ডি’ককের ব্যাটে প্রথম জয় নাইটদের

রাজস্থান রয়্যালস ১৫১/৯ (২০ ওভার) কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৫৩/২ (১৭.৩ ওভার)

Must read

গুয়াহাটি : কেউ যদি ভাবে বর্ষাপাড়ায় খুব বৃষ্টি হয়, তাহলে ভুল। নামের মধ্যে রোমান্টিসিজম ছাড়া গুয়াহাটি স্টেডিয়ামে কিচ্ছু নেই। তবু যেটা আছে, সেটা একগুচ্ছ ধাঁধা। আপনি ভাবলেন হালকা সবুজ উইকেটে বল সিম করবে। কিন্তু করল না। বল এখানে ঘুরবে। আর এত স্লো আসবে যে গালে হাত দিয়ে বসে থাকবেন। নাইটরা (KKR) অবশ্য এতসব প্রতিকূলতা টপকে বুধবার রাজস্থান রয়্যালসকে ৮ উইকেটে হারাল। সেটাও সুনীল নারিনকে ছাড়া। কুইন্টন ডি’কক ৬১ বলে ৯৭ নট আউট থেকে আইপিএল ১৮-তে প্রথম জয় এনে দিলেন দলকে।
১০ ওভারে রাজস্থান ৭৬। কেকেআর ৭১। এই এক তথ্যেই ম্যাচের ছবি মোটামুটি পরিষ্কার। সঞ্জুদের ১৫১ রানে থামিয়েও কেকেআরের (KKR) রান তাড়া করাটা শুরুতে সহজ হয়নি। বর্ষাপাড়ার উইকেট এমন যেখানে বল কিছুতেই ব্যাটে আসছে না। ব্যাটারদেরই আগুপিছু করে অ্যাডজাস্ট করতে হচ্ছে। নারিনের বদলি মইন আলি বল হাতে নারিন হয়ে উঠলেও ওপেন করতে এসে আউট হয়ে গেলেন ৫ রানে। রাহানে খুব চেষ্টা করলেন ডিককের (৭৭) পাশে থাকতে। কিন্তু তাঁর ১৫ বলে ১৮ রানের ইনিংস থামিয়ে দেন ওয়েনিন্দু হাসরাঙ্গা।
রাহানে যখন আউট হলেন, কেকেআর ৭০/২। ম্যাচটা তখনও সমান-সমান। কিন্তু এরপর সেটা নাইটদের দিকে চলে এল ডি’ককের জন্য। দুনিয়া জুড়ে টি-২০ লিগ খেলবেন বলে জাতীয় দল থেকে অকালে সরে গিয়েছেন। সল্টকে ছেড়ে দিয়ে নাইটরা যে ভুল করেছে, সেটা কিন্তু ঢেকে যাচ্ছে ডি’ককের ব্যাটে। রাহানে আউট হওয়ায় চাপ ছিল। যা আফ্রিকান কিপার-ব্যাটার উড়িয়ে দিলেন। পাশে রঘুবংশীরও (২২ নট আউট) কিছু ভূমিকা থাকল।

আরও পড়ুন-সুপ্রিম রায় নিয়ে প্রশ্ন কোন অধিকারে? ধনকড়কে তীব্র আক্রমণ কল্যাণের

অদ্ভুত এক তথ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল বুধবারের ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে পাঁচ ম্যাচে ১১৯টি ছক্কা হয়েছে। বেশিরভাগ ম্যাচে রান গিয়েছে দুশোর ওপারে। পাটা উইকেটের বদান্যতা নাকি বোলিং ব্যর্থতা, চর্চা হতে পরে। কিন্তু টসে জিতে অজিঙ্ক রাহানে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে রাজস্থান রয়্যালসকে ব্যাট করতে ডেকে নিলেন। তিনি বললেন, এখানে এটাই প্রথম ম্যাচ। উইকেট কেমন জানি না। একটু দেখে নেওয়া ভাল। পরে দেখা গেল স্টিকি উইকেট। রাজস্থান ২০ ওভারে ১৫১/৯-এর বেশি তুলতে পারেনি।

নাইটদের যে বড়সড় পরিবর্তন আসছে সেটা টসের আগে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে প্লেয়াররা যখন ওয়ার্ম আপ করছেন, তখন দেখা যায়নি সুনিল নারিনকে। ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট হল মইন আলিকে কেকেআর ক্যাপ দেওয়ার পর। প্রশ্নটা ছিল নারিন না রাসেল, কে বাইরে থাকছেন? নারিন গতবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছিলেন। সঞ্জু-যশস্বীদের বিরুদ্ধে নাইটদের সেরা তাস। রাহানে পরে জানালেন নারিনের শরীর খারাপ। মইন খেললেন। ২৩ রানে ২ উইকেট। বোঝালেন কেন তিনি এখনও বিপজ্জনক।
ঈশান কিশান আর ট্রাভিস হেড যদি এবার শুরুর আতঙ্ক হন, তাহলে বোলারদের আতঙ্ক নম্বর দুই সঞ্জু ও যশস্বী। ডান-বাম কম্বিনেশন মুশকিলে ফেলছে, এটা সানরাইজার্স ম্যাচে প্রমাণিত। এখানেও চার ওভারে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন এই দু’জন। তবে বৈভব এগোতে দেননি সঞ্জুকে(১৩)। এগিয়ে আসছেন দেখে লেগ স্ট্যাম্প থেকে বল ভিতরে এনে স্ট্যাম্প নড়িয়ে দেন। তিনে নেমে স্থানীয় ছেলে রিয়ান বড় শট নিতে শুরু করেন। কিন্তু বরুণকে উইকেট দিয়ে যেতে হল (২৫) লম্বা শট নিতে গিয়ে।

রাজস্থান ইনিংস স্পিন আসতেই চাপে পড়ে যায়। রিয়ানের পর যশস্বীও (২৯) স্পিনার শিকার। মইনকে স্টেপ আউট করে বাইরে ফেলতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়লেন হর্ষিতের হাতে। ধুন্ধুমার শুরু করতে গিয়ে অতঃপর ১০ ওভারে রাজস্থানের রান ছিল ৭৬/৪। এরমধ্যে রিয়ানরা পাঁচে ওয়েনিন্দু হাসরাঙ্গাকে (৪) নামিয়েছিল। এত উপরে এর আগে কখনও খেলেননি সিংহলি অলরাউন্ডার। রাহানে পরিস্থিতি দেখে বরুণ-মইনের উপরই আস্থা রাখলেন। তাতে ফল মিলল মইন নীতীশকে (৮) বোল্ড করে দেওয়ায়।

বরুণ হাওয়ায় বল রাখলেন। আর মইন উইকেট থেকে স্পিন আদায় করলেন। এই উইকেটে প্রথম থেকেই একটা গ্রিপ ছিল। যেটা নীতীশের বেলায় অনেকটা টার্ন করল। কিন্তু প্রাক্তন নাইট শরীর থেকে এত দূরে খেলতে গেলেন কেন? একসময় কেকেআর স্পিনারদের এমন দাপট ছিল যে ৭ ওভারে ৩৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি রাজস্থান। প্রশ্ন হল, হেটমেয়ারকে সাতে নামানো হল কেন। শেষদিকে জুরেল ৩৩ রান করে গেলেন বলে রান এতটা গেল। হর্ষিত ও বৈভব দুটি করে উইকেট নেন।

Latest article