বিচারপতি নাকি রাজনৈতিক নেতা! মেলামঞ্চে বেলাগাম আক্রমণ

Must read

প্রতিবেদন : বিচারপতির আসনে বসে নিজের রাজনৈতিক সত্তা খুল্লাম খুল্লা প্রকাশ করে দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)৷ দেশের কোনও বিচারপতি রাজনীতির কথা এভাবে কখনও প্রকাশ্যে বলেননি৷ বললেও তাঁরা কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর বলেছেন৷ আর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কখনও মেলামঞ্চে দাঁড়িয়ে, কখনও হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন, রাজ্যে সরকার চলছে নাকি? রাজ্যপালের উচিত রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা৷ বাম-কংগ্রেস তো এই ভাষাতেই কথা বলে৷ বামপন্থার প্রতি বিচারপতির দুর্বলতার কথা সর্বজনবিদিত৷ কিন্তু তাদের সুরে সুর মিলিয়ে বিচারপতি শুধু যে বিতর্ক টেনে এনেছেন তাই নয়, নিজের রাজনৈতিক অবস্থানও পরিষ্কার করে দিচ্ছেন৷

আরও পড়ুন- বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচন বয়.কট আর সং.ঘাতের আবহে শেষ হল প্রচার

এই ঘটনাতে ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস বিচারপতিকে তাঁর সাংবিধানিক সীমানা বুঝিয়ে তুলোধোনা করেছে। দলের স্পষ্ট বক্তব্য, নিজের উইশলিস্ট পূরণ করতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) একেবারে রাজনৈতিক নেতার মতো বক্তব্য রাখছেন। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে তোপ দেগে বলেন, উনি চেয়ার ও পদের অপব্যবহার করছেন। নিজের উইশলিস্ট এভাবে এগিয়ে দিচ্ছেন কেন? উনি শুক্রবার যা বলেছেন, তা পুরোদস্তুর কমরেড গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা।
কুণালের সংযোজন, মুখোশের আড়ালে না থেকে মুখোমুখি আসুন। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির উচিত ওঁকে বের করে দিয়ে ৭ তারিখের সিপিএমের ব্রিগেডে মিটিংয়ে পাঠানো। কুণালের আরও তোপ, নেতা সাজার এত ইচ্ছা থাকলে টুল কিনে হাইকোর্টে পাড়ায় টিফিন টাইমে তার উপর দাঁড়িয়ে ভাষণ দিন। উনি বাংলা সম্পর্কে কী জানেন? বিচারপতির আসনে বসে রাষ্ট্রপতি শাসন-রাজ্যপালের কী করা উচিত, এসব পরামর্শ দিচ্ছেন। এগুলি কি উনি পারেন? তাঁর সংযোজন, এরকম দু’-একজন বিচারপতির জন্যই বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে। এই ঘটনা চলতে থাকলে আদালতের প্রতি, বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষ আস্থা হারাবেন।
শুক্রবার সকাল থেকে একের পর এক সমালোচনা ধেয়ে আসতে রাতের দিকে সমস্ত বাঁধ ভেঙে যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের৷ মাত্রাজ্ঞান, সৌজন্যবোধ ও বিচারপতিসুলভ বাধ্যবাধকতাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে একেবারে রাজনৈতিক নেতার মতো তৃণমূলের অন্যতম নেতাকেও বেনজিরভাবে আক্রমণ করেন৷ তাঁকে রাস্তার ছোঁড়া বলতে তাঁর সৌজন্যে বাধেনি৷ এই পাল্টা জবাব দিয়েছেন দেবাংশু৷
লিখেছেন, রাস্তার ছোঁড়ারাই ‘রাজা তোর কাপড় কোথায়’ প্রশ্ন তুলতে পারেন অভিজিৎবাবু। সকালে গদ্দার অধিকারী রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করার পরেই আপনিও একই ইঙ্গিত করলেন। তারপরে বেলা গড়ানোর পর ওই শুভেন্দুর থেকে ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যু তুলে ধরার চেষ্টার পর রাত্রিবেলায় এসে আপনিও সেই একই দিকে ইঙ্গিত করলেন। যা বুঝলাম, বিজেপির ব্রিফিং আপনার কাছে একদম সঠিক সময়ে এসে পৌঁছচ্ছে। এই সমস্ত বক্তব্য রাখার পর আপনার অন্তত আর বিচারপতির চেয়ারে থাকা সাজে না। লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন।

Latest article