সোমনাথ বিশ্বাস আগরতলা: আজ রবিবার ত্রিপুরা আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর অভিষেক আগরতলায় পা রাখার আগেই শুরু পুলিশি তাণ্ডব। নানা ছুতোয় তৃণমূলের সভা বানচাল করতে নানা অপকৌশল নিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। প্রবল উত্তেজনা আগরতলায়। চক্রান্তের শুরুটা হয় শুক্রবার মধ্যরাতে। হঠাৎ করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে রাত ১২টা নাগাদ নোটিশ পাঠায় আগরতলা পশ্চিম থানার পুলিশ। এবং বেনজিরভাবে একদিনের মধ্যে তিনি থানায় না এলে গ্রেফতারও করা হতে পারে বলে জানানো হয়। আসলে অভিষেক ত্রিপুরা আসার আগে মানসিকভাবে তৃণমূলকে পর্যুদস্ত করার চেষ্টায় আদাজল খেয়ে নেমেছে বিপ্লব দেব প্রশাসন। অভিষেককে আটকাতে কোনও চেষ্টাই বাদ রাখছে না তারা। নির্বোধের মতো নানা কাণ্ডকারখানা করছে।
আরও পড়ুন-খরদহ থেকে গোসাবা, অপচেষ্টা রুখে শান্তিতে সমস্ত কেন্দ্রের ভোট
যদিও পুলিশ-প্রশাসনের অপকৌশল সত্ত্বেও দমিয়ে রাখা যায়নি পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। তিনি শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ আগরতলা পশ্চিম থানায় যান। সেখানে পুলিশ আধিকারিকদের সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেন। প্রায় আধঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর থানা থেকে বেরিয়ে আসেন কুণাল ঘোষ। এবং তার আগে এফআইআর কপি দেখার আবেদন জানান। পুলিশের পক্ষ থেকে এফআইআর কপি দেখাতে অস্বীকার করা হলে থানার মধ্যেই মাটিতে বসে পড়েন কুণাল। এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এফআইআর কপি না দেখে তিনি থানা ছাড়বেন না। এরপর কিছুটা চাপে পরেই পুলিশ কুণাল ঘোষের আইনজীবী এফআইআর কপি দেখায় পুলিশ। থানা ছাড়েন কুণাল।
এরপর এই গোটা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা লিখলেন কুণাল ঘোষ—
‘নোটিশে সাড়া দিয়ে আগরতলা পশ্চিম থানায় গিয়েছিলাম।
কমপ্লাই করেছি।
ওঁদের অফিসাররা যা প্রশ্ন করেছেন, উত্তর দিয়েছি।
আমি যা যা বলেছি, অফিসাররা সামনাসামনি মানতে বাধ্য হয়েছেন। তবে পরে খাতায় কলমে কী করবেন, সে তো বিজেপির নির্দেশের বিষয়!!
আমি এখানে কথোপকথন লিখতে চাই না।
শুধু বলি, আমার মূল বক্তব্য : রাজনীতি থেকে ধর্ম দূরে রাখুন। আমিও হিন্দু। ঈশ্বর বিশ্বাস করি। রামকে নমস্কার করি। কিন্তু রামের নামে ভোটব্যবসা সমর্থন করি না। যদি বিজেপি রাজনীতিতে রামের নাম দিয়ে রামরাজ্যের কথা বলে, তাহলে আমিও বলতেই পারি মা সীতাকে কেন পাতালপ্রবেশ করতে হয়েছিল? রাজনীতি থেকে ধর্ম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিন। অথবা বলে দিন রামায়ণের কোন অংশ বলা যাবে আর কোনটা বলা যাবে না। আমাকে গ্রেফতার করতে পারেন। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে বিজেপির ধর্ম ব্যবহারের প্রতিবাদ করবই। আমি দায়িত্বশীল নাগরিক। সম্প্রীতি, সংহতি, শান্তি এবং সুস্থ রাজনীতির পক্ষে।
আরও পড়ুন-নতুন ভোরের বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এইসব কথোপকথনের পর (বিস্তারিত লিখলাম না) পুলিশ বলে আমি যেতে পারি।
তখন আমি এফআইআরের কপি দেখতে চাই।
পুলিশ রাজি ছিল না। এড়াতে থাকে।
আমি বলি আমাকে বা আইনজীবীকে এফআইআর না দেখালে যাব না।
অপেক্ষা করতে মাটিতেই বসে থাকি। সঙ্গে তৃণমূলের সহকর্মীরা ছিল।
এরপর পুলিশ আইনজীবী শ্রীমান অগ্নিশ বসুকে এফআইআর দেখায়।
আমি তারপর চলে আসি।
থানায় সঙ্গে ছিল জয়া, সুদীপ, মৃত্যুঞ্জয়, শক্তি, সাদাব, রেহান, রাজা, সোলাঙ্কি, তানিয়ারা।
আপাতত চলে এসেছি কাল ক্যাপ্টেনের সভার প্রস্তুতিতে।
মানুষের সাড়া দারুণ।
পুলিশ উৎপাত করছে।
অনুমতি দেওয়ার পরেও মঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ করা হচ্ছে।
সভায় বিঘ্ন ঘটানোর সবরকম চেষ্টা করছে।’