বিজেপি (BJP) শাসিত উত্তরপ্রদেশের (UttarPradesh)সীতাপুরে হাড় হিম করা জঘন্য় ঘটনা। যোগীরাজ্যে ধান কেনায় কেলেঙ্কারি এবং জমি বিক্রির ক্ষেত্রে স্ট্য়াম্প দুর্নীতি নিয়ে একাধিক খবর করছিলেন এক সাংবাদিক। প্রতিহিংসার জেরে এবার সেই সাংবাদিককেই রাস্তার ওপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিল বিজেপির মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা। নিহত সাংবাদিকের নাম রাঘবেন্দ্র বাজপেয়ী। এদিন হাইওয়ের ওপর রীতিমত তাড়া করে খুন করা হল এই সাংবাদিককে।
আরও পড়ুন-অনুুপ্রবেশ থেকে চোরাকারবার মদতদাতা বিএসএফই : উদয়ন
আশ্চর্যের বিষয়, শনিবারের এই ঘটনার পর দুদিন পার হয়ে গিয়েছে তবু কাউকে গ্রেফতার করেনি যোগীর পুলিশ। সাংবাদিকের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে উত্তরপ্রদেশের তরুণ সাংবাদিক কী দুর্নীতির খবর করেই প্রভাবশালীদের রোষে পড়লেন? দুর্নীতি ফাঁস করার জন্য়ই কী সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে? যোগীরাজ্যে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে আক্রমণ এই প্রথম নয়। কর্তব্য় পালনের মাসুল আগেও দিতে হয়েছে সাংবাদিকদের।
আরও পড়ুন-বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদেই তৃণমূলে আসা: তাপসী
৩৫ বছর বয়সী রাঘবেন্দ্র নামের এই সাংবাদিক দৈনিক জাগরণের স্থানীয় সাংবাদিক ছিলেন আর কিছুদিন আগেই সরকারের তরফে ধান কেনা এবং জমি দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি খবর করেছিলেন। রাঘবেন্দ্রর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর কাছে হুমকি ফোন আসছিল। যদিও তারপরেও রাঘবেন্দ্র ওই সংক্রান্ত খবর করা বন্ধ করেননি। এর ফলেই রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েছিলেন প্রভাবশালীরা। ৮ই মার্চ বিকেল ৩:১৫ মিনিটে রাঘবেন্দ্র বাজপেয়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শনিবার দুপুরে বাইকে চড়ে সীতাপুর-দিল্লি ন্য়াশনাল হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলেন রাঘবেন্দ্র। হেমপুর রেলওয়ে ক্রসিংয়ের কাছে, একটি বাইকে চড়ে তাঁকে তাড়া করে দুষ্কৃতীরা। প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তার ওপরই রাঘবেন্দ্রকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। তিনটি গুলি লাগে বুকে, কাঁধে। এরপরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রাই দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তবে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর পেরিয়ে গেছে দুটো দিন। কিন্তু গ্রেফতারি হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্তরে প্রশ্ন উঠছে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের দুদিন পরও কেন দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারল না উত্তরপ্রদেশ পুলিশ? উত্তরপ্রদেশে সংবাদমাধ্য়মের স্বাধীনতা তাহলে কোথায়? এভাবেই কী খুন করে সংবাদমাধ্য়মের কণ্ঠরোধ করা হবে বারবার? যদিও যোগী সরকারের তরফে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন-অনুুপ্রবেশ থেকে চোরাকারবার মদতদাতা বিএসএফই : উদয়ন
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টস (আইএফজে) এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলি, ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস ইউনিয়ন (আইজেইউ) এবং ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস – ইন্ডিয়া (এনইউজে-আই) এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং কর্তৃপক্ষকে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত এবং সুষ্ঠু তদন্ত পরিচালনা করার দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, চাপের মুখে যোগীর পুলিশ এই নৃশংস হত্যার অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য মাহোলি এবং সীতাপুর জেলার পার্শ্ববর্তী শহরগুলিতে চারটি দল গঠন করা হয়েছে বলে খবর তবে গ্রেফতারির কোন খবর ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আসেনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী এবং তিনজন লেখপাল, স্থানীয় ভূমি প্রশাসক সহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।