ভাল থাকার পাসওয়ার্ড

ভাল থাকার অনেক পথ, শুধু খুঁজে নেওয়ার দেরি। কীভাবে নিজের মনকে ভাল রাখবেন, কী খাবেন, কোন অস্বাস্থ্যকর যাপন বাদ দেবেন— এই নিয়ে রইল নানান টিপস। লিখলেন সোহিনী মাশ্চারক

Must read

ঘুম থেকে ওঠার পর ও ক্লান্তি আর তন্দ্রাচ্ছন্নতা যেন ঘিরে থাকে এষাকে। কিছুতেই যেন তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা ঝিমুনিভাব পিছু ছাড়তেই চায় না। কর্পোরেট কর্মরত এষা তাই এই সমস্যা দূর করতে ভরসা রাখেন চা, কফিতে। এষার মতো এইরকম বহু মেয়েই ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্তি কাটাতে কড়া কফিতে চুমুক দিয়ে সমস্যার সমাধান খোঁজেন তবুও কাটে না খারাপ লাগার ভাব। এর নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু কারণ। পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, খালি পেটে কফি খেলে হজমজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। তা ছাড়া কফি খেলে প্রথম দিকে এনার্জেটিক বা চাঙ্গা অনুভব করলেও, পরের দিকে এটাই ক্লান্তি ঢেকে আনে। তাই সকালে এনার্জেটিক অনুভব করার জন্য কফির বিকল্প উপায় খুঁজুন। ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্ত লাগার পিছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এটি সাধারণত একজন ব্যক্তির ঘুমের মান বা দৈনন্দিন অভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। প্রধান কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল—
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না। এর ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠার পরও ক্লান্তি অনুভূত হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে চাঙ্গা বোধ করার প্রথম শর্ত হচ্ছে রাতে ভালভাবে ঘুমোনো। এমনকী ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোলেও যদি সেই ঘুম ঠিকঠাক না হয় বা বারবার ব্যাঘাত ঘটে, তবে আপনি পর্যাপ্ত সময় ঘুমালেও ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এর কারণ হতে পারে স্লিপ অ্যাপনিয়া, নিদ্রাহীনতা।
এ ছাড়াও সার্কাডিয়ান রিদমের বিঘ্ন কিন্তু ঘুমের সমস্যার আর একটি কারণ। আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি, যা সার্কাডিয়ান রিদম নামে পরিচিত, যদি বিঘ্নিত হয় যেমন রাতে খুব দেরি করে ঘুমানো বা বারবার সময় পরিবর্তন করা, তবে আপনার ঘুমের চক্র ঠিকমতো কাজ করে না। এর ফলে আপনি ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।

করণীয় : পর্যাপ্ত ঘুম যাতে হয় বা ঘুমে ব্যাঘাত যাতে না ঘটতে পারে সেজন্য ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময় বের করুন। সেই সঙ্গে ঘুমোতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগেই মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন বা বলা ভাল স্ক্রিন টাইম থেকে বিরত থাকুন। এর পাশাপাশি চেষ্টা করবেন ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিতে।

আরও পড়ুন-মোদি জমানায় বেড়ে চলেছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা

হাইড্রেশনের অভাব
পর্যাপ্ত জল না পেলে শরীরের কোষগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, এবং ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর পর শরীর খুব ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায় কারণ রাতে ৬-৮ ঘণ্টা জল বা কোনও তরল খাবার খাওয়া হয় না। স্বাভাবিক ভাবেই ঘুম থেকে উঠে শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে। আর এই ডিহাইড্রেশনের কারণে আমাদের মানসিক চাপ বেড়ে যায়, ক্লান্তি বাসা বাঁধে শরীরে।
করণীয় : এজন্য ঘুম থেকে উঠে জল খান। এক গ্লাস জল এক নিঃশ্বাস খেয়ে নিন। খুব ভাল হয় যদি কুসুম গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যায়, হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি শরীরের মেটাবলিজমের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেবে। জলে পিঙ্ক সল্ট মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। ঘুম থেকে উঠে জলের বিকল্প হিসাবে কখনওই কফি বা চা গ্রহণ করবেন না। জল আপনার শরীরের যাবতীয় টক্সিনগুলোকে শরীর থেকে বের করে দেবে আর আপনাকে তরতাজা ও চাঙ্গা অনুভব করাবে।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ঘুমানোর আগে ভারী খাবার খেলে বা অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন কফি পান করলে ঘুমের গুণমান নষ্ট হতে পারে, ফলে সকালে ক্লান্তি আসে। তাই ঘুম থেকে উঠে বা তাৎক্ষণিক ভাবে চাঙ্গা অনুভব করার জন্য যে কফির বা চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন রাতের বেলা ঘুমের আগে কিন্তু তা আপনার ঘুম কেড়ে নেবে। এ-প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়াল জানিয়েছেন, কফি সাময়িক ভাবে শরীরকে চাঙ্গা করলেও আসলে কিন্তু প্রচুর ক্ষতি করে, হজমের সমস্যা হয়।

