প্রযুক্তি নির্ভর প্রতারণা যেন অভিশাপ! এবার এই প্রতারণার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের (Bhopal)জাহাঙ্গিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা সিনিয়র অ্যাডভোকেট শিবকুমার বর্মা। ভয়ঙ্কর মানসিক চাপ সামলাতে না পেরেই নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি এমনটাই জানা যাচ্ছে। সোমবার রাতে তাঁর বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুটও পাওয়া গিয়েছে যেখানে তিনি লিখেছেন, ”আমাকে বলা হয়েছে, কেউ আমার নাম-পরিচয় ব্যবহার করে একটি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছে এবং সেই অ্যাকাউন্টকে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার অর্থসাহায্যের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এই অপমান আমি সহ্য করতে না পেরে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করছি। কেউ আমার নামে নকল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে সন্ত্রাসী আসিফকে টাকা পাঠানোর অভিযোগ ছড়িয়েছে। আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলা হলে আমি সেই বদনাম নিয়ে বাঁচতে পারব না।” চিরকুটে তিনি জানান ১৯৮৪ সালের ভোপাল গ্যাস বিপর্যয়ের সময় অসংখ্য মৃতদেহের সৎকার করেছেন তিনি। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সহায়তার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। প্রায় ৫০ বার রক্তদান করে বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-জল জীবন মিশন প্রকল্পে অর্থ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে শর্ত কেন্দ্রের
সূত্রের খবর, ঘটনার সময় ব্যক্তির স্ত্রী ও মেয়ে দিল্লিতে ও ছেলে কর্মসূত্রে পুনেতে ছিলেন। স্ত্রী ওনাকে ফোনে না পেয়ে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াকে খোঁজ নিতে বলেন। জানালা দিয়ে ওই ভাড়াটিয়া প্রথম দেহটি দেখতে পান। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে এটি ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ এর ঘটনা। সাইবার ব্ল্যাকমেল করে ভয় দেখিয়ে আইনি বিপদের ভাবনা ঢুকিয়ে এই ব্যক্তিকে ভয়ানক পরিণতির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-ভয়ঙ্কর! চিনে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু ১১ রেলকর্মীর
এই ঘটনায় ভোপাল পুলিশ কমিশনার হরিনারায়ণচরী মিশ্র জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করতে একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। চিরকুটে যে নম্বর ও অ্যাকাউন্টের কথা বলা হয়েছে সেগুলির সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনাটি ফের একবার সাইবার অপরাধের বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে দিল।

