বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিশকে খুনের চেষ্টা, হিংসা ছড়ানো, ‘ওয়ান্টেড’ চার বিজেপি কর্মী

এদিন শুধু কলকাতাই নয়, তমলুকেও পুলিশকে হেনস্থা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।

Must read

মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযানে (Nabanna Abhijan) লালবাজারের সেন্ট্রাল ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (AC) দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে মারধরের ঘটনা চূড়ান্ত নিন্দনীয় একটি বিষয় হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যেই। শুধু ভিডিও ফুটেজ নয় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) তরফেও জানা গিয়েছে তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারা হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর হাত ভেঙে গিয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অতিরিক্ত ওসি সরফরাজ আহমেদ সহ আরো অনেকে। মিছিলের নামে বিজেপি দুষ্কৃতীদের বর্বরতা ক্যামেরাবন্দি হওয়ার দরুন এই পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে চারজন| তাদের বিরুদ্ধে বড়বাজার থানায় মামলা রুজু হয়েছে।

এছাড়াও ভিডিও ফুটেজের সাহায্যে বেশ কিছু বিজেপি কর্মীকে সনাক্ত করে কলকাতা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ইতিমধ্যেই ‘ওয়ান্টেড’ হিসেবে প্রচার করে দিয়েছে। অন্যান্য চারজন দুষ্কৃতী যারা এই বর্বরতার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে তাদের ছবিও ক্যামেরার সাহায্যে জনসমক্ষে ভেসে উঠেছে, যাদের সন্ধান এবং পরিচিতি ওদের গ্রেফতারি এবং পুলিশি পদক্ষেপে সাহায্য করবে বলেই জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল, অপরাধ দমন শাখা। যেকোন অবস্থায় এদের খুঁজে বের করে চরমতম শাস্তি দেওয়াই এই মুহূর্তে ক্রাইম ব্রাঞ্চের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন-বিশ্বকাপে নতুন জার্সিতে রোহিতরা

পুলিশ সূত্রে খবর এদিনের এই ঘটনার জেরে, পাঁচটি মামলা হয়েছে একাধিক থানায়। একটি মামলা হয়েছে জোড়াসাঁকোতে। বড়বাজার থানায় এমজি রোডে গাড়ি জ্বালানো ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট জন্য একটি মামলা করা হয়েছে।

অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ভাঙার জন্য মামলা করা হয়েছে বড়বাজার থানায়।হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি মামলা হয়েছে ও বৌবাজার থানায় একটি মামলা হয়েছে কারণ ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে লালবাজারে কাছে বিক্ষোভ করছিল বিজেপি কর্মীরা। লালবাজার এর সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় ২৫ জন গ্রেফতার হয়েছে। নর্থ পোর্ট থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে বোর্ড মামলার রায়, আজ সৌরভের ভাগ্য নির্ধারণ

বিজেপির নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এদিনের এই খণ্ডযুদ্ধের মাঝে আহত হয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মী। মঙ্গলবারের অভিযান শেষে লালবাজারের অ্যান্টি রাউডি স্কোয়াড সক্রিয় হয়ে ওঠে। কলকাতা শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি করা হয় এবং বেলেঘাটা, শিয়ালদা, ইস্ট্রার্ন মেট্রপলিটন বাইপাস থেকে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে নবান্ন অভিযানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই এই গ্রেফতারি হয়েছে । তাঁদের বিরুদ্ধে, ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, হিংসা ছড়ানোর মতো আইনে মামলা ইতিমধ্যেই রুজু হয়েছে।

আরও পড়ুন-বালুরঘাটে সচেতনতা

প্রসঙ্গত এদিন শুধু কলকাতাই নয়, তমলুকেও পুলিশকে হেনস্থা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। নবান্ন অভিযান ঘিরে কলকাতা এবং হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল কিন্তু মিছিল শুরুর ১১ মিনিটের মধ্যেই একপ্রকার নিঃশব্দেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রাহুল সিনহা পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়ে। সন্ত্রাস ছড়ানো বিজেপি কর্মীদের হাতে একাধিক পুলিশকর্মী আহত হন।। জলকামান চলেছে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফেটেছে। ইট-বৃষ্টি চলেছে পুলিশের উপর। বিকেলে লালবাজারে পুলিশের (Kolkata Police) তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, মোট ৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অশান্তি সামালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ২৭ জন পুলিশকর্মী।

Latest article