ছোটপর্দায় জুটি বেঁধে কামব্যাক করছেন অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী পায়েল দে। তাঁদের দেখা যাবে ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’ ধারাবাহিকে। মুক্তি পেয়েছে ট্রেলার। হয়েছে প্রশংসিত। তুলে ধরা হবে উচ্চবিত্ত বাঙালি পরিবারের এক গৃহবধূর সাদামাটা জীবনযাপনের ছবি।
কাহিনির মূল চরিত্র আলো অর্থাৎ আলোলিকা সিংহ রায়। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলছেন পায়েল দে। তাঁর বিপরীতে রুদ্র সিংহ রায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে তথাগত মুখোপাধ্যায়কে। ধারাবাহিকের কাহিনি অনুযায়ী, আলো শহরের নামী সংবাদপত্র ‘সূর্যোদয়’-এর মালিক উদয়ন সিংহ রায়ের পুত্রবধূ। আলোর স্বামী রুদ্র ব্যাঙ্কের উঁচু পদে কর্মরত। সংসারের খুঁটিনাটি, প্রতিটি সদস্যের সুবিধা-অসুবিধা আলোর নখদর্পণে। কিন্তু তার প্রতি সংসারের কারও কোনও নজরই নেই। না স্বামীর, না শ্বশুর-শাশুড়ির। ১৫ বছরের দীর্ঘ সংসারজীবনে প্রাপ্য মর্যাদাটুকুও সে পায়নি। আলোর মনের কোণের অন্ধকারের খোঁজখবর কেউ রাখে না। এত বড় সংসারে সে যেন বড্ড বেমানান। অবহেলিত। তাই সে মনে করে, এবার ঘুরে দাঁড়াবার সময় এসেছে। সময় এসেছে নিজের প্রাপ্য মর্যাদা ফিরে পাওয়ার।
আরও পড়ুন-আমরা করব জয়
প্রশ্ন হল, মাঝবয়সে এসে গৃহবধূ আলো কীভাবে নিজের স্বপ্নপূরণ করবে? সে রান্না করতে ভালবাসে। তৈরি করতে পারে নানারকম পদ। সেটা হাতিয়ার করেই এগোনোর কথা ভাবে। যোগ দেয় খাদ্য মেলার মতো একটি ইভেন্টে। সাজিয়ে বসে নিজের হাতে তৈরি বিভিন্ন রকমের পিঠে। গোকুল পিঠে, পাটিসাপটা, দুধপুলি। সেইসব পিঠে মুখে দিয়ে ধন্য ধন্য করে সবাই। ইভেন্টে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তার শ্বশুরমশাই উদয়ন সিংহ রায়। পিঠে মুখে দিয়ে তিনিও তৃপ্ত হন। কিন্তু যখন জানতে পারেন এই পিঠে তাঁর পুত্রবধূর বানানো, তখন মনের মধ্যে অসন্তোষ জাগে। তিনি দূর থেকে আলোকে দেখতে পেয়ে আলোর বানানো সমস্ত পিঠে কিনে নেন। আলো বাড়িতে এসে দেখে তার হাতের বানানো পিঠে বাড়ির মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। প্রশংসা তো দূরঅস্ত্— উল্টে আলোকে প্রশ্ন করা হয়, বিদ্ধ করা হয় সমালোচনায়। জানতে চাওয়া হয়, এই বয়সে পৌঁছে এইভাবে সে বাড়ির সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে কী করে? আলো পাশে পায় না তার স্বামীকেও। অপমানিত আলো মনে মনে ঠিক করে, সমস্ত বাধার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। নিজের জন্য কিছু করে দেখাবে। অংশটি দেখানো হয়েছে ট্রেলারে। মুগ্ধ দর্শকরা। বোঝাই যাচ্ছে, ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’ বাংলা ধারাবাহিকে তুলে ধরা হবে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের দ্বন্দ্ব। ট্যাগলাইন দেওয়া হয়েছে ‘শুরুর কোন বয়স হয় না, আর স্বপ্নের সীমানা হয় না।’
সংবাদমাধ্যমে অভিনেত্রী পায়েল দে জানিয়েছেন, আমার চরিত্রের নাম আলো। বাড়ির বড় বউ। পরিবারের সকলকে নিয়ে একসঙ্গে মিলিয়ে-মিশিয়ে রাখা, পরিবারের সুখ শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করে। পরিবারের একেকজন এক-এক রকমের। তাদের সকলকে এক সুতোয় বেঁধে রাখার চেষ্টা করে আলো। কিন্তু কোথাও গিয়ে নিজের সত্তাটা হারিয়ে ফেলতে থাকে সে। এমনই এক সময়ে আলো নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে যে, এই বাড়ির বড়বউ হয়ে থাকাটাই কি তার একমাত্র পরিচয়? শুরু থেকেই দেখা যায় সংসারে আলোকে তাচ্ছিল্য করা হয়। কারণ তার হাইক্লাস এডুকেশন নেই, ইংরেজিটাও ভাল জানে না। এই সবকিছুর মোকাবিলা করে সে কি নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে পারবে? আলোর সফরের এই গল্পই বলবে এই ধারাবাহিক।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
সংবাদমাধ্যমকে অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি এবং পায়েল, প্রায় তিন বছর পর আবার একসঙ্গে মুখ্য জুটি হিসেবে কাজ করছি। বাংলা ধারাবাহিকে। এর আগে ২০২১ সালে ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে জুটি বেঁধে কাজ করেছিলাম। আমাদের মধ্যে একটা খুব ভাল বোঝাপড়া রয়েছে। তাছাড়া পায়েল আমার খুব ভাল বন্ধু। একে অপরকে বুঝি। ফলে আবার একসঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার কাছে খুব আনন্দের। ধারাবাহিকে আমার চরিত্রটা ব্যাঙ্কের উঁচু পোস্টে কর্মরত। পারিবারিক ব্যবসা থাকলেও তাতে যোগ দেয় না। দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাবা বা ভাই, কারও সঙ্গেই বিশেষ গভীর সম্পর্ক নয়। স্ত্রীর সঙ্গেও বিশেষ বনিবনা নেই। সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক নিজের মেয়ের সঙ্গে। আমার অভিনীত চরিত্রটা এমনিতে ভাল মানুষ, তবে খানিক রগচটা। আশা করি দর্শকরা দেখলেই বুঝতে পারবেন।’
৩০ সেপ্টেম্বর থেকে, প্রতিদিন রাত ৮টায়, সান বাংলা টিভি চ্যানেলে দেখা যাবে ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’। এক গৃহবধূর স্বপ্নপূরণের লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চাইলে চোখ রাখবেন ছোট পর্দায়।