সংবাদদাতা, কাটোয়া : নতুন স্বপ্নপূরণে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ উড়ে গেলেন কালনার ২২ বছর বয়সি জলের রানি সায়নী দাস। এবার তাঁর লক্ষ্য, সেখানকার মলোকাই চ্যানেল সাঁতরে জয় করে সপ্তসিন্ধু পার হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু হাওয়াই পৌঁছে অন্য এক সমস্যার মুখে পড়েছেন তিনি (Sayani Das)। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল, ৩ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে মলোকাই-জয়ে জলে নামবেন। কিন্তু এখন নামার ক্ষেত্রে বড় বাধা হল প্রবল সামুদ্রিক ঝড়। ঝড়ে উথালপাথাল ঢেউয়ের জন্য জলে না নামার ফরমান জারি করেছেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। সায়নী (Sayani Das) জানান, ‘‘কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ঝোড়ো বাতাস একটু ক্ষমতা হারালে চ্যানেল খুলে দেওয়া হবে। তবে এসেছি যখন, তখন চ্যানেল জয় না করে ফিরব না।’’ সায়নীর বাবা তথা কোচ রাধেশ্যাম দাস বললেন, ‘‘৫ তারিখে জানা যাবে কবে চ্যানেলে নামতে পারবে সায়নী। যতক্ষণ চ্যানেলে নামার অনুমতি না পাচ্ছে ততদিন এখানে ৩ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন চালিয়ে যাবে।’’ মলোকাই জিতলে এশিয়ার প্রথম মহিলা হিসেবে এই চ্যানেল জয়ের স্বীকৃতি মিলবে জলপরী সায়নীর। রাধেশ্যামবাবু জানান, ‘‘এক বছর আগেই সায়নী মলোকাই জিততে পারত। সম্মতি থেকে শুরু করে সবরকম কাগজপত্র রেডি হয়ে গিয়েছিল। বাদ সাধে করোনা।’’ তবে তার মধ্যেও মলোকাই জিততে বদ্ধপরিকর সায়নী অনুশীলনে এতটুকু খামতি দেননি। সায়নীর কথায়, ‘‘ভাগীরথী তো বটেই, সড়গড় হতে পুরীর সমুদ্রে দিন পনেরো ধরে রোজ ১০/১২ ঘণ্টা সাঁতরেছি।’’
ইতিমধ্যেই তিনটি চ্যানেল জয় করেছেন সায়নী। ২০১৭-য় ইংলিশ চ্যানেল, ২০১৮-য় রটনেস্ট চ্যানেল এবং ২০১৯-এ ক্যাটলিনা চ্যানেল জয় করে ভারতের তেরঙ্গা পতাকা উড়িয়েছেন। ২০২০-তে ২৬ কিমি দীর্ঘ, দুই-আড়াই হাজার ফুট গভীর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলোকাই চ্যানেলে নামার প্রস্তুতি শুরু করেন। উথালপাথাল ঢেউ ঠেলে গোটা চ্যানেল পেরোতে মোটিমুটি ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগবে। এই চ্যানেল-জয় অনেক কঠিন এই কারণে যে, প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাড়তি বিপদ হল, পদে পদে হাঙরের হামলার ভয়। তবে আতঙ্ক দূরে ঠেলে এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে রেকর্ড বইয়ে কালনার নাম তুলতে মরিয়া সায়নী।