পিটিশনেই নেই, রায় হয় কীভাবে, প্রশ্ন তৃণমূলের

পিটিশনে মামলাকারী কোনও আবেদন করেননি অথচ আদালত নিজের মতো করে রায় দিয়ে দিল! এরকম আজব কাণ্ড ঘটল কলকাতা হাইকোর্টে

Must read

প্রতিবেদন : পিটিশনে মামলাকারী কোনও আবেদন করেননি অথচ আদালত নিজের মতো করে রায় দিয়ে দিল! এরকম আজব কাণ্ড ঘটল কলকাতা হাইকোর্টে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের করা মানহানির মামলায় আদালতের এই রায় হইচই ফেলে দিয়েছে। অদ্ভুতভাবে যে প্রেয়ার রাজ্যপালের পিটিশনে ছিল না তার প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তিকালীন রায় দিয়েছে আদালত। এই রায়ে বলা হয়েছে, আগামী ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা চলবে না। এখানেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমুল কংগ্রেস। দলের স্পষ্ট বক্তব্য, রাজ্যপাল আবেদনই করলেন না অথচ আদালত এটা করা যাবে না— ওটা বলা যাবে না বলে রায় দিয়ে দিলেন! কিন্তু এই রায় কীভাবে হতে পারে? প্রশ্ন তৃণমূলের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন রাজ্যপাল। আইনজীবী সঞ্জয় বসু স্পষ্ট জানান, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে। মামলায় যুক্ত করা হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, সদ্য জিতে আসা দুই বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

আরও পড়ুন-দূষণ ছড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াও

সাংসদ মহুয়া মৈত্র তাঁর এক্স-হ্যান্ডেলে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখেছেন, অবিশ্বাস্য। রাজ্যপাল রাজভবন চত্বরে শ্লীলতাহানি-যৌন হয়রানি করবেন সঙ্গে সাংবিধানিক রক্ষাকবচের কথা বলবেন আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হবে চুপ করে থাকতে! দুঃখিত। আমরা রোজ সংবিধান দিবস পালন করি এবং আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবই। প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষও প্রতিবাদ জানিয়ে এক্স-হ্যান্ডেলে লিখেছেন, রাজভবনের এক প্রভাবশালী বাসিন্দার বিরুদ্ধে নারীনির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনা দিল্লির হোটেল তাজ প্যালেস থেকে রাজভবন পর্যন্ত ছড়ানো। তদন্ত হোক। এটা বলায় কার আপত্তি থাকতে পারে? এটা বলেছি। আবার বলব। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের রায়ের পর মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যপালের তরফে পিটিশনে যে প্রেয়ার ছিলই না তার প্রেক্ষিতে কীভাবে এই রায় হতে পারে? তাঁর সংযোজন, রাজভবনের বাসিন্দা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এক ব্যক্তি এক মহিলার শ্লীলতাহানি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যা ঘটেছে তাই বলেছি। কিন্তু যে আবেদন করাই হয়নি তার ভিত্তিতে কীভাবে আদালত এই নির্দেশ দিতে পারে! তবে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীরা৷ মঙ্গলবার বিশিষ্ট আইনজীবী সঞ্জয় বোস জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাক্-স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবিধান৷ রাজ্যের প্রতিটি মহিলার সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁরই৷ অতএব সঙ্গতভাবেই তিনি লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন৷ মহিলাদের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছেন৷ একজন মহিলা জনপ্রতিনিধি হিসেবে একজন নারীর কষ্ট এবং বেদনার অভিযোগ শুনে চোখ বুজে থাকতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী৷ অতএব মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি কোনওভাবেই অবমাননাকর নয় এবং আমরা বিশ্বাস করি, তাঁকে বাক্-সংযমের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা পুরোপুরি অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন৷ সেই কারণেই আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে৷ কারণ, আদালত তার পর্যবেক্ষণে এমন কিছু জানায়নি যে, এই বিবৃতি অবমাননাকর এবং ভুল৷

Latest article