নয়াদিল্লি, ১০ ডিসেম্বর : ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে।কিন্তু বিতর্কের রেশ এতটুকুও কমছে না। ওয়ান ডে নেতৃত্ব খোয়ানো নিয়ে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি বিরাট কোহলি। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভক্তরা প্রতিদিনই ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। চাপে পড়ে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে তাতেও ক্ষোভের আগুন কমেনি। জাতীয় দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার মদনলালও মনে করছেন, এই মুহূর্তে বিরাটকে ওয়ান ডে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াটা বড় ভুল। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর টিম ইন্ডিয়ার কোচ ছিলেন মদনলাল। শুধু তাই নয়, বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। কোনও রাখঢাক না করেই মদনলাল বলছেন, ‘‘জানি না, কী পরিকল্পনা থেকে নির্বাচকরা এই সিদ্ধান্ত নিলেন। বিরাট যখন অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য এনে দিচ্ছে, তখন কেন ওকে পাল্টানো হল!’’ ক্ষুব্ধ মদনলাল আরও যোগ করেছেন, ‘‘টি-২০ ক্ষেত্রে না হয় মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু সফল্য পাওয়া সত্ত্বেও কেন ওয়ান ডে নেতৃত্ব থেকে ওকে সরানো হল? আমার তো মনে হয়, ২০২৩ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত ওকে অধিনায়ক রাখা উচিত ছিল। একটা দল গড়ে তোলা খুব কঠিন। কিন্তু তাকে ধংস করা খুব সহজ।’’ ঘরের মাঠে ২০২৩ বিশ্বকাপে দল নিয়ে মাঠে নামতে চেয়েছিলেন বিরাট নিজেও। টি ২০-র নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেও তিনি ৫০ ওভারের অধিনায়ক থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিসিসিআই তাঁকে সেই সুযোগ দেয়নি। অনেকের ধারণা, বিরাট অধিনায়ক হিসেবে ড্রেসিংরুমের আস্থা হারিয়েছিলেন। ধোনি অধিনায়ক থাকার সময় হোটেলে তাঁর ঘর ছিল অবারিত দ্বার। যে কেউ তাঁর ঘরে গিয়ে প্লে স্টেশন খেলতে পারত। সহ-অধিনায়ক থাকার সময় রোহিতও ধোনির রাস্তায় হেঁটেছেন। কিন্তু বিরাটের ক্ষেত্রে এটা ভাবা কঠিন ছিল।
আরও পড়ুন : ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ে রাখলেন রুট-মালান
এদিকে বিরাট কোহলিকে সরিয়ে রোহিত শর্মাকে ওয়ান ডে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন দিলীপ বেঙ্গসরকার। একই সঙ্গে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের দাবি, বিরাট-রোহিতদের উত্তরসূরি তৈরি রাখার প্রক্রিয়া শুরু করে দিক জাতীয় নির্বাচক কমিটি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নিজের কলামে বেঙ্গসরকার লিখেছেন, ‘‘রোহিতকে ওয়ান ডে এবং টি-২০ ক্রিকেটের অধিনায়ক নির্বাচিত করে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে বিসিসিআই। এর ফলে বিরাট এখন থেকে টেস্টে বাড়তি মনোযোগ দিতে পারবে। রোহিতও সাদা বলের ক্রিকেটে মন দেবে।’’
তবে রোহিতের বয়স ৩৪। বিরাটের ৩৩। তাই এখন থেকেই দু’জনের উত্তরসূরি তৈরি করতে হবে বলে মনে করছেন বেঙ্গসরকার। তিনি লিখেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, জাতীয় নির্বাচকদের ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে কাউকে তৈরি রাখতে হবে। আমি যখন জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান ছিলাম, তখন আমরা অনিল কুম্বলেকে অধিনায়ক করলেও, মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম। এটা অত্যন্ত জরুরি।’’ দুই অধিনায়ক নীতি প্রসঙ্গে বেঙ্গসরকার লিখেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডে যেমন জো রুট এবং ইওন মর্গ্যান যথাক্রমে টেস্ট ও সাদা বলের ফরম্যাটে অধিনায়ক হিসেবে সফল। তেমন বিরাট ও রোহিতেরও সুবিধে হল। এতে কারোর ওপরেই অতিরিক্ত চাপ থাকবে না।’’