মুম্বই, ১৮ মে : কলকাতায় কলকাতা নেই। নভি মুম্বইয়ে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নির্ধারিত হয়ে গেল নাইটদের ভাগ্য।
শেষবেলায় ম্যাচ প্রায় নিয়ে এসেছিলেন রিঙ্কু সিং। সেই রিঙ্কু, যাঁকে কেকেআর (Kolkata Knight Riders ( টিম ম্যানেজমেন্ট এতদিন ক্রিকেট পর্যটক ছাড়া আর কিছু ভাবেনি। এবার কয়েকটা ম্যাচে সুযোগ পেলেন। আর তিনি সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন। নাইটদের শেষ ম্যাচে নায়কও হয়ে যেতে পারতেন রিঙ্কু। শুধু ১৫ বলে ৪০ রানের ইনিংসটা থেমে গেল ইভিন লুইসের দুর্দান্ত ক্যাচে। আর তাতেই লখনউয়ের কাছে ২ রানে ম্যাচ হেরে আইপিএল থেকে ছিটকে গেল কেকেআর।
২৪ ও ২৫ মে ইডেনে আইপিএল কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর। কিন্তু নাইটরা হেরে এটা নিশ্চিত করে ফেললেন যে, সাকুল্যে ১২ পয়েন্ট নিয়ে কিছুতেই তাদের প্রথম চারে দেখা যাবে না। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২১ রান। রিঙ্কু প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ দু’বলে স্টয়নিস দুই উইকেট নিয়ে সেই আশায় জল ঢেলে দেন।
নীতীশ আর শ্রেয়স আউট হওয়ার পর কেকেআরের চোখ ছিল রাসেলের দিকে। এই জায়গা থেকে অনেকবার তিনি নাইটদের জিতিয়েছেন। কিন্তু সেটা হয়নি। ভেঙ্কটেশ আর তোমারের পর তাঁর উইকেট নিয়ে গেলেন মহসিন খান। তবু রিঙ্কু জয়ের দরজা প্রায় খুলে ফেলেছিলেন।
আরও পড়ুন: অচিরেই বাজার মাতাবে জঙ্গিপুরের বিখ্যাত বোম্বাই লিচু
জিতলেও প্লে-অফের দরজা হাট করে খুলে যেত না। কিন্তু ভেসে থাকা যেত। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে এটা দেখা যেত যে আরসিবিকে বৃহস্পতিবার গুজরাট টাইটানস হারাতে পারে কিনা। কিন্তু কেকেআর হেরে যাওয়ায় সেসবের আর দরকার হবে না।
কুড়ি ওভারে ২১১ রান তোলা যথেষ্ট বড় চ্যালেঞ্জ। ভাল শুরুর দরকার ছিল। নাইটদের যেটা হয়নি। ভেঙ্কটেশ (০) ফিরে গেলেন মহসিন খানের বলে। তারপর নীতীশ রানা ২২ বলে ৪২ রানের একটা ছোট্ট ক্যামিও করে গেলেন। শ্রেয়স আর বিলিংস অবশ্য চাপটা ফিরিয়ে দিলেন হোল্ডার-বিশনোইয়ের উপর। কিন্তু শ্রেয়স ২৯ বলে ৫০ করে ফিরে যেতেই এই চাপ অনেকটা ফিকে হয়ে গেল।
বুধবারের আগে পর্যন্ত কেকেআরকে (Kolkata knight Riders) ডুবিয়েছে ব্যাটিং। এদিন হল উল্টো। কুইন্টন ডি’কক ১৪০ আর কে এল রাহুল ৬৮ নট আউট থেকে লখনউকে পৌঁছে দিলেন ২১০/০-তে। আইপিএলে পনেরো বছরে ওপেনিং জুটিতে এত রান ওঠেনি। ডি’কক কপালকে পাশে পেয়েছিলেন। ক্যাচও পড়েছে। কিন্তু এতে নাইট বোলারদের দৈন্যদশা ঢাকা পড়ছে না।
প্যাট কামিন্স ফিরে যাওয়ার পর বড় নাম ছিল টিম সাউদি। তিনি ৪ ওভারে দিয়ে গেলেন ৫৭ রান! রাসেলের তিন ওভারে অবদান ৪৫ রান। তার মধ্যে রাসেল ডি’ককের হাতে বেশি ঠ্যাঙানি খেলেন ২০তম ওভারে।
রাহুল আগে ব্যাট করে নিলেন। শ্রেয়সও টসে জিতে সেটাই করতেন। কিন্তু নাইটদের জন্য যে কঠিন কিছু অপেক্ষা করে আছে, সেটা পরে বোঝা গেল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স থেকে ডি’কককে এবার তুলে নিয়ে রাহুলরা যে কত বুদ্ধির কাজ করেছেন, সেটা প্রতি ম্যাচেই বোঝাচ্ছেন তিনি। ডি’ভিলিয়ার্স যেমন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে শট নিতেন, ডি’ককও তাই নেন। নারিন, বরুণ আর উমেশকে সামলে নিয়ে আক্রমণে গেলেন সাউদি, রাসেলকে। ওরা কেউ বুঝতেই পারেননি কোথায় বল ফেলবেন!