ডবলইঞ্জিনের রাজ্যে লাঞ্ছিত, নিপীড়ত বাংলাভাষী মানুষ। প্রতিবাদে রাজপথে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃষ্টিতে ভিজে কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল শেষে মঞ্চ থেকে গর্জে ওঠেন তিনি। বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, “ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, হোল্ডিং এরিয়া-ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে।“
বুধবার, মঞ্চে প্রধান বক্তা ছিলেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভাষণের শুরু থেকেই কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার বিষয় নিয়ে গর্জে ওঠেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিস্ফোরক অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত লজ্জিত, ব্যথিত, দুঃখিত, মর্মাহত ভারত সরকার এবং বিজেপির এই আচরণে। ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে নোটিফিকেশন করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, হোল্ডিং এরিয়া-ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। এমনকী কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও।”
আরও পড়ুন- রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করলেই নিষেধাজ্ঞা! ভারত-চিন-ব্রাজিলকে হুঁশিয়ারি ন্যাটোর
মমতা অভিযোগ করেন, বিনা বিচারে একমাস জেলে রাখা হবে। এতো জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়ঙ্কর। কয়েকদিন আগে বিজেপি ইন্দিরা গান্ধীর আমলের এমার্জেন্সির বিরোধিতায় দিন পালন করে বিজেপি- সেই বিষয়টি কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা তো More then emergency”।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা সব ভাষাকে সম্মান জানাই। এর মানে এটা হয় না যে আপনারা বাঙালির উপর অত্যাচার করবেন, এটা হতে পারে না। আমরা বাঙালির উপর অত্যাচার করতে দেব না। আপনারা কী ভেবেছেন? বাংলা ভাষায় কথা বললে রোহিঙ্গা বলে দেবেন?“
মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, “বিজেপি কি দেশের জমিদারি পেয়ে গিয়েছে? যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি রোহিঙ্গা বলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ তো আলাদা দেশ। রোহিঙ্গা তো মায়ানমারের। তাতে আমাদের এখানে কী! পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের কাছে আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। আমাদের ২২ লক্ষ বাংলার মজদুর আছে। তাঁরা বাংলায় থাকলে অনেক ভাল থাকতে পারেন। তাঁদের দিয়ে কাজ করাবে, আর বাংলায় কথা বললেই তাঁকে জেলে নিয়ে যাবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে। কেন? কোন অধিকারে? পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অঙ্গ নয়?” প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।