সংবাদদাতা, হুগলি : মালদহের হিমসাগরের খ্যাতি জগৎজোড়া হলেও হুগলির আমও কম যায় না। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হিমসাগরের পাশাপাশি ল্যাংড়া, গোলাপখাস ও মোহন ভোগের মতো বাহারি আমের বাজারও হুগলিতে রমরমা। প্রতিবছরই হুগলির ব্যান্ডেল, রাজহাট, চন্দননগর, মানকুন্ডু ও বলাগড় জুড়ে প্রচুর আমের উৎপাদন হয়। তবে এবার জেলাজুড়ে আমের ফলন অনেকটাই কম। সাধারণত ফলন কম হলে চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়ে। বাইরের রাজ্যেও রফতানি হয়। কিন্তু এবার সেগুড়ে বালি। উৎপাদন কমার পাশাপাশি এবার হুগলির আমের বিশেষ চাহিদাও নেই বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে। এদিকে দাম কম থাকায় স্থানীয় পাইকারি বাজারেও আম বেচে লাভের কড়ি ঘরে তুলতে পারছেন না হুগলির আমচাষিরা।
আরও পড়ুন-বালুচ-বিদ্রোহীরা দখল করে নিল সুরাব শহর
মূলত পোলবার গোটু ও বলাগড়ের বাজার থেকে কয়েকশো টন আম রফতানি হয় উত্তরপ্রদেশ, বিহারে। কলকাতার বাজারেও প্রতিবছর হুগলির আমের বেশ চাহিদা থাকে। কিন্তু এবছর ফলন কম। আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের দাবি, আমের দামও এবার তেমন ওঠেনি। বিশেষ করে ভিন্ন রাজ্যে চাহিদা ব্যাপক কম রয়েছে এবছর। রাজাহাটের আমচাষি বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন, বাইরের রাজ্যেও আমের চাহিদা খুব কম, চাহিদা নেই স্থানীয় বাজারেও। বর্তমানে পাইকারি দশ টাকা করে কেজি দরে কাঁচা আম এবং কুড়ি টাকায় পাকা আম বিক্রি হচ্ছে। সরকারের তরফেও এক্ষেত্রে কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। এই অবস্থায় ব্যবসায় মার খাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। আর এক আমচাষি অসিত ঘোষ বলেন, পোলবা, চন্দননগর, ব্যান্ডেল এলাকায় ফলন কম হলেও জিরাট কিংবা নদিয়ার শান্তিপুরেও প্রচুর ফলন হয়েছে। এখানে দর কম হওয়ায় ভিনরাজ্যের ব্যবসায়ীরা ওখানেই ভিড় জমাচ্ছেন।
আরও পড়ুন-পর্দায় নারী ক্ষমতায়নের পথ দেখাবেন বিধায়ক সঙ্গীতা
উত্তরপ্রদেশ, বিহারের প্রচুর ব্যবসায়ী প্রতিবছর ট্রাকে করে আম নিয়ে যান হুগলি থেকে। কিন্তু এবার ভিনরাজ্যে আমের ফলন ভাল হওয়ায় হুগলির আমের তেমন চাহিদা নেই। বিহারের এক ব্যবসায়ী মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, এখানকার সরি ও চ্যাটার্জি জাতের আম খুব ভাল বিক্রি হয় বিহারে। কিন্তু এবার ভাগলপুর, পাটনার লোকাল আম বিক্রি হচ্ছে। সেই কারণে বাংলার আমের বিক্রি নেই বিহারে। একই ছবি উত্তরপ্রদেশেরও। স্থানীয় আমের ফলন ভাল হওয়ায় বাংলার আমের চাহিদা নেই সেখানেও। তাই সবদিক দিয়েই ফ্যাঁসাদে পড়েছেন হুগলির আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।