বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়ে নি! একসময়ের কেরালার দুঁদে আইপিএস, ‘রেইড শ্রীলেখা’ এখন বিজেপির সাথে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েত জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। কেরলের (Kerala) পুলিশ ইতিহাসে শ্রীলেখার নাম জড়িয়ে থাকলেও এবার সেই প্রাক্তন ডিজিপি রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেন। অবসরের ৫ বছর পর প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামতে চলেছেন তিনি। তিরুবনন্তপুরম কর্পোরেশনের সাস্তামঙ্গলম ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন কেরলের এই প্রথম মহিলা আইপিএস ( IPS) অফিসার। ১৯৮৭ ব্যাচের এই অফিসার কেরলে প্রথম মহিলা IPS এবং ২০১৭ সালে প্রথম মহিলা ডি-জিপি হন। পরিবহণ কমিশনার হিসেবে থাকাকালীন বিশেষ ভূমিকা পালন করেন তিনি। সিবিআইয়ে ডেপুটেশনে ‘হাই-ভিজিবল’ অভিযানের জন্য তিনি ‘রেইড শ্রীলেখা’ নাম পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’-এ সুবিধা পেলেন ৭ কোটি মানুষ! টেলিমেডিসিন পরিষেবা নিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
২০২৪ সালের অক্টোবরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। শ্রীলেখা মনে করছেন ভারতের কোথাও পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবসরপ্রাপ্ত IPS-কে প্রার্থী করা হয়নি। বিজেপি তাঁকে সাধারণ মানুষের মাঝে কাজ করার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। বিজেপির জন্যও তার প্রার্থী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দল তিরুবনন্তপুরম কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং রাজ্যে ভোটের ভাগ বাড়ানোর জন্য এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বিজেপি ক্যাডার বা জনসাধারণের মধ্যে শ্রীলেখার খুব বেশি প্রভাব নেই। তাই, শেষ পর্যন্ত তিনি কতটা মানুষের মনে জায়গা করে নেবেন সেটা সন্দেহজনক। সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক এম.ভি. গোবিন্দন জানিয়েছেন তাঁদের দল নিজেদের জনপ্রিয় প্রার্থীদের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখছে। তারা ইতিমধ্যেই জনগণের সান্নিধ্যে থেকে নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সে যেই হোক, বিধায়ক হোক বা ডিজিপি, তাতে কিছু যায় আসে না। জনগণ এবং তাদের সমস্যাগুলি জেনে সেই বুঝে কাজ করা এতটাও সহজ হবে না।
আরও পড়ুন-এসটিএফের তল্লাশিতে গাড়িতে উদ্ধার পাঁচ কোটি
অন্যদিকে ৩৩ বছরের কর্মজীবনে শ্রীলেখা বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি অভিযোগ করেন, সহকর্মী টোমিন থাচানকারি তাঁকে প্রায় তিন দশক ধরে হয়রানি করেছেন। ২০২২ সালে অভিনেতা দিলীপকে ২০১৭ সালে জেলবন্দি অবস্থায় সাহায্য করার কথা বলেন তিনি। পুলিশবিভাগে নারী-অফিসারদের উপর যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেও একবার বিতর্কে জড়ান তিনি। কেরল পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন যদিও তাঁর অভিযোগ অস্বীকার করে। শ্রীলেখার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরেই কংগ্রেসের তরফে ভগবতী মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁর আগের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বিখ্যাত আট্টুকাল ভগবতী মন্দিরের ‘কুথিওত্তম’ আচার এর সময় শ্রীলেখার প্রতিবাদের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস নেতা সন্দীপ ভারিয়ার একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি কর্মীরা এবং অন্যান্য সংঘ পরিবার ও হিন্দু সংগঠনগুলি কি তাহলে মন্দিরের কোনও আচার-অনুষ্ঠানের সমালোচনাকারীর স্বপক্ষে কাজ করছিল?

