প্রতিবেদন : কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিয়াছিলেন তিনি আগে মরেন নাই। চাকরিপ্রার্থী এই মহিলাও মরিয়া প্রমাণ করিলেন, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যরা ২৭ লক্ষ টাকা নিয়ে কেস লড়েছিলেন। অসহায় চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে ন্যক্কারজনক রাজনীতি করেছিলেন। আর তিনি সেই নোংরা রাজনীতির শিকার। দীর্ঘদিন ধরে চাকরি না পাওয়ার যন্ত্রণা, মানসিক অবসাদে রোগাক্রান্ত হয়ে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় চাকরিপ্রার্থী প্রণী নার্জিনারির (Proni Narjinary)।
আরও পড়ুন: আজ এলাকায় যাবেন পার্থ-সুজিত-নুরুল
সুপারিশপত্র হাতে পাওয়া সত্ত্বেও চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি মৃত ওই কর্মপ্রার্থী (Proni Narjinary)। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিরোধী শিবিরের আইনজীবীরা ২৭ লক্ষ টাকা নিয়ে মামলা লড়েছিলেন। তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রণীর মৃত্যুর পর আবারও প্রশ্ন তুললেন নবম-দশমে কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষার কর্মপ্রার্থীদের একাংশ। আইনি জটে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রাখার অভিযোগ তুললেন তাঁরা। আজ রবিবার দুপুর ২টোয় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের পার্টি অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছেন এসএসসি ও পিএসসির কর্মপ্রার্থীরা। শনিবার চাকরিপ্রার্থী প্রণীর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে এনে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করেন তাঁরই এক সহযোদ্ধা রাজু দাস। সেই পোস্টটি ‘এক্স-হ্যান্ডেলে’ পুনরায় শেয়ার করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, দেখুন, ভাবুন। আন্তরিক সমবেদনা মৃত চাকরিপ্রার্থীর পরিবার ও সহযোদ্ধাদের। রাজু দাস সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, বিকাশবাবুরা মিথ্যা কেসের আধার করে আমাদের স্কুলে যাবার পথ দেড় বছর আটকে রেখেছেন। বিচারক ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছেন তাঁরা। টাকা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখছেন এই মামলাকে। রাজ্য সরকার যখন চাকরি দিতে চাইছে, তখন বিরোধী আইনজীবীরা বাধা দিচ্ছেন। এই আইনজীবীরা প্রার্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে চাকরির নির্দেশ করে দিচ্ছেন, আবার পরক্ষণেই চাকরি আটকে দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এভাবে নিয়োগ জট পাকাচ্ছেন তাঁরা। আর তার ফলেই মানসিক অবসাদে রোগভোগের পর বিনা চিকিৎসায় তিন বছরের শিশুকে ফেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আলিপুরদুয়ারের খয়েরডাঙা কুমারগ্রামের বাসিন্দা প্রণী। ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর শারীরশিক্ষা বিষয়ে কুমারগ্রাম গার্লস হাইস্কুল বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরি করা হল না তাঁর। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএলএসটি শরীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের প্যানেল প্রস্তুত হয়ে গেলেও নতুন মামলায় তা আটকে রয়েছে। নিয়োগের বিষয়ে রাজ্য সরকার শূন্যপদও তৈরি করেছিল। কিন্তু আইনি গেরোয় আটকে রয়েছে ওই নিয়োগ। কিন্তু নিয়োগ জটে এ-পর্যন্ত নিয়োগ আটকে থাকায় মানসিক অবসাদের ভুগছিলেন তিনি।