মণীশ কীর্তনিয়া, মাপুসা: গোয়া সফরের শেষ দিনে চাঁচাছোলা ভাষায় কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বাড়বাড়ন্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, কংগ্রেসের জন্যেই মোদির শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। এই গোয়াতেও বিজেপি সরকার গড়তে পারত না। ওদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখে। আর তার জন্যই এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাচ্ছে। জেতার জন্য যাচ্ছে। গোয়াতেও নতুন সকাল আসবে। নেত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস সেদিন আর দূর নয়। এদিন দুপুরেই মাপুসা মার্কেটে নেত্রীর সভা ছিল। সেখানে যেভাবে সদস্য- সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়েছিল তা দেখার মতো ছিল। উল্লেখযোগ্য ছিল, মহিলাদের সংখ্যা। ওই সভা থেকেই আওয়াজ উঠেছে— আগলি বার দিদিকি সরকার।
আরও পড়ুন-জেল থেকে বেরিয়ে শাহরুখের সঙ্গে মন্নতে ফিরলেন আরিয়ান
শনিবার সকালে গোয়ার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্পষ্ট ভাষায় দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন নেত্রী। বলেন, ওরা বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে চলে। কংগ্রেস রাজনীতিকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। যখন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার কথা, তখন তারা বাংলায় আমার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তারা কী মনে করে, এরপর আমি তাদের ফুল দেব। ওরা অনেক সময় পেয়েছে। বিজেপি ওদের জন্য ক্ষমতায় আছে। বিজেপির নোংরা রাজনীতির কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি দাম বাড়াবে পেট্রোল-ডিজেলের তারপর রাজ্য সরকারকে বলবে দাম কমাতে। কেউ কোনও প্রশ্ন করে না। আমি করি তাই ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দেয়। বিজেপি সংবাদমাধ্যমকেও ছাড়ে না বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মন্তব্যের প্রকৃত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বলেন, উনি বলতে চেয়েছেন, কংগ্রেস যেভাবে চলছে তাতে আগামী দশ বছরেও বিজেপিকে হারাতে পারবে না।
আরও পড়ুন-চিন-পাকিস্তানকে পাল্টা ভারতের
কলকাতায় ফিরে নেত্রী ট্যুইটে লেখেন, আমি প্রত্যেক গোয়াবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। যেভাবে তাঁরা ভালবাসা দিয়েছেন তার তুলনা নেই। আমি তাঁদের নির্ভীক মনোভাবের প্রশংসা করছি এবং রাজ্য থেকে বিজেপিকে সরিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে যে শপথ তাঁরা নিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানানোর কোনও ভাষা নেই। প্রত্যেক গোয়াবাসীর পাশে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন সকাল আসবেই।
একইসঙ্গে গোয়ার আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, রিজিওনাল দলগুলি খুবই শক্তিশালী। গোয়ার দলগুলি একজায়গায় এসে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করলে সেটা ভালই হবে। তৃণমূলনেত্রীর মতে, ভোট ভাগ হোক সেটা তিনি চান না। বিজয় সরদেশাই-এর সঙ্গে কাজ করার জন্য আলোচনা হয়েছে। আমরা কেউই চাই না গোয়ায় ভোট ভাগ হোক। ওরা কংগ্রেসের মতো নয়। বিজেপির সঙ্গে আপস করে চলে। নাম না করে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, আমি সাধারণ ভাবেই থাকতেই পছন্দ করি। দেশে অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যাঁরা নিজেদের ভিআইপি ভাবতে ভালবাসেন। আমি স্ট্রিট ফাইটার। সাংবাদিক বৈঠক সেরে লুইজিনহো ফালেরিও, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং লিয়েন্ডার পেজকে নিয়ে সেন্ট ব্যাসিলিকা চার্চে যান নেত্রী। ঐতিহাসিক চার্চ থেকে মাপুসা রীতিমতো তাকিয়ে দেখার মতো অভিজ্ঞতা। কলকাতার সাংবাদিকরা দেখলেন যেন ছোট্ট বাংলা নেমে এসেছে মাপুসায়। নেত্রীর নামে জয়ধ্বনি। স্লোগান আব কি বার, দিদি কি সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, আমরা জানি অনেক না পাওয়া আছে মানুষের। বিশেষত মহিলাদের। বাংলায় যা করেছি গোয়াতেও করব। একবার সুযোগ দিন। আপনাদের মানুষই নেতৃত্ব দেবেন। দিল্লির দাদাগিরি বন্ধ করব।