প্রতিবেদন : কখনও ভাবিনি আমার নামে স্ট্যান্ড হবে। কোনও মহিলা ক্রিকেটারের নামে হয়েছে বলে শুনিওনি। হয়তো কোথাও গেট আছে। কিন্তু স্ট্যান্ড নেই। আমি স্পিচলেস। কথা হরিয়ে ফেলেছি।
ইডেন ঝুলন গোস্বামীর নিজের মাঠ। যে মাঠে প্রথমবার দৌড়তে এসে দাদার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। দাদা মানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। একটু আগে যিনি বলে গিয়েছেন, ঝুলনকে প্রথম দেখার পর বলেছিলাম তুমি তো বেশ লম্বা। এই জন্যই ফাস্ট বোলার। ঝুলনও এমন দিনে বারবার সৌরভের কথাই বলছিলেন। শুরুতে বললেন, সৌরভ স্যার এত কথা বলে দেওয়ার পর আমি কী বলব বুঝতে পারছি না!
আরও পড়ুন-বাকিদের নিয়েও কিছু বলুন, গাভাসকরকে খোঁচা বিরাটের কোচের
কিন্তু বলতে হল। সন্ধ্যার ইডেন লনে অনেক মানুষ। সবাই এসেছেন তাঁর কথা শুনতে। ঝুলনের নামে এদিন স্ট্যান্ড ঘোষণা হল অনুষ্ঠানে। আরেকটি স্ট্যান্ড কর্নেল নিলেকান্তম জয়চন্দ্রন নায়ারের নামে। আইসিসির বর্ষসেরা হওয়া ছাড়াও একদিনের ম্যাচে সবথেকে বেশি উইকেট ঝুলনের দখলে। তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন তিনি। এই সম্মান তাঁর প্রাপ্য। সৌরভ বললেন, ও তো আমার থেকেও এগিয়ে। আমি কখনও দেশের হয়ে টি-২০ ম্যাচে খেলার সুযোগ পাইনি। কিন্তু ঝুলন ৬৮টি ম্যাচ খেলেছে।
পঙ্কজ রায়, জগমোহন ডালমিয়া, সৌরভের পর আরও দুটি স্ট্যান্ড যুক্ত হল ইডেনে। ঝুলন বললেন, মাঠে নেমে একশো ভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি সবসময়। এখনও চেষ্টা করছি ক্রিকেটকে যতটা জানি ফিরিয়ে দিতে। আজই দেখুন বাংলার অনূর্ধ্ব ১৫-র মেয়েরা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জিতল। তার মানে বোঝা গেল ওরা সঠিক পথেই এগোচ্ছে। উপস্থিত অতিথিদের সামনে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক আরও বলছিলেন, ছোটবেলায় সারাদিন ক্রিকেট-ক্রিকেট করতাম। বাড়ির লোকজন ভাগ হয়ে গিয়েছিল দাদা না শচীন। আমি আর মা বরাবর দাদার দিকেই ছিলাম। আমরা যখন খেলেছি তার থেকে ক্রিকেট কিন্তু এখন অনেক বদলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-হিমাচলে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যু বাংলার যুবকের
সৌরভ ঝুলনকে নিয়ে বাড়ির এক ঘটনা তুলে ধরলেন। কোনও এক রবিবারের রাত ছিল সেটা। বাড়িতে বাংলা সিরিয়াল চলছিল। মা দেখছিলেন। সৌরভ মাকে বলেন একটু ক্রিকেট করে দাও না। মা রাজিই হচ্ছিলেন না। কিন্তু যখন শুনলেন ঝুলনের খেলা অমনি রাজি হয়ে যান। ঝুলন নামের এমন ম্যাজিক। সৌরভ বলছিলেন, তাঁর অবসরের পর মা ক্রিকেট দেখেন না। কিন্তু ঝুলনের ব্যাপার আলাদা।