শহর জুড়ে দুর্গাপুজোর অনেক আগেই আগমনীর সুর। UNESCO-কে ধন্যবাদ জানাতে শোভাযাত্রা আজ কলকাতার বুকে সর্ব ধর্ম সমন্বয় । জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে রেড রোডের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)উদ্যোগে পুজোর আজ শুভ সূচনা। রাস্তা জুড়ে রঙের বাহার। রঙিন ছাতার সঙ্গে সুসজ্জিত ঢাকির দল,একদিকে ধামসা মাদল আর লোকগান সঙ্গে ছৌ নাচ। ঢাকের বাদ্যি, উলুধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাস। প্রকৃতিও যেন আজ শারদীয়ার আগমনের শুভ সূচনায় তাল মিলিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর (CM)আন্তরিক উদ্যোগে।
আরও পড়ুন-সময়ের অপেক্ষা, কলকাতার রাজপথে দুর্গাপুজোর আগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
দুপুর ২টো নাগাদ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কাছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয়ে কলুটোলা, বউবাজার, চাঁদনি চক, ডোরিনা ক্রসিং, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে পদযাত্রা পৌঁছে যায় রেড রোডে। মিছিলের পুরোভাগে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই উৎসাহ মানুষের ভিড়। কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটি এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পদযাত্রায় ছিলেন টেলি এবং টলি জগতের তারকারা। শান্তনু সেন,রত্না চট্টোপাধ্যায়,রাজ চক্রবর্তী,ভরত কল, সুভদ্রা চক্রবর্তী, শ্রীতমা ভট্টাচার্য, রিজওয়ান শেখ, ভিভান ঘোষ, দিগন্ত বাগচি সহ অন্যান্যরা। রেড রোডে উপস্থিত এক ঝাঁক তারকা। একদিকে তালপাতার পাখা অন্যদিকে রঙিন মুখোশ, পতাকা , ফানুস, আবির । আজ চিংড়ি ইলিশের সংস্কৃতি মিলেমিশে একাকার। UNESCO-কে ধন্যবাদ জানাতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মোহনবাগান আর ইস্টবেঙ্গল পতাকা এক হল। সঙ্গে মহামেডান ক্লাব এবং কলকাতার আরও অন্যান্য ক্লাবও সামিল এই পদযাত্রায়। আজ পুরো রাস্তা জুড়ে সাধারণ মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। যাত্রাপথে মহম্মদ আলি পার্কের অস্থায়ী মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-পুলিশ দিবস উপলক্ষে সকল পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তা
আজ পুলিশ ডে, তাই পুলিশ মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা জ্ঞ্যাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের পদযাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাঁটেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং রাজ্য পুলিশের ডি জি মনোজ মালব্য। রেড রোডে মূল মঞ্চে উপস্থিত হন UNESCO-এর প্রতিনিধিরা।
আজ রেড রোডে তাঁদের সম্বর্ধনা জানান হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর ঐতিহ্যের মিশেলে রেড রোড জুড়ে মহা পুজোর শুভারম্ভ আজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মূল মঞ্চে পৌঁছে যাওয়ার পরেও শোভাযাত্রার শেষ প্রান্ত কার্যত ঠাওর করা যাচ্ছিল না। দুর্গা পুজো মানেই সব ধর্মের সমন্বয়। আর সব ভেদাভেদ ভুলে রাজপথে যেন সেই ছবিই ফুটে উঠল। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পোশাকে সেজেছেন অনেকেই ,হাতে টানা কলকাতার ঐতিহ্যবাহী রিকশাতে বিভিন্ন মহাপুরুষদের আদলে সেজে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে নানা ক্লাব।
আরও পড়ুন-ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
গিরিশ পার্কে জড়ো হয় ফোরাম ফর দুর্গোত্সবের অধীন পুজোগুলির উদ্যোক্তারা। উত্তর কলকাতার পুজোর উদ্যোক্তারা জড়ো হয়েছিলেন বিবেকানন্দ রোডে। পোস্তা উড়ালপুলের দিকে জড়ো হবেন দক্ষিণ কলকাতার পুজো কমিটিগুলির প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে, সল্টলেক ও হাওড়া থেকে আসা পুজো কমিটিগুলির উদ্যোক্তারা জড়ো হন শ্যামবাজারে। গিরিশ পার্ক থেকে সম্মিলিত মিছিল এসে মিলে যায় জোড়াসাঁকোয়। সেখান থেকে মিছিলে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী। বাংলা আর বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে গর্বের সঙ্গে তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আজ ইউনেস্কোকে স্বীকৃতি জানিয়ে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাতে কার্যত মুগ্ধ বাংলা।