প্রতিবেদন: যত দিন যাচ্ছে অভিনেতা সইফ আলির উপরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ততই রহস্য ঘনাচ্ছে। ঘটনাটা যে আদৌ কী হয়েছিল, কার কোন বয়ানের সত্যতা বা গ্রহণযোগ্যতা ঠিক কতখানি তা বুঝে উঠতে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন দুঁদে তদন্তকারীরাও। এককথায় সব যেন কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। দুটি বিষয় নিয়ে ধন্দ চরমে। প্রথমত, সইফের আঘাতটা ঠিক কোথায়? তার ধরনটাই বা কেমন? দ্বিতীয়ত, সইফকে হাসপাতালে কে নিয়ে গিয়েছিল? কে ছিল সঙ্গে? সবচেয়ে বড় কথা, সইফের উপরে আসলে হামলাটা চালাল কে? কেনই বা চালাল? শুধু তদন্তকারীরা নন, এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে উদগ্রীব সাধারণ মানুষও। আসলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরস্পর-বিরোধী বয়ান আরও জটিল করে তুলছে পুরো বিষয়টাকে। এমনকি খোদ সইফ এবং তাঁর স্ত্রী করিনার বয়ানের মধ্যেও কোথায় যেন একটা অসঙ্গতি। তদন্তকারীদের ধারণা অন্তত তাই।
আরও পড়ুন-৯ বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলা
হামলার ঘটনা ঘটেছিল ১৬ জানুয়ারি গভীর রাতে। অর্থাৎ ১০ দিন অতিক্রান্ত। কিন্তু প্রশ্ন অজস্র। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, ছুরির ২.৫ ইঞ্চি অংশ আটকে ছিল মেরুদণ্ডের খুব কাছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছিলেন তিনি। যে পরিচারিকা প্রথমেই হামলাকারীর মুখোমুখি হয়েছিলেন, তিনিও বলেছেন আক্রমণকারীর হাতে লাঠি ছিল। তা হলে কোনটা সত্যি? যদি ৬ বার ধারাল ছুরি দিয়ে সত্যিই আঘাত করা হয় সইফকে, তা হলে দেড় ঘণ্টা পরে ১০ মিনিট দূরের লীলাবতী হাসপাতালে গেলেন কেন তিনি? ওই সময়টা বাড়িতে বসে কী করছিলেন তিনি? ওইরকম মারাত্মক জখম অবস্থায় কি বাড়িতে বসে থাকা আদৌ সম্ভব? ৫ দিন হাসপাতালে থাকার পর শিরদাঁড়া সোজা রেখে বুক চিতিয়ে হাসপাতাল থেকে সইফের বের হওয়ার দৃশ্যও বিস্মিত করেছে অনেককেই। আরও প্রশ্ন, নিজের গাড়িতে না গিয়ে অটো ডেকে শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর আসল কারণটা কী? সত্যিই তখন ড্রাইভার ছিল না? পার্টি থেকে ফিরে সইফকে আক্রান্ত হতে দেখে করিনা কী করছিলেন? ছোট ছেলেকে দিদি করিশ্মা কাপুরের কাছে কিংবা কেয়ার গিভারের কাছে রেখে স্বামীর সঙ্গে হাসপাতালে গেলেন না কেন তিনি?
এখানেই শেষ নয়, সইদের উপরে আসল আক্রমণকারী কে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটাও এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। তাই পরস্পর বিরোধী বিবৃতিতে বিভ্রান্ত হয়ে একের পর এক ভুল পদক্ষেপ করে ফেলছে পুলিশ। আটকও করেছে ভুলভাল। ধৃত বাংলাদেশি শরিফুলের বাবা তো সরাসরি দাবি করেছেন, তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। তদন্তেও দেখা যাচ্ছে, সইফের আক্রমণকারীর ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে মিলছে না শরিফুলের আঙুলের ছাপ। এদিকে হামলাকারী সন্দেহে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস থেকে আটক আকাশ বলেছেন, মিথ্যা সন্দেহে ওলটপালট হয়ে গিয়েছে তাঁর জীবনটাই। ভেঙে গিয়েছে বিয়ে। এই পরিস্থিতিতে রহস্য আরও গাঢ় হচ্ছে সইফ পরিবারের নীরবতায়।