নির্বাচন কমিশন কি বিজেপির তল্পিবাহক!

কুকুরকেও রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দিচ্ছে ওরা। আর ভোটার লিস্ট থেকে গুচ্ছ গুচ্ছ নাম বাদ দিচ্ছে। আধার আর ভোটার কার্ড নাকি গ্রাহ্য হচ্ছে না ওদের দৌলতে। দেশে চলছে এক অদ্ভুত অবস্থা। অদ্ভুত এক আঁধার নেমেছে দেশে। লিখছেন দেবলীনা মুখোপাধ্যায়

Must read

নির্বাচন কমিশন দিন দিন বিজেপির সেবাদাস হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে চলেছে।
নির্লজ্জভাবে গেরুয়া পক্ষের তোষামোদ করতে নেমেছে তারা।
বেহায়ারা বিহারে ভোটার তালিকায় এসআইআরের কাজ শুরু করেছে। কারা প্রকৃত ভোটার, কাদের নাম তালিকায় থাকবে, তা নির্ধারিত হচ্ছে কমিশন নির্ধারিত ১১টি নথির ভিত্তিতে। এই ১১টি নথির মধ্যে রয়েছে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটও।

আরও পড়ুন-পাশে মুখ্যমন্ত্রী, বাংলাতেই জীবিকা গড়ার জন্য ঋণের ব্যবস্থা, প্রতিবাদের স্লোগান তুলে আজ জটেশ্বরে গর্জে উঠবে তৃণমূল

আর তার ফল?
বিহারের পাটনায় ‘রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ পেয়েছে কুকুর! সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সার্টিফিকেটটি। যাতে লেখা রয়েছে ‘ডগ বাবু’। রয়েছে কুকুরের ছবি। পিতামাতার নাম লেখা রয়েছে অশ্লীল ভাষায়। ওই সার্টিফিকেটে ঠিকানা হিসেবে লেখা রয়েছে পাটনা জেলার কৌলিচক এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। রয়েছে আধিকারিকের সইও। অর্থাৎ জনৈক ‘ডগ বাবু’ ওই এলাকার বাসিন্দা।
গোটাটাই সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত। ভোটার তালিকায় এসআইআরের নামে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। যা পুরোটাই করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। নির্বাচন কমিশন তল্পিবাহকের মতো কাজ করছে। সংশোধনের নামে আসল মানুষের নাম বাদ দিয়ে কুকুরের নামে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। হেনস্থা হতে হচ্ছে। বিজেপি যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে, তার জবাব ওরা ভোটের বাক্সে পাবে। ২০২১ সালের বিধানসভা ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জবাব পেয়েছে বিজেপি। আগামী দিনেও বাংলার মানুষ ওদের জবাব দেবেন।
এই আবহে সবচেয়ে গোলমাল কোথায় সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে মামলায় নির্বাচন কমিশনকে আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডও পরিচয়পত্র হিসাবে সোমবার বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এসআইআর-এ কোন কোন নথি বিবেচনা করা হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল কমিশন। সেখানে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি রাখা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। বিচারপতিরা এই দুই নথিকেই বিবেচনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছেন। আজ আবার এই মামলা শুনবে শীর্ষ আদালত।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতির মন্তব্যও সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেছেন, আধার বা ভোটার কার্ড, এই দু’টি নথি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। আগামিকাল হয়তো দেখবেন, শুধু আধার নয়, ১১টি নথিই জাল করা যাচ্ছে। সেটা অন্য সমস্যা। কিন্তু আমরা গণহারে নাম বাদ দিচ্ছি। গণহারে নাম তো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আপনারা দয়া করে আধার কার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বিশ্বাস করুন, এতে আমাদের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে না। কিছু ভুল হচ্ছে জানতে পারলেই আমরা সব বাতিল করে দেব। আপনারা তৈরি থাকুন।
অন্যদিকে আধার বা রেশন কার্ড সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য, এই নথিগুলি ভোটার যাচাইয়ের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ এগুলি সহজেই জাল করা যেতে পারে।
বিহারের পর এই রাজ্যেও ভোটার তালিকায় সমীক্ষার কাজ শুরু করতে পারে কমিশন। কমিশনের তরফে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু বলা না-হলেও এই কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত থাকবেন, সেই বিএলও-দের একাংশকে দফায় দফায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ১৭-১৮ জুলাই প্রশিক্ষণ চলেছে দিল্লিতে। রবিবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কলকাতার নজরুল মঞ্চে। রবিবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালও নজরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। দিল্লিতে প্রশিক্ষণের বিষয়টি রাজ্য জানতই না।

আরও পড়ুন-কেউ আসেনি, ঝুঁকি নিয়ে ভাল্ব জুড়লেন সহ-চালক

কেন এরকম গোপন কাজকর্ম? কেন এত ঢাক ঢাক গুড় গুড়? কেন এত ছলনা? নিশ্চয়ই ডালমে কুছ কালা হ্যায়।
এই আবহে দুটো কথা বিজেপিকে বলে রাখি।
দেশে মানুষের জমিদারি চলে, বিজেপির নয়।
এ-রাজ্যে একজনের ঠিকানা কাড়লে, পিছু হটিয়ে ছাড়বে বাংলার মানুষ, বিজেপির তল্পিবাহকদেরও ঠিকানা থাকবে না। শূন্য থেকে মহাশূন্যে চলে যাবে বিজেপি।

Latest article