নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টা, অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ

Must read

ধূপগুড়ি থানার পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত ও দ্রুত পদক্ষেপের ফলে ১১ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী হরিপদ রায়কে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করল বিশেষ পকসো আদালত।

দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যে পুলিশের নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং মানবিক সংবেদনশীলতা নজর কাড়ার মতো। ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধেয় ধূপগুড়ি থানার ভান্দানির টুকলিমারিতে এক নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার খবর পায় পুলিশ। অভিযোগ পাওয়ার পরই থানায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়। নিখোঁজ নাবালিকার সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। এর মাত্র দু’দিনের মাথায়, ১ অক্টোবর সন্ধে ৭টা নাগাদ গাদং ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজি পাড়ার ডুডুয়া নদীতে বস্তা দেখে স্থানীয়রা খবর দেন থানায়। সঙ্গে সঙ্গে ধূপগুড়ি থানার আইসি সুজয় তুংগা এবং একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি উদ্ধার করেন। তার ভিতরে থাকা মৃতদেহটি জলপাইগুড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয় শনাক্তকরণের জন্য। পরে মৃতদেহটিকে নিখোঁজ মেয়েটির বলেই শনাক্ত করেন তার বাবা। প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে পাওয়া গিয়েছিল নাবালিকার নিথর দেহ।

আরও পড়ুন- পদার্থবিদ্যার বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সফল ৩ বাঙালি! অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তদন্তের ভার দেওয়া হয় ধূপগুড়ি থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমিত মুক্তানকে। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পরই তিনি প্রমাণ সংগ্রহে মনোনিবেশ করেন এবং স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় টুকলিমারির বাসিন্দা হরিপদ রায় (৩১)-কে। ধৃত অভিযুক্ত নাবালিকার প্রতিবেশী ছিলেন। সে মাঝেমধ্যেই টেলিভিশন দেখতে অভিযুক্তের বাড়িতে যেত। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। ২৯ সেপ্টেম্বর সে শিশুটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়, সেখানে তাকে ধর্ষণ করে ও পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে সে মৃতদেহটি নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘৃণ্য অপরাধের তদন্তে পুলিশ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬AB (নাবালিকাকে ধর্ষণ), ৩০২ (খুন), ২০১ (প্রমাণ লোপাট) এবং পকসো আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করে। তদন্তকারী অফিসার সুমিত প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট, ফরেনসিক নমুনা, সাক্ষী ও ঘটনার পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ১৮ নভেম্বর ২০২৩-এর মধ্যেই চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার শুনানি চলে বিশেষ পকসো আদালতে।

আদালতে দীর্ঘ বিচারপর্ব শেষে, বুধবার বিচারক রিন্টু সুর অভিযুক্ত হরিপদ রায়কে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন, পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টার জন্য ৭বছরের জেল ৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Latest article