প্রতিবেদন: প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের পর শেখ হাসিনা সরাসরি আঙুল তুলেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। তাঁর অভিযোগ ছিল, সামরিক মহড়ার জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ আমেরিকার হাতে তুলে না দেওয়ার মাশুল দিতে হল তাঁর সরকারকে। আর এখন আমেরিকার ঘোষিত বন্ধু মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। অস্থির বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই ডামাডোলের মধ্যেই এবার মহম্মদ ইউনুস সরকারের তরফে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে এল। সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রত্যাশিতভাবেই বিতর্ক চরমে।
জানা গিয়েছে, ভারত এবং চিনকে চাপে রাখতেই নাকি বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ থেকে কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। প্রায় ১৭০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে এই চুক্তি চূড়ান্ত করতে চলতি মাসেই পদ্মা পাড়ের দেশে আসছেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী বিদেশ মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তিনি আবার মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর অন্যতম কর্তাও বটে।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণ দলিত নাবালিকাকে
ভারত এবং চিনকে চাপের মধ্যে রাখতে বরাবরই সচেষ্ট সিআইএ। ভারতকে চাপে ফেলতে পাকিস্তানকে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা চালানোর জন্য বাইডেন প্রশাসনে দেওয়া সবুজসংকেত ভাল চোখে দেখেনি নয়াদিল্লি। ভারত কোনও পদক্ষেপ করার আগেই জলপথে বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর গতিবিধির ওপর নজরদারি চালাতে চায় মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা। তাই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে হংকং এবং তাইওয়ানের বিদ্রোহীদের মদত দিয়ে চিনকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলতে চাইছে আমেরিকা। এই কারণেই বাংলাদেশের এই দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি গড়ে বেজিংকেও চাপে রাখার নয়া কৌশল নিয়েছে ওয়াশিংটন। এর আগে শেখ হাসিনার কাছেও এই দ্বীপ ইজারার জন্য বারবার অনুরোধ করেছিল মার্কিন সংস্থা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাঁতের সাড়া না দেওয়ায় তাঁকে গদি থেকে উচ্ছেদ করতে উঠেপড়ে লাগে সিআইএ। খোদ হাসিনাই এবিষয়ে সরব হয়েছেন। জানা যায়, হাসিনার আমলে এই দ্বীপের জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বিশেষ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। এর জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে থাকা পাকিস্তানের গুপ্তচরদেরও কাজে লাগানো হয়েছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কার্যত আমেরিকা এবং পাকিস্তানের হাতের পুতুল হয়ে রয়েছে। এই সুযোগেই সেদেশের পরবর্তী নির্বাচনের আগেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিজেদের পড়ে নিতে চাইছে সিআইএ। এজন্য বাংলাদেশকে ১৭০০ কোটি ডলার দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ এবং যাই কার কাছে বাংলাদেশের যে ঋণ রয়েছে তা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ডোনাল্ডের সফরকালেই এই দ্বীপ হস্তান্তরের চুক্তি সম্পন্ন হবে।