সংবাদদাতা, হুগলি: নিজের দু’টি পা অক্ষম। কিন্তু তাঁর হাতের বোলে নেচে ওঠে বাকিদের পা। শারীরিকভাবে অক্ষম কোন্নগরের বাসিন্দা বছর একাত্তরের জগন্নাথ ঘোষ (Jagannath Ghosh)। তাঁর হাতে ঢাকের কাঠি পড়লেই সৃষ্টি হয় নতুন বোলের। ঢাকের প্রতিটি ধ্বনিকে ভেঙেচুরে নিজের মতো করে সৃষ্টি করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে তুলনা টানা হয় বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী হরিহরণের ড্রামস বাদ্যকর শিবমনির।
আরও পড়ুন-মিলে গেল পূর্বাভাস, পুজো কাটল নির্বিঘ্নে
শিল্পী জানান, ছোট বয়স থেকেই ঢাক বাজানো শুরু তাঁর। ছোটবেলায় হিন্দমোটরের একটি শনি ও কালীমন্দিরে প্রতিদিন ঢাক বাজাতেন, মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর ঢাক বাজানোর প্রতিভা দেখে তাঁকে একটি ঢাক কিনে দেন। বয়স ছিল তখন তাঁর মাত্র ১৫ বছর। এরপর বয়স যখন তাঁর ৩৩ বছর, সেই সময় ট্রেন দুর্ঘটনায় বাদ পড়ে তাঁর দুই পা। তারপর থেকে চলতে ফিরতে ভরসা হুইলচেয়ার। তবে এই প্রতিবন্ধকতাও আটকে রাখতে পারেনি জগন্নাথকে। পুজোর পাঁচটা দিন ঢাক বাজালেও বর্তমানে একটি প্রতিবন্ধী গাড়িতে ছোটদের স্কুলের সামনে বাদাম, হজমি ইত্যাদি বিক্রি করে দিন গুজরান করেন জগন্নাথ। তাঁর ঢাক বাজানোর জন্য ডাকও আসে বহু দূর-দূরান্ত থেকে। একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন জগন্নাথবাবু। বছর একাত্তরের ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধী লোকটার হাতে যখন ঢাকের কাঠি এসে পড়ে তখন তাঁর ঢাকের তালে কোমর দোলায় সামনে দাঁড়ানো সমস্ত মানুষ। নিজে নড়াচড়া না করতে পারলেও তাঁর ঢাকের তালে নাচতে থাকেন সামনে উপস্থিত সকল মানুষ।