শেষ রক্ষা হল না। প্রয়াত সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। ১১ জানুয়ারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। করোনা নেগেটিভ হয়ে বাড়ি ফিরলেও ফের ভেন্টিলেশনে চিকিৎসাধীন হন তিনি। প্রায় এক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর এ দিন সকাল ৮.১২ মিনিটে প্রয়াত হন লতা মঙ্গেশকর৷
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌরে জন্মগ্রহণ করেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা (Lata Mangeshkar)। ১৯৪১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে সঙ্গীত জগতের পথ চলা শুরু লতার। ৩৬ টি ভাষায় গান গেয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ আট দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। হিন্দি, মারাঠি, বাংলা সহ ছত্রিশটিরও বেশি ভারতীয় ও বিদেশি ভাষায় তাঁর গাওয়া অগণিত ক্লাসিকাল,গজল, ভজন, আধুনিক ও সিনেমার গান আজও সমান জনপ্রিয়। বাংলার সঙ্গীতজগতের সঙ্গেও তাঁর গভীর যোগ ছিল। সঙ্গীত জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১ সালে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারত রত্ন দিয়ে ভূষিত হন লতা মঙ্গেশকর৷ এর পাশাপাশি ১৯৬৯ সালে পদ্ম ভূষণ, ১৯৯৯ সালে পদ্ম বিভূষণে সম্মান পান সুর সম্রাজ্ঞী৷ এছাড়াও দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, লিজিয়ন অফ অনার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড সহ অজস্র পুরস্কার ও সম্মানে তিনি ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান লতা। নব্বই দশকে মোজার্ট অব মাদ্রাজ খ্যাত এ আর রাহমান ও প্রয়াত গজল সম্রাট জগজিৎ সিয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পরিচালক যশ চোপড়ার প্রায় সব ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
বিখ্যাত গায়িকার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশের সমস্ত নাগরিক। শোকজ্ঞাপন করেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক রাজনৈতিক বিশিষ্ট ব্যক্তি সহ সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র জগতের শিল্পীরা। কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে দু’ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ সুর সম্রাজ্ঞী কে শ্রদ্ধা জানিয়ে আগামী দু’ দিন অর্ধনমিত থাকবে দেশের জাতীয় পতাকা৷ পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্মানেই আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় শিল্পীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।