আইন ভাঙাই দস্তুর। কেউ-ই চান না আইন ভাঙতে, তবু আইন ভাঙতে হয়। একপ্রকার বাধ্য হয়েই। টিকিট না-কেটেই ট্রেনে যাত্রা করাই নিয়ম এখানে। স্টেশনে টিকিট কাউন্টার রয়েছে। কিন্তু কাউন্টার খোলার কর্মী নেই। তালাবন্ধ হয়েই পড়ে থাকে কাউন্টার। তাই টিকিট আর কাটবেন কোথায়? রেলস্টেশন রয়েছে। প্ল্যাটফর্মে ট্রেনও আসে। যাত্রীরা ওঠানামা করে। বিনা টিকিটেই চলে যাতায়াত। সন্ধ্যা নামলেই স্টেশনকে ঘিরে ধরে আঁধার।
এই ছবিটা জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের ভোটপাট্টি রেল স্টেশনের (bhotepati station)। নিত্যযাত্রীদের নিত্য ভোগান্তি তো রেলের রোজনামচা। কিন্তু উত্তর-পূর্বের এই রেলে তা একেবারেই অন্যমাত্রা পেয়েছে। উত্তরপূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা আবার এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁর কাছে এই ঘটনা উপস্থাপিত করার পর তিনি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জলপাইগুড়ি এই রেল স্টেশনে আপ ও ডাউন লাইনে দু’টি ট্রেন চলাচল করে। একটি শিলিগুড়ি জংশন থেকে নিউ বঙ্গাইগাঁও, অন্যটি বামনহাট থেকে ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- বেহাল রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন জনপ্রতিনিধিরা! বিধানসভায় বসছে ড্রপবক্স
স্বাভাবিকভাবেই ভোটপাট্টি স্টেশনে (bhotepati station) যাত্রীদের যথেষ্ট ভিড় হয়। জরিমানার ভয় নিয়েই ট্রেনে ওঠেন তাঁরা। কেউ আবার পরের কোনও স্টেশনে নেমে গন্তব্যের টিকিট কাটেন। কখনও আবার সময়ের অভাবে সে সুযোগ হয়ে ওঠে না। ঝক্কি এড়াতে কেউ আগের বা পরের স্টেশন থেকে মান্থলি টিকিট করিয়ে নেন। এভাবেই চলছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। স্টেশন সংস্কার হয় না, অবস্থাও বেশ খারাপ। যাত্রীদের বসার জায়গায় সিমেন্টের চাঙড় খসে পড়েছে। যাত্রীদের কথায়, ট্রেনে আমাদের যাতায়াতে সুবিধে হয়। চাইলেও টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে পারি না। আমার পক্ষে মাঝপথে কোনও স্টেশনে নেমে টিকিট কাটা সম্ভব নয়। অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য এই অনিয়ম ঘটে চলেছে। ফাইনও দিতে হয়েছে যাত্রীদের। যাতায়াতের সময়ে মাঝপথে নিউ চ্যাংড়াবান্ধা স্টেশনে যদি ট্রেনটি একটু বেশি সময় দাঁড়ায়, তা হলে নেমে টিকিট কেটে নিই। প্রতিদিন এই দুই রুটে এত মানুষ যাতায়াত করেন, তাঁদের ভোগান্তির কথা রেল কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব সহকারে ভাবা উচিত। তারপর স্টেশনে কোনও কর্মী নেই, কোনও লাইটের ব্যবস্থা নেই। সন্ধে নামলেই স্টেশন এলাকায় বসে যায় মদ-জুয়ার আসর। সমস্যার কথা রেলকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।