আগরতলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ৯ মাস পর গেরুয়া শিবির ছেড়ে ফের ঘাসফুলে পতাকা তুলে নিলেন নিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীবের ঘরে ফেরা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা জারি আছে । রাজীব তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতেই খুব স্বাভাবিকভাবেই তাকে কটাক্ষের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন-রাজীব নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিলেন কুণাল ঘোষ
সর্বভারতীয় বিজেপি কমিটিতে জায়গা পেয়েও রাজীব দল ছেড়েছেন। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজীবের তৃণমূলও ফেরার পর কটাক্ষ করে বলেন, ”এটা তো জানাই ছিল যে রাজীব বিজেপিতে থাকবেন না। শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল। নো এন্ট্রি বোর্ড উঠে যেতেই এন্ট্রি নিয়ে নিয়েছেন।”
এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল কিন্তু হঠাৎ করে দিলীপ ঘোষের একটি টুইটকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজীব দল ছাড়ার পর দিলীপ ঘোষ টুইটে লেখেন, ”অনেক দালাল নির্বাচনের আগে আমাদের দলে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিছুজন গিয়েছেন। কিছু এখন রয়েছেন। তাঁরা উৎপাত করছেন। সবাইকে বাদ দেব। এরা চায় না বিজেপি শক্তিশালী হোক।”
এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, দিলীপ ঘোষ “দালাল” বলে এখনও বিজেপিতে থাকা কাদের দিকে ইঙ্গিত করলেন? কারণ, একুশের নির্বাচনের আগে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফলে দিলীপ ঘোষ শুভেন্দুকে নিশানা করছেন না তো? রাজ্য রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা, শুভেন্দু-দিলীপের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়!
শুভেন্দু-দিলীপ সম্পর্কের রসায়নেকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি দিলীপ ঘোষের পোস্টটি তুলে ধরে লেখেন, ”আসলে দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে এই লেখাটি লিখেছেন। শুভেন্দুর জন্যই আর কেউ বিজেপিতে থাকতে পারছেন না। দিলীপবাবুরাও শুভেন্দুকে সরাতে পারছেন না। তাই টুইটে মনের কথা লিখে দিয়েছেন।”
আরও পড়ুন-ত্রিপুরার মন্ত্রী ও বিজেপি নেতাদের কুৎসার কড়া জবাব দিয়ে পাল্টা চাপ বাড়িয়ে দিলেন কুণাল ঘোষ
অন্যদিকে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলে ফেরায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার লাইন “কেউ কথা রাখে না…” উদ্ধৃতি করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “যারা নির্বাচনের আগে দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তারা ফের চলে আসাতে খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেকের ক্ষোভ অভিমান হতে পারে। কারণ, দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের ছাড়াই তৃণমূল নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চয়ই কিছু বুঝেছেন, কোনও বড় পরিকল্পনা নিয়েই তাদেরকে দলে ফেরাচ্ছেন। আর কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় যে জায়গার সাংসদ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই জায়গা থেকেই বিধায়ক ছিলেন। ভোটের আগে দল ছড়ায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিমান হয়েছে। এগুলি মিটে যাবে।”