আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে সক্রিয় রাষ্ট্রসংঘ?

তাঁর এই মন্তব্য হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের ভূমিকা ঘিরে সংশয় ও বিতর্ক তৈরি করেছে।

Must read

প্রতিবেদন: বাংলাদেশের অন্যতম বড় দল আওয়ামি লিগকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে না দিলেও নির্বাচন প্রক্রিয়া ‍‘অংশগ্রহণমূলক’ থাকবে বলে মনে করেন সেদেশে রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস। তাঁর এই মন্তব্য হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের ভূমিকা ঘিরে সংশয় ও বিতর্ক তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘ ইউনুস সরকারের স্বরই প্রতিধ্বনিত করছে কি না এবং আদৌ তাদের ভূমিকা নিরপেক্ষ কি না তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

আরও পড়ুন-ভারত-পাক সংঘাত আলোচনায় পুতিন ও ট্রাম্প

বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধির মন্তব্যে বিস্মিত রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলিও। তাদের বক্তব্য, রাষ্ট্রসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য যেখানে সমস্ত পক্ষের বাধাহীন অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সেখানে আওয়ামি লিগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার কথা কীভাবে বলতে পারেন সংস্থার কোনও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি? তাঁর এই মন্তব্য রাষ্ট্রসংঘের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামি লিগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এরপর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার করে আওয়ামি লিগের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রধান দলটিরই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি হিসাবে লুইস সরকারের এই একতরফা, গণতন্ত্রবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ না করে উল্টে আওয়ামি লিগকে ছাড়াই নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার বলেছেন। তাঁর কথায়, রাষ্ট্রসংঘ মনে করে জনগণের অংশগ্রহণই আসল। পার্টির নয়। গোয়েন লুইসের এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির এমন মন্তব্য নির্বাচনী গণতন্ত্রের বিপরীত অবস্থান। পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরাসরি নাক গলানোর চেষ্টা। প্রত্যাশিতভাবেই আওয়ামি লিগ গোয়ান লুইসের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে। হাসিনার দল বলেছে, বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বাংলাদেশে কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামি লিগের থাকা-না থাকা নিয়ে তাঁর মন্তব্য বিস্ময়কর এবং সরাসরি রাষ্ট্রসংঘের অবস্থানের বিপরীত। আমরা মনে করি, এটি গোয়েন লুইসের ব্যক্তিগত বক্তব্য, এটা রাষ্ট্রসংঘের পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য নয়। রাষ্ট্রসংঘ নিশ্চিতভাবে কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এরকম পক্ষপাতিত্বমূলক মন্তব্যকে সমর্থন করতে পারে না। আওয়ামি লিগের অভিযোগ, লুইস দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বহির্শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়। নির্বাচন ইস্যুতে তাঁর পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য আবার তা প্রমাণ করল।

Latest article