কণাদ দাশগুপ্ত : গান্ধী পরিবার এখন অতীত, দেশের সামগ্রিক রাজনীতিতে বিজেপি- বিরোধী ‘জাতীয় মুখ’ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই৷
বাংলায় একক দক্ষতায় মোদি-শাহ তথা গোটা কেন্দ্রীয় সরকারের আগ্রাসী থাবা ভোঁতা করে দিয়েছেন মমতা৷ আর তারপরই গোটা দেশের বিরোধী শক্তি একবাক্যে মেনে নিয়েছে, মোদি- শাহের রথ থামিয়ে দিতে পারেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই৷
আরও পড়ুন-চিতার ধোঁয়াকে সন্ধ্যারতি ভেবেই ডুবেছে বিজেপি
জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি- বিরোধী প্রধান মুখ হিসাবে এখনও প্রথমেই ভাবা হয় সোনিয়া বা রাহুল গান্ধীর নাম৷ বাংলার ভোটের ফলপ্রকাশের পর জাতীয়স্তরে এক নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটে গিয়েছে৷ দেশের বিরোধী নেতাদের অভিনন্দন বার্তায় ভেসে গিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী৷ সর্বস্তরের বিরোধীনেতারা বুঝে ফেলেছেন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে নিজের ক্যারিশমায় সব বিরোধীদের এক ছাতার তলায় এনে মোদি-শাহকে উৎখাত করতে পারেন
একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই৷ এদিনই স্পষ্ট হয়েছে, সোনিয়া- রাহুলকে ছাপিয়ে মমতাই জাতীয় রাজনীতির বিরোধী মুখ!
ঠিক এই সুরেই এদিন মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও৷ তিনি বলেছেন,
“কংগ্রেস নয়, বাংলার ভোটে জিতে গোটা দেশের প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
আরও পড়ুন-অভিনব উদ্যোগ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের: মোবাইল কলার টিউনে এবার “বাংলার যুবরাজ অভিষেক”!
ঠিক এতখানি স্পষ্টভাবে না বললেও অরবিন্দ কেজরিওয়ল, অখিলেশ যাদব, শরদ পাওয়ার, ওমর আবদুল্লা, তেজস্বী যাদবও মমতাকে পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তায় এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। শিবসেনার মুখপাত্র তথা সাংসদ সঞ্জয় রাউত দলের মুখপত্র ‘সামনা’য় লিখেছেন, “২ মে ফলের পর দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হবে।’ মোদি- শাহকে একক লড়াইয়ে হারিয়ে দিয়ে দেশের রাজনীতিতে রবিবার ফের নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ রাজনৈতিক মহল এখন থেকেই বলতে শুরু করেছে, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে মোদি- বিরোধী জোটের প্রধান মুখ হতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রীই। বাংলার এবারের ভোট নিতান্তই তৃণমূল- বিজেপির লড়াই ছিলো না৷ লড়াই হয়েছে মমতা বনাম মোদি-শাহ-কেন্দ্রীয় সরকারের৷ তাই সারা দেশের চোখ ছিল বাংলার ভোটের দিকেই। আর সেই লড়াইয়ে হেলায় মোদি- শাহকে পরাস্ত করে বাংলাকে রক্ষা করছেন মমতা৷
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, লোকসভা ভোটে জিতে বিরোধী জোটই দেশের সরকার গড়বে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কংগ্রেস সেভাবে হাত বাড়ায়নি৷ কিন্তু তাতে মমতার বিজেপি- বিরোধিতা ধাক্কা খায়নি৷ আর এবার তো নিজেই নিজের মতো লড়াই করে চুপসে দিলেন মোদি- শাহের অহংকার, দম্ভ আর ঔদ্ধত্যের বেলুন৷