প্রতিবেদন : উপনির্বাচনের প্রচার শেষ। দেখা গেল ভবানীপুরে বিজেপির প্রার্থী টিবরেওয়ালের প্রচারে এলেন না দলের তালিকাভুক্ত ‘স্টার ক্যাম্পেনার’ সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি সূত্রের খবর, আরেক তারকা বাবুল সুপ্রিয় তো দলই ছেড়েছেন। কিন্তু পুরনো বিজেপি কর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য লকেটকে প্রচারে আনতে মরিয়া ছিল বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক, সকলেই ফোন করেন লকেটকে। এমনকি টিবরেওয়াল নিজেও ফোনে অনুরোধ করেন। তবে লকেট আসেননি। তিনি মূলত দিল্লিতেই থেকে গিয়েছেন। পার্টি তাঁকে দিয়ে অন্তত একটি বিবৃতি দেওয়ানোর চেষ্টা করছে। চাপ দিচ্ছে। উল্লেখ্য, লকেট যখন বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন, তখন এমনভাবে লকেটকে উত্যক্ত করা হত যে শৃঙ্খলা রাখতে এই টিবরেওয়াকে সংগঠন থেকে তাড়িয়েছিলেন লকেট। লকেট যেমন সংগঠন করে উঠে এসেছেন দলে, টিবরেওয়াল তা না করে দাদা ধরে বা লবি করে টিকে আছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন ভবানীপুরে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায় নি। ফলে টিবরেওয়াল যে যোগ্য হিসেবে টিকিট পাননি বলাই বাহুল্য। এদিকে লকেটকে দলে কাজ করতে জায়গা দিচ্ছে না বিজেপির তৎকাল এবং অপদার্থ অংশ। নামেই তিনি রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক। দরকারে তাঁর মুখটি ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনও কাজ তাঁকে দেওয়া হয় না। শেষমেষ তাঁর সম্মান বাঁচাতে দিল্লি তাঁকে উত্তরাখন্ডের পর্যবেক্ষক করেছে। বিধানসভা নির্বাচনে লকেটকে হতাশ হতে হয়েছে। বিজেপির গোষ্ঠীবাজিতে তাঁর এলাকা প্রায় ধ্বংস। মানুষ তৃণমূলের দিকেই ফিরে এসেছেন।
আরও পড়ুন : আসরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী , গোয়ায় চমক তৃণমূলের
এই অবস্থায় আবার লকেটকে ভবানীপুরে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। লকেট দাঁড়াননি। টিবরেওয়ালকে প্রার্থী করা নিয়ে লকেট ব্যাপক ক্ষুব্ধ। শোনা যায় বিরোধী দলনেতাকেও কড়া কথা শুনিয়ে দিয়েছেন। এখন তাঁকে প্রচারে আনার চেষ্টা করেছে বিজেপি। কারণ বিজেপির মুখ নেই। দিলীপ ঘোষ নিজেই টিবরেওয়ালের সমর্থক নন। শুভেন্দু, দীনেশ, অর্জুনের মত গদ্দাররা যত চেঁচাবেন, তত তৃণমূলের লাভ। বাঙালী পরিচিত মুখ বলতে লকেট। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ভবানীপুরে নামানোর চেষ্টা করেছে দল। শুভেন্দু বারবার ফোন করেছেন। অমিতাভ চক্রবর্তী কথা বলেছেন। কিন্তু লকেট ভবানীপুরে আসেননি। সোমবার প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একটি টুইট করে লিখেছেন, “ভবানীপুরে প্রচারে না আসার জন্য বিজেপির তারকা প্রচারক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। বিজেপির অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি আসেননি। আপনি যেখানেই থাকুন বন্ধু হিসেবে শুভকামনা জানাই। পৃথিবী খুব ছোট। আশা করি আপনার রাজনৈতিক জীবন শুরুর দিনগুলো আবার ফিরে আসবে।” এরপর নড়ে বসে বিজেপি। লকেটকে বলা হয় এখনই উত্তর দিতে। লকেট টুইটে উত্তর দেন দলের কথা রাখতে। কিন্তু সেখানেও তিনি বিজেপি প্রার্থীর নামটুকুও উচ্চারণ করেননি। এ নিয়ে আবার রসিকতা করে টুইট করেন কুণাল।