প্রতিবেদন : প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেই পাল্টি খেল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। ‘মুখ্যমন্ত্রী মাজি লেড়কি বেহন প্রকল্প’-এর অধীনে আট লাখ উপভোক্তার মাসিক ভাতা এক ধাক্কায় ১,৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করে দিল দেবেন্দ্র ফড়নবিশ প্রশাসন। ভোট মিটে যেতেই স্বরূপ প্রকাশ হয়ে গেল রাজ্যের বিজেপি নেতাদের।
আরও পড়ুন-শিশুচুরি হলেই বাতিল করা হবে হাসপাতালের লাইসেন্স : সুপ্রিম কোর্ট
মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতি সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্যজুড়ে প্রবল বিরোধ এবং অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেসব উপভোক্তা ‘নামো শেতকরি মহাসন্মান নিধি’ প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত ১,০০০ টাকা করে পাচ্ছেন, তাঁদের মাজি লেড়কি বেহন প্রকল্পে ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারের সাফাই, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও উপভোক্তা একাধিক সরকারি প্রকল্পে ভাতা পেতে পারেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে মাসিক সর্বোচ্চ পরিমাণ হতে হবে ১,৫০০ টাকার মধ্যে। প্রকল্পটির আবেদন গ্রহণ শুরু হলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ২.৬৩ কোটি আবেদন জমা পড়ে। সরকারি যাচাই-বাছাই শেষে ১১ লাখ আবেদন বাতিল করে ২.৫২ কোটি আবেদন গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ২.৪৬ কোটি উপভোক্তা ভাতা পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশ আগেই জানিয়েছিলেন, যাচাই প্রক্রিয়ার পর উপভোক্তার সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ লাখ কমতে পারে। সেই অনুযায়ী বরাদ্দও পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ‘মাজি লেড়কি বেহন’ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৪৬,০০০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩৬,০০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার ক্রমবর্ধমান আর্থিক চাপে রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মহারাষ্ট্রের মোট ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯.৩ লাখ কোটি টাকা। এই ঋণের বোঝা সামলাতে গিয়েই সম্ভবত প্রকল্পের ব্যয় সংকোচন নীতিতে এগোচ্ছে সরকার। তবে বিরোধী দল এবং সামাজিক সংগঠনগুলি এই পদক্ষেপকে “নারী কল্যাণে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ” বলে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার ভোটের আগে বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিজেপির নারীবিদ্বেষী মনোভাব এতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।