করণীয় : সকালের জলখাবার যদি তেল-মশলা যুক্ত হয় তাহলে তা বেলা বাড়ার সাথে সাথে আপনার শরীরে ক্ষতি ডেকে আনবে, ক্লান্ত লাগবে তাই ব্রেকফাস্টে ব্যালান্সড ডায়েট রাখা ভীষণ জরুরি। ভরপেট খাবার তো খাবেন শুধু তাই নয়, ব্রেকফাস্টে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। ডিম সিদ্ধ, পনির, গ্রিক ইয়োগার্টের মতো খাবার রাখতে পারেন। পাশাপাশি কমপ্লেক্স কার্বস হিসেবে ওটস, কিনোয়া, ডালিয়ার মতো দানাশস্য খেতে পারেন।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপ, কর্মক্ষেত্রের চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং এর ফলে ঘুম ভালভাবে হয় না। সকালে উঠেও সেই ক্লান্তির প্রভাব থাকে, এটা দূর করতে ঠান্ডা জল ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ঠান্ডা জলের সংস্পর্শে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়, শরীর তরতাজা হয়ে যায়।
করণীয় : ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড অবধি চেষ্টা করুন ঠান্ডা জলে স্নান করতে। যদি সরাসরি ঠান্ডা জলে স্নান করতে সমস্যা হয় গরম, ঠান্ডা জল মিশিয়ে করুন। ক্লান্তি অনুভব করলে জলের ঝাপটাও কিন্তু তরতাজা ও মনকে ফুরফুরে করে তুলবে।

আরও পড়ুন-হিউম পাইপে হচ্ছে দুধিয়া সেতু, বাড়ি তৈরি করছে রাজ্য, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উত্তরবঙ্গের পুনর্গঠনের কাজ

