আবেগের বিস্ফোরণে বাতিল উৎসব, হেলিকপ্টারে উদ্ধার মেসিদের

Must read

বুয়েনস আইরেস: আবেগের বিস্ফোরণ! আর তাতেই বাতিল বিশ্বকাপজয়ীদের অনুষ্ঠান। এমনকী, উন্মত্ত জনতার ভালবাসার অত্যাচার থেকে লিও মেসিদের (Lionel Messi- Argentina) উদ্ধারের জন্য আর্জেন্টিনা সরকারকে নামাতে হল পাঁচ-পাঁচটি হেলিকপ্টারও!
কথা ছিল, বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা দলকে রাজধানী বুয়েনস আইরেসের প্রাণকেন্দ্র তথা ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ ওবেলিস্কে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। হুডখোলা বাসে মেসিদের নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রারও শুরু হয়েছিল নির্ধারিত সময়ে। কিন্তু সেই শোভাযাত্রা যত গন্তব্যের দিকে এগিয়েছে, ততই রাস্তার দু’ধারে উৎসাহী মানুষের ঢল বাড়ছিল। সরকারি হিসেবে সংখ্যাটা প্রায় ৫০ লক্ষ! এর মধ্যে ওবেলিস্কের আশে পাশেই জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ! ভিড়ের চোটে একটা সময় মেসিদের বাস প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই সমস্যার শুরু।
বাসে উঠে বিশ্বকাপজয়ী তারকাদের ছোঁয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে জনতা। একটি উড়ালপুলের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় তো বেশ কিছু মানুষ উপর থেকে লাফ দেন বাসে। যাঁরা রাস্তায় ছিলেন, তাঁরাও ফুটবলারদের উদ্দেশে আনন্দের আতিশয্যে বিভিন্ন জিনিস ছুঁড়তে থাকেন। তাতে মেসিরা আঘাতও পেতে পারতেন।

ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাধ্য হয়েই আসরে নামে পুলিশ। দ্রুত পাঁচটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়। সরাসরি বাস থেকে মেসিদের উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওবেলিস্ক স্মৃতিসৌধে। কিন্তু তাতেই খেপে ওঠে জনতা। শুরু হয়ে যায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে থাকে উন্মত্ত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। শূন্যে গুলিও করে। এই হুড়োহুড়িতে আহত হন কমপক্ষে ১৮ জন। এঁদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। কথা ছিল, ওবেলিস্কে জনতার সামনে মেসিদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। কিন্তু তা বাতিল করে দেওয়া হয়। আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ক্লদিও তাপিয়া ট্যুইট করে ক্ষমা চান ফুটবলপ্রেমীদের কাছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আরও পড়ুন-সিনেমায় আপত্তি, এবার শাহরুখকে পুড়িয়ে মারার হুমকি বিজেপি ঘনিষ্ঠ গেরুয়াধারীর

অন্যদিকে, মেসিদের (Lionel Messi- Argentina) শোভাযাত্রায় যোগ দিতে গিয়ে এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। মৃত সেবাস্তিয়ান অস্কার বুয়েনস আইরেস থেকে প্রায় চারশো মাইল দূরের বাহিয়া ব্লাঙ্কার লা ফালদা অঞ্চলে থাকতেন। সেখান থেকে বাইকে চড়ে উৎসবে যোগ দিতে আসছিলেন সেবাস্তিয়ান। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর গলায় জড়ানো আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকা জড়িয়ে যায় বাইকের চাকায়। রাস্তায় ছিটকে পড়েন সেবাস্তিয়ান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

এদিকে, সতীর্থদের থেকে বিদায় নিয়ে বুধবারই নিজের জন্মশহর রোজারিওতে পা রাখলেন মেসি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রোজারিওর আরেক ভূমিপুত্র তথা বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য অ্যাঞ্জেল ডি’মারিয়া। স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জি এবং তিন সন্তানও ছিলেন মেসির সঙ্গে। রোজারিও বিমানবন্দর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে গাড়িতে করে জন্মভিটেতে পা রাখেন মেসি। ঘরের ছেলেকে বরণ করে নিতে ভিড় জমিয়েছিলেন রোজারিও গর্বিত জনতা। মেসির গাড়ি যখন পাড়ায় ঢোকে, তখন ‘ওলে ওলে, লিও লিও’ জয়ধ্বনীতে ফেটে পড়েন তাঁরা। মেসির নিরাপত্তাররক্ষীরা অনেক চেষ্টা করেও উৎসাহী জনতাকে আটকাতে পারেননি। তবে ভক্তদের হতাশ করেননি নায়ক। দেদার সেলফি ও অটোগ্রাফ বিলিয়েছেন।

Latest article