওইসব প্রতিশ্রুতি আসলে ছিল রাজনৈতিক ভাঁওতা। এরই প্রতিবাদে বিশাল আন্দোলনে নামছে আইএনটিটিইউসি (INTTUC)। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শুক্রবার ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একাধিক শ্রমিক বিরোধী নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। আর্থিক ভাবেও বঞ্চনা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গে চারটি বড় জনসভা হবে, যেখানে আওয়াজ উঠবে, কেন্দ্রীয় সরকার জবাব দাও জবাব চাই। ঋতব্রত (Ritabrata Banerjee) জানান, প্রথম সমাবেশ হবে ২০ অগাস্ট জলপাইগুড়ির চালসার টিয়াবন মাঠে। ২১ অগাস্ট আলিপুরদুয়ারে কালচিনি থানা ময়দানে। ৪ সেপ্টেম্বর হবে মিরিকে এবং ৬ সেপ্টেম্বর হবে নকশালবাড়ি আদিবাসী ময়দানে।
আরও পড়ুন: পেগাসাস কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
মূলত ৫টি বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে উত্তরবঙ্গে। এক, কেন্দ্রীয় সরকার চা-শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের বদলে ১২ ঘণ্টা করতে চাইছে। এছাড়া ৩০০-র কম শ্রমিক কাজ করেন এরকম চা-বাগানে মালিকরাই বলবেন শেষ কথা। অর্থাৎ এইসব বাগানের ‘হায়ার অ্যান্ড ফায়ার’ নীতি চালু হবে। শ্রমিকবিরোধী ৪৪টি লেবার কোর্ট বাতিল করতে হবে। দুই, গত বাজেটের আগের বাজাটে কেন্দ্রীয় সরকার অসম এবং বাংলার চা-বাগানের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। উত্তরবঙ্গে ভোটপ্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী বুক বাজিয়ে এই কথা বলেওছিলেন। ঋতব্রতর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী এতবড় প্রবঞ্চনা বাংলার চা-শ্রমিকদের সঙ্গে করেছেন, যার জবাব আমরা চাই। তিন, কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছেন, প্রতিটি চা-শ্রমিককে পিএফ অ্যাকাউন্ট আধার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। কিন্তু প্রত্যন্ত এরকম কোনও পরিকাঠামো নেই আধার সংযুক্তিকরণে। তাই এই দায় কেন্দ্রকে নিতে হবে। চার, বহু চা-বাগানের মালিক শ্রমিকদের পিএফের টাকা জমা দেন না। এজন্য আমরা রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানাব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। পাঁচ, চা-বাগানের শ্রমিকদের সন্তানরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে লেখাপড়ার জন্য স্টাইপেন্ড পেত। কিন্তু চার বছর ধরে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে কেন্দ্রকে সেই বকেয়া টাকা দিতে হবে। সেইসঙ্গে দিতে হবে, ফ্রোর মিনিমাম ওয়েজ। ঋতব্রত জানান, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প, যেমন, স্বাস্থ্যসাথী, চা-সুন্দরী, সবুজ সাথী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, কন্যাশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্প চা-বাগানের কর্মীদের কাছে আমরা আরও বেশি করে পৌঁছে দেব। এজন্য নতুন করে সংগঠন ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কোনও যৌথ আন্দোলন নয়। আইএনটিটিইউসি (INTTUC) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতাদর্শকে অনুসরণ করে শ্রমিক কল্যাণে যাবতীয় উদ্যোগ নিয়েছে এবং নেবে।