শারীরিক অসুস্থতা
কিছু বিশেষ শারীরিক অসুস্থতা যেমন, থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যানিমিয়া, ডায়াবেটিস, বা হৃদরোগ ক্লান্তির কারণ হতে পারে, এমনকী নতুন মায়েদের ক্ষেত্রে পোস্টপার্টেম ডিপ্রেশন কিন্তু অনিদ্রা ও ক্লান্তির খুব বড় কারণ।
করণীয় : শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ ও ওষুধ পথ্য তো থাকবেই তার পাশাপাশি ব্রিদিং এক্সারসাইজ খুব কার্যকরী। ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম শরীরকে আরাম দেয়। আপনি যদি এটি অভ্যাস করতে চান তবে এটি প্রতিদিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করুন। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এর মাধ্যমে আপনি মানসিক চাপমুক্ত বোধ করতে পারেন। প্রতিদিন কয়েক মিনিট এই ব্যায়াম করলে আপনি অনেক কঠিন রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন।
ব্যায়ামের অভাব
পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম না করলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল বোধ করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করে এবং শরীরকে সজীব রাখে। মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে তোলে এমনকী রক্ত সঞ্চালনও বাড়ায়।
করণীয় : সকালে সার্বিকভাবে যোগা করার অভ্যাস করলে, সারাদিন ধরে শরীরের শক্তির মাত্রা উন্নত করা যায়। ওয়ার্কআউট বা ব্যায়াম মানেই যে সব সময় ভারী ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার তা কিন্তু নয় বা কঠিন এক্সারসাইজও নয়। বাইরে হাঁটতে যাওয়া, স্ট্রেচিং করা এগুলো খুবই কার্যকরী। বাইরে কেবল ১০ মিনিট চলাফেরা করা ও প্রকৃতি উপভোগ করলেও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ৫-১০ মিনিট কার্ডিয়ো করলেই কাজ করার এনার্জি ফিরে পাবেন।
সার্কাডিয়ান রিদম সূর্যের আলোর দ্বারা ভীষণ প্রভাবিত হয়। পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়াল জানিয়েছেন— ‘‘সূর্যের আলো আসলে মানুষের মস্তিষ্কে সিগন্যাল পাঠায় যাতে মেলাটোনিন নামক হরমোন (ঘুমে সাহায্যকারী হরমোন) কম নিঃসৃত হয়।’’
তাই সেক্ষেত্রে ঘুম থেকে উঠেই জানলার পর্দা সরিয়ে দিন যাতে সকাল ১০টার আগের সূর্যের আলো ঘরে ঢোকে। গ্রীষ্মকালে যদিও প্রখর রোদে দু’মিনিটও দাঁড়ানো যায় না। কিন্তু সূর্য ওঠার পর ভোরবেলা ৫-১০ মিনিট রোদে দাঁড়াতে পারেন। এতে স্ট্রেস লেভেল কমে এবং দেহে ভিটামিন ডি তৈরি করে। তা ছাড়া প্রকৃতির মাঝে থাকলে মনও ভাল থাকে। এগুলো আপনাকে কাজের এনার্জি জোগাবে। তাই অনেক সময় মর্নিংওয়াক খুব কার্যকর হয়।
কিছু কিছু এসেনশিয়াল অয়েল যেমন পিপারমেন্ট, সিট্রাস বা লেমন এসেন্সিয়াল অয়েল মুডকে তরতাজা করতে ভীষণ কার্যকরী, এমনকী মনঃসংযোগ বাড়াতেও ভীষণ সাহায্য করে।
করণীয় : নিজের ঘরে বা অফিসে আপনার ডেস্কের আশপাশে এই ধরনের এসেনশিয়াল তেল ছড়িয়ে দিতে পারেন, হাতের কবজিতেও লাগিয়ে নিতে পারেন। চট করে যদি নিজের মুড ভাল করতে হয় এই পদ্ধতি নেহাত মন্দ নয়। সাময়িক রিফ্রেশমেন্টই নয় এই এসেনশিয়াল তেলের ব্যবহার বেশ লম্বা সময় ধরে আপনার এনার্জি লেভেলকে ধরে রাখবে বলাই বাহুল্য।
এসবের বাইরেও ক্লান্তি, ঝিমুনি মনখারাপকে ছু-মন্তর করার জন্য বেশ কিছু সহজ উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব—
সৃজনশীল কোনও কাজে মন দিন। নিজের যা পছন্দ হয় করতে থাকুন। ছবি আঁকা বা গান শোনা বা রান্না করা— যেটা ইচ্ছে করবে করুন। নিজের পছন্দের কোনও খাবার খেয়ে নিন। বিশেষ করে চকোলেট ধরনের কিছু খাদ্য। অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খাবেন, এতে করে ভাললাগা আপনা-আপনি উৎপন্ন হবে। কারণ, পছন্দের কিছু করলে ও খেলে মস্তিষ্কে ‘সেরেটেনিন’ নামক ভাললাগার হরমোন উৎপন্ন হয়। আসলে শরীরের অনেক নিয়ন্ত্রকের মধ্যে অন্যতম হল হরমোন। কিছু নির্দিষ্ট হরমোন কম-বেশি হলে তার প্রভাব সরাসরি পড়ে মানসিক স্থিতিতে। ক্লান্তি অনুভব করা, আচমকা মনখারাপ, এসবের নেপথ্যে থাকে বিভিন্ন হরমোনের তারতম্য। হরমোনের মাত্রা সামান্য কম-বেশি হলেও তার প্রভাব সরাসরি পড়ে মানসিক স্থিতিতে। কোনও হরমোন যেমন দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়, তেমনই সুখানুভূতি ও আনন্দের সঙ্গেও জুড়ে থাকে বিশেষ বিশেষ হরমোন। তেমনই একটি ডোপামিন। এই ধরনের নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারিতা খুবই সূক্ষ্ম অথচ প্রভাবশালী।

