সংবাদদাতা, হাওড়া : কে এই শৈলেশ পাণ্ডে। তা নিয়েই হাওড়ার বাসিন্দাদের কৌতূহল তুঙ্গে। পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউট্যান্ট শৈলেশের আসল বাড়ি বিহারের আরা জেলায়। ১৫-১৬ বছর আগে হাওড়ায় আবির্ভাব। বছর পঞ্চাশের শৈলেশের হাওড়ায় তিনটে ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। ঘটনার পর শৈলেশ ও তার দুই ভাই বেপাত্তা। অপর দুই ভাই হল অরবিন্দ ও রোহিত।
আরও পড়ুন-মুর্শিদাবাদে নদীগর্ভে দেবালয়ও
শৈলেশের বিরুদ্ধে ৭৭ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। বিদেশে বিভিন্ন কোর্স করানোর নামে এই টাকা তছরুপ করেছে শৈলেশ ও তার দুই ভাই। কানাড়া ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে লালবাজার। স্ট্র্যান্ড রোডে একটি বাণিজ্যিক ভবনে অফিস খুলে এই প্রতারণার কারবার চালাত শৈলেশ ও তার ভাইয়েরা। কিন্তু এখন পুলিশের জালে। তার মধ্যেই শিবপুর মন্দিরতলার কাছে কৈপুকুর এলাকার ৩৫ অপ্রকাশ মুখার্জি লেনে শৈলেশের ফ্ল্যাট থেকেই নগদ ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা ও প্রচুর পরিমাণে সোনা, হীরে ও রুপোর আংটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে তিনতলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ ওই টাকা ও গয়না। হেয়ার স্ট্রিট থানা ও শিবপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন-মুর্শিদাবাদে নদীগর্ভে দেবালয়ও
ফ্ল্যাট তালাবন্ধ থাকায় চাবিমিস্ত্রিকে ডেকে ওই তালা খুলে ভেতরে ঢোকে পুলিশ। ঘরের ভেতর বক্সখাটের (ডিভান) মধ্যে থরে থরে সাজানো ছিল ২ হাজার ও ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল। যা দেখে তাজ্জব হয়ে যান পুলিশ অফিসাররা। মেশিন নিয়ে এসে সারারাত নোট গণনা চলে। পুজোর সময় শৈলেশ এই ফ্ল্যাটে শেষ এসেছিল। তারপর থেকেই তাদের ফ্ল্যাট তালাবন্ধ ছিল। এলাকার অনেকের আইটি ফাইল দেখাশোনা করত শৈলেশ। তবে গত এক দেড় বছরে শৈলেশ অনেকের আইটি ফাইল দেখাশোনার কাজ ছেড়ে দিয়েছিল। শৈলেশেরই শিবপুরের কাউস ঘাট রোডের আর একটি বহুতল আবাসনের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে শৈলেশের ভাই অরবিন্দের গাড়ি থেকে নগদ ২ কোটি টাকা ও প্রচুর পরিমাণে সোনা ও হীরের গয়না উদ্ধার হয়। তারপরই হাওড়ায় শৈলেশের তিনটি ফ্ল্যাটেই হানা দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন-হুগলি নদীতে চলেছে তল্লাশি, মেলেনি দেহ
তারই মধ্যে একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় নগদ ওই ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা ও সোনা, রুপো ও হীরের গয়না। এরপরই পলাতক শৈলেশ ও তার ভাইদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়। তাদের খোঁজে লুকআউট নোটিশও জারি করেছে পুলিশ। ব্যাঙ্ক লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে শৈলেশ বহু মানুষকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ব্যাপারে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে বিপুল পরিমাণ ওই নগদ টাকা ও গয়না উদ্ধার করে পুলিশ। শৈলেশের সঙ্গে কাদের যোগাযোগ ছিল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।