আগরতলা : আগরতলা-সহ ত্রিপুরার পুরভোটগুলির প্রাক্কালে একটি জরুরি রাজনৈতিক বার্তা তীব্রতর হয়ে উঠছে। সেটি হল, সিপিএম, কংগ্রেস লড়াই করতে পারছে না। তাদের ভোট দিলে সেই ভোট নষ্ট। তাই বামপন্থী এবং কংগ্রেস সমর্থকরাও এবার সরাসরি তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে আরও কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে বিজেপি।
তৃণমূল নেতারা সরাসরি আবেদন করে সাংবাদিক বৈঠক বা প্রকাশ্যসভায় বলছেন, বামপন্থী এবং কংগ্রেস সমর্থকদের উদ্দেশে বলছি দয়া করে ভেবে দেখবেন। যাঁরা সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসে এসেছেন বা আসছেন, তাঁদের স্বাগত। যাঁরা নিজেদের দলটাই করতে চান একশোবার করুন। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় বিজেপির অপশাসন ও সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে আসল লড়াইটা করছে তৃণমূল। মাঠেময়দানে আছি। এমনকি হাইকোর্টে ওদের হারিয়ে সভা করার অধিকার ছিনিয়ে আনছি। সিপিএম বা কংগ্রেস এই লড়াইটা দিতে পারছে না। ওদের ভোট দিলে ভোট নষ্ট। উল্টে বিজেপির সুবিধে। আমাদের অনুরোধ, আপনি যে দলের সমর্থক হোন, আপনার দল আপনি করুন, কিন্তু এখন আপনার ভোটটা দিন তৃণমূলকে। আমরাই পারব বিজেপিকে পরাস্ত করে বিকল্প উন্নয়ন ও শান্তির প্রশাসন দিতে। এই বার্তা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে ত্রিপুরায়। বহু বাম এবং কংগ্রেস নেতা, কর্মীরা এই পথেই যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় আছে যে, যেসব ওয়ার্ডে বিজেপির সন্ত্রাস সামলাতে না পেরে বাম প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছেন, সেইসব জায়গায় বামকর্মীরা মাটি কামড়ে লড়াইতে থাকা তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আগরতলা পুরসভায় ৫১টি আসনের সবকটিতেই প্রার্থী দিয়ে লড়ছে তৃণমূল। অবাধ ভোট হলে তৃণমূল বোর্ড গড়ার জায়গায় আছে।
আরও পড়ুন : রাস্তা থেকে কাউন্সিলরদের খতিয়ান, সবকিছুতে নজর মুখ্যমন্ত্রীর
তেলিয়ামুড়া, আমবাসা, সোনামুড়াসহ আরও একাধিক জায়গায় বেশ কিছু ওয়ার্ড জয়ের মুখে রয়েছে তৃণমূল। বিজেপির ভরসা শুধু সন্ত্রাস। এই পরিস্থিতিতে দিকে দিকে বাম ও কংগ্রেস ভোট এবার তৃণমূলকে দেওয়ার যে বার্তা ছড়াচ্ছে, তা রীতিমত ঝড় তুলছে। বাম এবং কংগ্রেস ভোটাররা মনে করছেন তৃণমূল যেভাবে বিজেপিকে টক্কর দিচ্ছেন, আদালত থেকে রাজপথ গণতন্ত্র মেনে লড়ছে, সেটা অন্যরা পারছে না। তাই তৃণমূলকেই এখন বৃহত্তর রাজনৈতিক কারণে ভোট দেওয়া দরকার।
সবচেয়ে বড় কথা বিজেপির একটি অংশও এখন অপশাসন ও গোষ্ঠীবাজির বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থীর পক্ষেই আছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পর তৃণমূল কর্মীরা আরও উত্তেজিত। ইন্দ্রনীল সেন, সোহম, জুন, সায়ন্তিকারাও প্রচারে ঝড় তুলছেন। ত্রিপুরার নেতা, কর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগিতা করছেন বাংলার কয়েকজন সংগঠকও। আওয়াজ উঠেছে, ‘নো ভোট টু বিজেপি। ভোট ফর টিএমসি।’ বিজেপিবিরোধী সব ভোট এবার তৃণমূলকে দিতে চাইছেন ত্রিপুরার মানুষ। আতঙ্কে হামলা, ভুয়ো মামলার পথে যাচ্ছে বিজেপি। মানুষ এসব যত দেখছেন, বিজেপির উপর আরও রুষ্ট হচ্ছেন।