প্রতিবেদন : শনিবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ইডির করা আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি চলছিল। সেখানেই বিচারকের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়তে হল ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে। ইডিকে শুনতে হল, কোন অধিকারে এই মামলার তদন্ত করছে ইডি? আর কেনই বা মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলছে তারা? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি ইডি।
আরও পড়ুন-লাদাখে খাদে গাড়ি পড়ে মৃত ৯ সেনা, মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী
এদিন শুনানির শুরুতেই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এখনও পর্যন্ত গরু পাচার মামলায় ঠিক কতগুলি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে? এর জবাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, একটি চার্জশিট এবং চারটি সাপ্লিমেন্টরি (অতিরিক্ত) চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই মামলায় কতজন সাক্ষী রয়েছেন বলেও জানতে চায় আদালত। উত্তর আসে ৫০০। এর পরেই বিচারক ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে প্রশ্ন করেন, এই মামলাটি আপনারা তদন্ত করছেন কোন অধিকারে? পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই সংক্রান্ত কোনও নথি দেওয়া হয়েছে কিনা তা-ও জানতে চান। বিচারকের এই প্রশ্নবাণের কাছে কার্যত ‘আত্মসমর্পণ’ করেন ইডির আইনজীবী।
আরও পড়ুন-এবার পরমাণু যুদ্ধের হুমকি লুকাশেঙ্কোর
বাংলা থেকে এই মামলা দিল্লিতে নিয়ে যেতে চায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর সদুত্তর না পেয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। বিচারক সরাসরি ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান যে, এনআইএ বা অন্য কোনও সংস্থা দিয়ে কেন এই মামলার তদন্ত হবে না? যেখানে এই
মামলার অধিকাংশটাই এখানকার সিবিআই আদালতে শুনানি হচ্ছে। তা হলে কীভাবে ইডি নিজেদের ইচ্ছে মতো অন্য কোনও আদালতে এই মামলা নিয়ে যেতে চাইছে, এই প্রশ্নও ওঠে। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সংস্থা বলেই ইডি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অন্য এজেন্সির মামলাকে অন্য কোনও আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে কি না সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে এদিন।
আরও পড়ুন-ইন্ডিয়াকে ভয়, এবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী সোরেনকে তলব ইডির
প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে যে বিজেপি সরকার নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতে চাইছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, এই অভিযোগ বারবার তুলেছেন বিরোধীরা। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এজেন্সিকে ব্যবহারের কথা বলেছেন। একটা মামলা যখন চলছে এবং সেখানে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাই, সেখানে জোর করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেই মামলাকে রাজধানীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার মধ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ সেপ্টেম্বর।