আরও পড়ুন-অযোধ্যায় বিস্ফোরণে ধূলিসাৎ বাড়ি, নিহত ৫

এখন বেশ কিছু খাবারের কথা বলি যা আপনি খেলে আপনার ক্লান্তি তো দূর হবেই মনকে চাঙ্গা করতে বেশ কার্যকরী—
কলা
কলায় রয়েছে টাইরোসাইন এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড— যা ডোপামিনের ক্ষরণে সাহায্য করে। পাকা কলায় মন ভাল করার উপাদান বেশি মাত্রায় মজুত থাকে। এতে থাকা ভিটামিন বি৬ কো-এনজ়াইম হিসাবে কাজ করে, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং বিভিন্ন খনিজে ভরপুর কলা পেট তো ভরাবেই, তরতাজা ভাবও ফিরিয়ে আনবে। ফলের এই তালিকায় কিন্তু স্ট্রবেরিকেও রাখতে পারেন কারণ এই ফল মানবদেহে ডোপামিনের পাশাপাশি সেরোটোনিনের পরিমাণও বৃদ্ধি করে। এছাড়াও স্ট্রবেরির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস রয়েছে। তাই আমাদের শরীরে হ্যাপি হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিক ভাবেই স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে স্ট্রবেরি।
ইয়োগার্ট
ইয়োগার্ট বা জল-ঝরানো বেশি প্রোটিন-যুক্ত দই এমনিতেই অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এর সঙ্গে যদি মধু ও বেরি মিশিয়ে নেন, তা শরীরের জন্য আরও বেশি উপকারী হয়ে উঠবে। শরীরকে চাঙ্গাও করে তুলবে।
ডিম
ডিমেও রয়েছে টাইরোসাইন এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড। টাইরোসাইন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ডিমের মধ্যে যে কোলাইন রয়েছে তা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়ক। প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শুধু শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে না, মেজাজের উপরেও ডিমের বিভিন্ন উপাদানের ভূমিকা রয়েছে। তাই ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্টে ডিমের কোনও পদ আপনি রাখতেই পারেন। তাছাড়া ব্রেকফাস্টে অ্যাভোকাডোকে তালিকাভুক্ত করতে পারেন কারণ এর মধ্যে রয়েছে আবারো সেই টাইরোসিন নামের একটি উপকরণ। এই উপকরণ মানবদেহে ডোপামিনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর ফলে নিঃসৃত হয় হ্যাপি হরমোন।
এরপর এই তালিকায় আছে কাঠবাদাম যা ডোপামিন নিঃসরণে সাহায্য করে। এতে রয়েছে টাইরোসাইন, ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেশিয়াম। স্নায়ুতন্ত্র ভাল রাখতে, তার কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে প্রতিটি উপাদানই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সারারাত দু’ থেকে তিনটে আমন্ড ভিজিয়ে রেখে সকালে তা খেলেই বেশ চাঙ্গা অনুভব করবেন। তবে এই তালিকায় যে খাদ্যদ্রব্যটির নাম না নিলেই নয় তা হল ডার্ক চকোলেট। এর মধ্যে থাকে ফিনাইলেথাইলামিন নামে এমন এক যৌগ, যা স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, ডোপামিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। এতে থাকা ক্যাফিন এবং থিওব্রোমাইনও মেজাজের উপর প্রভাব ফেলে। সেই কারণে অনেক সময় একটু ডার্ক চকোলেট খেলে মন বেশ ফুরফুরে লাগে।
তাছাড়া শরীরে চনমনে ভাব ফিরে পেতে ভিটামিন বি, সি, এবং ই-যুক্ত খাবারের কোনও বিকল্প নেই আর উপাদানগুলি ভরপুর মাত্রায় রয়েছে অঙ্কুরিত ছোলা, বাদাম, বীজ বা দানাশস্যে। আর স্প্রাউটের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন এবং প্রোটিন রয়েছে।
এছাড়া চট করে শরীরের ক্লান্তি দূর করতে এক মুঠো ড্রাই ফ্রুট দারুণ কাজে দেয়, এনার্জি বুস্টিংয়ের ক্ষেত্রে এটি অব্যর্থ্য। খিদে পেলে ভাজাভুজি না খেয়ে তার বদলে কাঠবাদাম, কিশমিশ, আখরোট, পেস্তা, খেজুরের মতো ড্রাই ফ্রুট খেতে পারেন। ১০০ গ্রাম ড্রাই ফ্রুটে ৩৫৯ ক্যালোরি থাকে। শরীরে আয়রনের চাহিদা মেটাতেও দারুণ উপকারী ড্রাই ফ্রুটস।
এই উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলো মেনে চললে বা খাদ্যতালিকায় উল্লিখিত খাবারগুলোকে রাখতে পারলে কিন্তু অহেতুক চা বা কফির শরণাপন্ন না হয়েও ক্লান্তি দূর করা যাবে খুব সহজেই।

Latest article