বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদেই তৃণমূলে আসা: তাপসী

সোমবার তৃণমূল ভবনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত থেকে দলীয় পতাকা গ্রহণ করার পরেই গদ্দার অধিকারী ও বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন হলদিয়ার বিধায়ক।

Must read

প্রতিবেদন : বাংলায় বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি মেনে নিতে পারছি না বলেই দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের যজ্ঞে শামিল হব বলেই বিজেপি ছাড়লাম। দলে যোগ দেওয়ার পরই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে তৃণমূল ভবন থেকে যান নবান্নে। সেখানে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। নেত্রীকে প্রণাম করে তাঁর আশীর্বাদ নেন। তাপসী বলেন, হলদিয়ার উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। দিদি তাঁকে মন দিয়ে কাজ করতে বলেছেন। মানুষের পাশে থাকতে বলেছেন। হলদিয়ায় সংগঠনকে আরও মজবুত করার দিকে নজর দিতে বলেছেন।

আরও পড়ুন-ধরুক পুরুষ পরম পৌরুষে সভ্যতার তরবারি, সদা তার পাশে রয়েছে যে গো বিজয়লক্ষ্মী নারী

সোমবার তৃণমূল ভবনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত থেকে দলীয় পতাকা গ্রহণ করার পরেই গদ্দার অধিকারী ও বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন হলদিয়ার বিধায়ক। তাপসী বলেন, প্রগতিশীল এই বাংলার মাটিতে যেভাবে বিভাজনের রাজনীতি চলছে, আমরা দেখছি বিভাজনের সেই রাজনীতি বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করা আমাদের ধর্ম, আমাদের অগ্রাধিকার। এই বিভাজনের রাজনীতি আমার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছিল। বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করার পরেও তা পুরো পরিবর্তন হয়নি। বিভাজনের রাজনীতি চলছেই। তৃণমূলে যোগ দিয়ে গদ্দার অধিকারীর বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপি স্টেট কমিটির সদস্য এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কোর কমিটির সদস্য শ্যামল মাইতিও। গদ্দারকে দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড বলে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, হলদিয়া কলকারখানায় লোক ঢুকিয়ে টাকা তোলার কান্ডারি শুভেন্দুই। এমনকী তার লোক কাঁথি থেকে এসে ব্যাগে করে টাকা নিয়ে যেত। হলদিয়ার উদ্বাস্তু বেকার ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না শুভেন্দুর ভয়ঙ্কর তোলাবাজি আর দুর্নীতির জন্য। সেই সঙ্গে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য দিয়ে শ্যামল বলেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে পুলিশি ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ভোট করিয়ে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী হবে পিছনের দরজা দিয়ে, এরকমই পরিকল্পনা কথা জানিয়েছিল তাঁদের। শ্যামল মাইতির কথায়, এই দলবদলু গদ্দার বারবারই বলত, আমার সঙ্গে দিল্লির কথা হয়ে গিয়েছে। আমার সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলায় ঝামেলা লাগানোর পরিকল্পনাও রয়েছে গদ্দারের। ও চায় রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হোক, মানুষে-মানুষে বিভেদ গড়ে উঠুক। যা শুনে রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন জেলার নেতা-কর্মীরা।
এদিন তাপসী বলেন, প্রগতিশীল বাংলাকে রক্ষা করতে এবং বিশেষ করে আমার হলদিয়ার উন্নয়ন, শিল্প পরিকাঠামো এবং সবদিক থেকেই বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান, আর্থিক উন্নতি, সামাজিক উন্নয়নের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য কিছু কাজ করতে যাতে আমি পারি তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নযজ্ঞে যুক্ত হলাম। তাঁর নির্দেশে হলদিয়ার উন্নয়ন করব আগামী দিনে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উন্নয়ন করব। বাংলার সমস্ত স্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আগামিদিনে উন্নয়নের কাজ করব। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। তাপসী ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তমলুকের বিজেপি বিধায়ক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও। জেলা সভাপতি ও অন্যান্য লোকদের সঙ্গে ঝুট-ঝামেলা করার অভ্যেস হয়েছে তাঁর। কাউকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারেন না উনি। স্পষ্ট বক্তব্য সদ্য বিজেপি ছাড়া তাপসীর।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

শ্যামল মাইতি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আমরা বিজেপির মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ্য করছি যে গোটা বাংলার যা ঐতিহ্য, সে ঐতিহ্য বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। বিজেপি ও তার নেতা গদ্দার অধিকারী হিংস্র রাজনীতি করবার চেষ্টা করছে, বাংলার বিরোধী দলনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। বাংলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চাইছে। বারবার দলে বলেছি, কোনও সদুত্তর পাইনি। বাংলাতে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা মনে করেছি যে দিদির নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় উন্নয়নের ধারা ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে, সকলে মিলেমিশে থাকতে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই। শ্যামলের সংযোজন, আমরা লক্ষ্য করছি, হলদিয়ার কলকারখানায় বেকার যুবক-যুবতী বা উদ্বাস্ত ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেছে সেদিন থেকে যেদিন থেকে সেখানে শুভেন্দুর কুনজর পডে়ছে আর ব্যাপক হারে তোলাবাজি শুরু হয়েছে।

Latest article