প্রতিবেদন: প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভায় চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। কোনওরকম রাখঢাক না করেই মোদির উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, আপনার মতো পাহারাদার থাকলে আরও ভারতীয় প্রাণ হারাবেন। সোমবার অপারেশন সিঁদুর নিয়ে লোকসভায় বিশেষ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর অপদার্থতার মুখোশ খুলে দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। সোমবার আগাগোড়া বাংলাতেই বক্তব্য পেশ করলেন তিনি। নজর কাড়লেন ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে শুরু করে অন্য বিরোধী সাংসদদেরও। পাশাপাশি নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বিজেপির বাংলা ভাষার প্রতি অমর্যাদা ও বিদ্বেষের মনোভাব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবিতে তৃণমূল যে অনড় এবং এতেই দলের অগ্রাধিকার এদিন তাও স্পষ্ট করে দিলেন কল্যাণ। তাঁর কটাক্ষ, আগে সরকার নির্বাচিত করতেন ভোটাররা, আর এখন নরেন্দ্র মোদি সরকার বলছে, তারাই বেছে নেবে ভোটারদের। এ তো গণতন্ত্রকে খুন করা হচ্ছে। এসআইআর নিয়ে আলোচনায় এই সরকার ভয় পাচ্ছে কেন? সোমবার সিঁদুর নিয়ে তাঁর বক্তব্যে শুরুতেই মোদি-শাহ ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলে দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, ভারতবর্ষের এমন পাহারাদার যে ৪ জঙ্গি ঢুকে কাশ্মীরে হত্যালীলা চালিয়ে পালিয়ে গেল। সেই জঙ্গিদের ধরতে ব্যর্থ হল সরকার। অথচ সেই কথা ধামাচাপা দিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে একশো জঙ্গিকে হত্যার বিষয়ে বড় বড় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সাহস থাকলে সত্যি কথা বলুন। ৪ জঙ্গি কী করে প্রবেশ করল পহেলগাঁওয়ে, ১৪০ কোটি দেশবাসী জানতে চায় তা, জবাব দিন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, অপদার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, ব্যর্থ অজিত দোভাল। গোয়েন্দারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন- বাঙালি দেখলেই হেনস্থা, গভীর চক্রান্ত এসআইআর নিয়ে, তোপ
অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী ভারত-পাকিস্তান গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধায়। নিজের বক্তব্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের বিভিন্ন কবিতার পঙক্তি উদ্ধৃত করে মোদি-শাহকে নিশানা করেন তৃণমুল সাংসদ। এরপরেই অমিত শাহর উদ্দেশ্যে কল্যাণের কটাক্ষ, পহেলগাঁও হামলায় বিএসএফ-সহ নিরাপত্তাবাহিনীর নাকের ডগা দিয়ে জঙ্গি ঢুকে পড়ল অথচ পহেলগাঁওয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জঙ্গি ধরতে পারলেন না, ব্যর্থ হলেন। অপারেশন সিঁদুরের পর গোটা দেশবাসীর মনের মধ্যে পাকিস্তান বিরোধী তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়। ভারত তাদের হাত থেকে এবার বুঝি পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে নেবে— এমন আশায় বুক বাঁধছিলেন দেশের আপামর জনগণ। কিন্তু ১০মে দুপুর সাড়ে তিনটেয় হঠাৎ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। রীতিমতো অবাক করে দেওয়ার মতো। প্রধানমন্ত্রী মোদিই এমন কাজ করতে পারেন! উপহাসের ভঙ্গিতে বলেন তৃণমুল সাংসদ। ৯০ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার একমাত্র মোদিই করতে পারেন। ভারত-পাকিস্তানের এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, নিজেই ট্যুইটে তা লিখেছেন। আমাদের মাথা লজ্জায় নত হয়ে গিয়েছে।