কসবা (Kasba) কাণ্ডে মৃত যুবক সোমনাথ রায়ের মামা ও মামিকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর গ্রেফতার করা হল এক লোন এজেন্টকে যার নাম চঞ্চল মুখোপাধ্যায়। সোমনাথ দেওয়ালে যে সুইসাইড নোট লিখে গেছিলেন সেখানে এই ব্যক্তির নাম ছিল। সেই সূত্র মারফত এবার পুলিশ চঞ্চলকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন-ভারতে থাকলেও বিচার হবে হাসিনার, জানালেন ইউনুস
পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় অটোচালক ছিলেন সোমনাথ। তাঁর প্রতিবেশী এবং কয়েকজন অটোচালক পরিচিতের থেকে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমনাথের আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীল জন্ম থেকেই কঠিন অসুখে আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছিলেন সোমনাথ। কিছুদিন আগে নিজের অটোও বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। ছেলের চিকিৎসার জন্য একটি ব্যাঙ্ক থেকে ১০ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছিলেন সোমনাথ। কিন্তু সেই লোনের টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। এই এজেন্টের বিরুদ্ধে চাপ দেওয়া অভিযোগ করা হয়েছে। বেশ কয়েকদিন পর পর বাড়ি এসে সোমনাথকে হুমকি দিতেন এই এজেন্ট। টাকা না পেলে খারাপ হবে, এই জাতীয় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে খবর। একাধিক পাওনাদারও আসতেন সোমনাথের কাছে। তাদের নাম দেওয়ালে লিখে রেখে যান তিনি। সেই নামগুলির মধ্যে এই লোন এজেন্টের নামও ছিল। আজ তাঁকে আলিপুর আদালতে তুলে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে চাইবে।
আরও পড়ুন-লঙ্কা চা-এর প্রেমে মজে মন্ত্রী থেকে সঙ্গীতশিল্পী
প্রসঙ্গত, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে পুলিশ মৃতর মামা-মামিকে গ্রেফতার করেছে। সোমনাথের মামার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং ষড়যন্ত্রর অভিযোগ এনেছিলেন মৃত সুমিত্রার দিদি সুপর্ণা ভৌমিক। সুমিত্রার বাবা বিশ্বনাথ ভৌমিকও তাঁর মেয়ে, জামাই ও নাতিকে খুনের অভিযোগ এনেছেন। সুইসাইড নোটে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ এবং মামা-মামির কথা লিখে গিয়েছিলেন সোমনাথ। মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। তবে শুধুমাত্র মামার সঙ্গে সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে নাকি সন্তান সুস্থ হবে না বুঝতে পেরে সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত, সেটা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে কসবা কাণ্ডের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে। সেখানে স্পষ্ট বলে হয়েছে শ্বাসরোধের ফলে তিন বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তাঁকে কে খুন করেছেন, বাবা না মা, সেটা বোঝা যায় নি। শিশুটির নাক এবং ঠোঁটে একাধিক আঘাত রয়েছে। শ্বাসরোধ করার সময় সেই চোট লাগে তার। সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা-মা বলেই ধারণা পুলিশের।