প্রতিবেদন: হরিয়ানায় আরও বিপাকে বিজেপি। লোকসভা ভোটের মধ্যেই আরও নড়বড়ে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবারই বিজেপির নায়েব সিং সাইনি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ৩ নির্দল বিধায়ক। দাবি, তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন আরও এক নির্দল বিধায়ক। প্রত্যেকেই সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের দিকে। এবারে একদা বন্ধু গেরুয়া শিবিরের বিরোধীতায় নেমে পড়ল জননায়ক জনতা পার্টি বা জেজেপি (JJP- Haryana)। দলের প্রধান দুষ্মন্ত চৌতালা বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানিয়ে দিলেন, আবার আস্থাভোট হলে বিজেপি-সরকারের বিরুদ্ধেই ভোট দেবে জেজেপি (JJP- Haryana)। চৌতালা সাফ কথা, বিরোধী দলনেতা ভূপিন্দর সিং হুডা বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তাঁরই পাশে দাঁড়াবে জননায়ক জনতা পার্টি। চৌতালার কথায় একটা কথা স্পষ্ট, লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই হরিয়ানায় পদ্ম-সরকারকে ফেলে দিতে কোনও চেষ্টারই ত্রুটি রাখবেন না তিনি। একদা অভিন্ন-হৃদয় বন্ধু চৌতালার এই দৃঢ় অবস্থান দেখে স্বাভাবিকভাবেই চোখের ঘুম উবে গিয়েছে গেরুয়া নেতাদের। কারণ, একেই কৃষকরা ব্যাপক চটে আছেন বিজেপির উপরে, তারওপর রয়েছে রাজপুত এবং ক্ষত্রিয় বিদ্রোহ। ফলে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ধরেছে গভীর ফাটল। ২৫মে ষষ্ঠ দফায় হরিয়ানার ১০টি লোকসভা আসনেই একসঙ্গে ভোটগ্রহণ। ফলে গভীর দুশ্চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, লোকসভা নির্বাচন চলার মাঝেই দিল্লির পাশের রাজ্য হরিয়ানায় গেরুয়া দলের এই করুণ অবস্থা থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে দেশে নরেন্দ্র মোদির দলের বিপর্যয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং সমীকরণের প্রাণকেন্দ্র দিল্লি লাগোয়া হরিয়ানাতেই যদি ঘর সামলাতে না পারে বিজেপি, তা হলে সারাদেশে তাদের কী দশা হবে?
আরও পড়ুন- হারার ভয়ে দিশেহারা বিজেপি, কাঁথি-তমলুক-সবংয়ে চলছে সন্ত্রাস
দুষ্মন্ত মনে করেন, সাইনি আসলে একজন দুর্বল মুখ্যমন্ত্রী। সরকার চালানোর যোগ্যতা বা ক্ষমতা কোনওটাই নেই তাঁর। অথচ কয়েকমাস আগেও ঘুণাক্ষরেও বোঝা যায়নি যে বিজেপি আর জেজেপির সম্পর্কে ঠিক কতটা ঘূণ ধরেছে। এই দুষ্মন্তের সমর্থনেই সরকার গড়েছিলেন বিজেপির মনোহরলাল খট্টর। তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদও পেয়েছিলেন দুষ্মন্ত। কিন্তু বিরোধ বাঁধে লোকসভা নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে। ইতিমধ্যে মার্চে ইস্তফা দেন খট্টর, ভেঙে যায় রাজ্যের গেরুয়া মন্ত্রিসভা। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন সাইনি। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আস্থাভোটে জয়ী হন তিনি। কিন্তু মাস দুয়েক যেতে না যেতেই আবার টলমল তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারও। মঙ্গলবার সাইনির উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়ে কংগ্রেসের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেন ৩ নির্দল বিধায়ক রণধীন গোলান, ধর্মপাল গোন্ডার এবং সোমবীর সিং সঙ্গওয়ান। শুধু এই ৩ জনই নন আরও এক নির্দল বিধায়ক রাকেশ দৌলতাবাদও তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই ৩ বিধায়ক। অর্থাৎ এই ৪ নির্দল বিধায়কের সমর্থন হারালে কোন অঙ্কেই যে সাইনি আর গরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারবেন না তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।