প্রতিবেদন : আবার লখিমপুর। উত্তরপ্রদেশের এই এলাকা ফের সংবাদমাধ্যমের নজরে। এবারও লখিমপুরের ঘটনার সঙ্গে নাম জড়াল বিজেপির। রবিবার রাতে বিজেপি বিধায়ক যোগেশ বর্মার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল রবি বর্মা এবং বিক্রম বর্মা নামে দুই যুবকের। মৃতেরা সম্পর্কে দুই ভাই। তাঁরা খেরি থানার অন্তর্গত কীরতপুর গ্রামের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই বিজেপি বিধায়কের গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিধায়কের গাড়ি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-খারিজ মন্ত্রীপুত্রের জামিন, সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা বিজেপির
গত অক্টোবরে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্রর গাড়ির ধাক্কায় লখিমপুরে চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল। এদিনের ঘটনাতেও বিজেপি বিধায়কের নাম জড়ানোয় রাজনৈতিক মহলে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন মৃত দুই ভাই লখিমপুরের ঘটনা সম্পর্কে হয়তো কিছু জানতেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা যাতে মুখ খুলতে না পারেন সেজন্য তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের গাড়ির ধাক্কায় যেভাবে মানুষের প্রাণ যাচ্ছে তাতেও অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের গাড়িতেই কেন বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের কাছে আইএএস আইপিএস চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে
লখিমপুর খেরির এসপি সঞ্জীব সুমন জানিয়েছেন, রবিবার রাতে খেরি-বাহরাইচ হাইওয়েতে পাঙ্কিপুর পেট্রোল পাম্পের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিধায়কের স্টিকার লাগানো স্করপিও গাড়ির ধাক্কায় দুই বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। গাড়িটি বিজেপি বিধায়ক যোগেশ বর্মার স্ত্রী নীলম বর্মার নামে রেজিস্ট্রি করা। তবে দুর্ঘটনার সময় ওই গাড়িতে বিধায়ক বা তাঁর স্ত্রী ছিলেন না। রবিবার রাতে দুই ভাই রবি ও বিক্রম বাইকে করে রামপুরে এক বিয়েবাড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেসময় বিধায়কের স্করপিও গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুই ভাই।
আরও পড়ুন-মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কমিটি তৈরি হল
উল্লেখ্য, চার কৃষকের মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে লখিমপুর। ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেসময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আশিসের ছেলের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। সেই ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল আশিস। যদিও তার বিরুদ্ধে বিজেপি এখনও কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর আশিসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু চার মাস পর ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে জামিন দেয় আশিসকে। যদিও এদিনই সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে আশিসের জামিন খারিজ করে দিয়েছে। আশিসকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এবার সেই লখিমপুরেই এক বিজেপি বিধায়কের গাড়ির ধাক্কায় দুই ভাইয়ের মৃত্যু নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।