প্রতিবেদন: মোদি সরকারের দুর্নীতি ও বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন দেশের গর্ব কুস্তিগীররা। এদের মধ্যে প্রথম সারিতেই ছিলেন বিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়ারা। তাঁদের প্রতিবাদে কর্ণপাত করেনি বিজেপি। উল্টে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে খোদ কুস্তিগিরদেরই। সাম্প্রতিক প্যারিস অলিম্পিকে বিতর্কিত কারণ দেখিয়ে নিশ্চিত পদক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বিনেশ ফোগতকে। এই ঘটনায় মোদি সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দুষেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী নেতানেত্রীরা। অলিম্পিক কাণ্ডে বিতর্কিতভাবে পদক হাতছাড়া হওয়ার পর কুস্তি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন বিনেশ ফোগত৷ সেইসঙ্গে জানিয়েছিলেন, তাঁর লড়াই থামবে না৷ দেশের মহিলাদের স্বার্থেই তিনি লড়াই জারি রাখবেন৷ বিজেপি সরকারের বৈষম্য, নারীবিরোধী মনোভাবের কড়া সমালোচনাও করেন তিনি। তখনই জল্পনা শুরু হয়েছিল বিনেশের সরাসরি রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দানে নামার সম্ভাবনা নিয়ে৷
আরও পড়ুন-অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ই লক্ষ্য চেরনিশভের
অবশেষে সেই জল্পনাই নতুন মোড় নিয়েছে বুধবার, যখন সতীর্থ প্রতিবাদী কুস্তিগির বজরং পুনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিনেশ ফোগত৷ রাহুলের সঙ্গে দুই কুস্তিগিরের প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়৷ এই বৈঠকের পরেই কংগ্রেসের তরফে দুই কুস্তিগিরের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর ছবি প্রকাশ করা হয়৷ একইসঙ্গে কংগ্রেস সূত্রে দাবি করা হয়, দু এক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগদান করবেন এই দুই খ্যাতনামা কুস্তিগির৷ শুধু তাই নয়, বিজেপি বিরোধিতার স্বার্থে হরিয়ানার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁরা৷ কংগ্রেস সূত্রের দাবি, বিনেশ ফোগতকে হরিয়ানার জুলানা আসন এবং বজরং পুনিয়াকে বদলি আসনে প্রার্থী করতে পারে কংগ্রেস৷ ভোটে নামার আগে দুই কুস্তিগিরকেই তাদের প্রস্তুতি সারার নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল গান্ধী, দাবি কংগ্রেস সূত্রে৷
আরও পড়ুন-টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে শিক্ষানবিশ নার্সদের সঙ্গে অভব্য আচরণ, কৈলাশ মিশ্রের উদ্যোগে গ্রেফতার অভিযুক্ত
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক ময়দানে প্রত্যক্ষভাবে নামার আগে ইতিমধ্যেই কৃষক সমাবেশে যোগ দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন বিনেশ ফোগত৷ দিন কয়েক আগে হরিয়ানার শম্ভু সীমানায় ধরনারত কৃষকদের সমাবেশে দাঁড়িয়ে সরাসরি মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন বিনেশ ফোগত৷ কেন ২০০ দিন ধরে আন্দোলন চালানোর পরেও দেশের অন্নদাতা কৃষকদের উত্পাদিত ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য প্রদান করা হচ্ছে না ? প্রশ্ন তুলেছিলেন বিনেশ ফোগত৷ তাঁর দাবি ছিল, সরকারকে কৃষকদের দাবি মানতেই হবে৷ এর পরেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত ছিল, বিনেশের রাজনীতির ময়দানে নামাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা৷ বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বিনেশের সাক্ষাৎ সেই পর্বটাকেই আরও এগিয়ে আনল, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