বিজেপির বাংলা বিরোধিতা ও বিদ্বেষ-রাজনীতি যে কোথায় পৌঁছেছে, তা কল্পনারও বাইরে। রাজ্যে রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপর দমন-পীড়ন তো চালাচ্ছেই, এবার তারা রেহাই দিল না কার্গিল (kargil) যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনা পরিবারকেও। বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের পুনেতে কার্গিল যুদ্ধের এক প্রবীণ সৈনিকের পরিবারকেও হেনস্থার শিকার হতে হল। সেনা পরিবারের অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে পুলিশ-সহ ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ চায়। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে যে সৈনিক বুক চিতিয়ে দেশের হয়ে যুদ্ধ করেছিল নিজের প্রাণকে তুচ্ছ করে, তাঁকেই নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হচ্ছে। লজ্জা! বিজেপির লজ্জা হওয়া উচিত। কার্গিল যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক হাকিমুদ্দিন শেখের পরিবার অভিযোগ করেছে, মঙ্গলবার পূর্ব পুনের চন্দননগরে তাঁদের বাড়িতে এসে কাগজপত্র দাবি করে পুলিশ ও অন্যদের ৩০-৪০ জনের দল। মধ্যরাতেই পরিবারের পুরুষ সদস্যদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর ভোর ৪টে পর্যন্ত থানায় আটকে রাখা হয়। সেই সঙ্গে হুমকি দেওয়া হয় যে, যদি আমরা আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হই, আমাদের বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন-ভারতে ঢোকার চেষ্টা, ২ পাক জঙ্গিকে নিকেশ করল সেনা
এই হচ্ছে বিজেপি। ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী ও বাঙালিদের নিপীড়ন চালাচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই তাদের হেনস্থা করা করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে। সারা দেশ জুড়ে চলছে গভীর চক্রান্ত। কার্গিল সেনা পরিবারকে হয়রান করার পর বেকায়দায় পড়ে পুনে পুলিশের ডিসিপি আবার সাফাই গাইছেন, সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের দল কাগজপত্র চেয়েছিল। তারা ভারতীয় বলে স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর, আমরা তাদের ছেড়ে দিয়েছি। পুলিশের দলের সাথে তৃতীয় কোনও পক্ষ ছিল না।
উল্লেখ্য, ৫৮ বছর বয়সী হাকিমুদ্দিন ১৯৮৪ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ২৬৯ ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্টে ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর আক্ষেপ, আমি কার্গিলে এই দেশের জন্য লড়াই করেছি। আমাকেই কি না প্রশ্ন করা হচ্ছে, আমি এ দেশের নাগরিক কি না!